মিয়ানমারে খনিতে ভূমিধসে মৃত্যু বেড়ে ১৬২
প্রবল বৃষ্টির কারণে মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলে জেড পাথরের একটি খনিতে ভূমিধসে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলছে। এরই মধ্যে ১৬২ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
বুধবার ( ১ জুলাই) সকালে মিয়ানমারের চীন সীমান্ত ঘেঁষা কাচিন প্রদেশে অবস্থিত খনিটিতে এই ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। দেশটিতে এটিকে সবচেয়ে ভয়াবহ খনি দুর্ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
টানা বৃষ্টির কারণে পর্বতের একটি অংশ উন্মুক্ত খনিতে ধসে পড়ে। কাদা-পানি, খনির আবর্জনার নিচে চাপা পড়ে কয়েক’শ শ্রমিক। একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ওই সময় অনেক মানুষ পানিতে ভাসতে ছিল। কাদা-পানিতে চাপা পড়ে অনেকে।
বৃষ্টির কারণে উদ্ধার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। এরপরও দিন ভর চেষ্টা চালিয়ে মাটির নিচে চাপা পড়া অনেক মৃত দেহ উদ্ধার করতে পেরেছে ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় পুলিশের সদস্যরা।
মিয়ানমারের ফায়ার সার্ভিসের এক বিবৃতিতে হয়েছে, বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত ১৬২ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এতে আহত হয়েছেন আরও ৫৪ জন। তাদের পার্শ্ববর্তী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এই ঘটনায় আরও অনেকের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পুলিশ সুপার থান উইন অং জানান, যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে তাতে খনিতে আবারও ভূমি ধস হতে পারে।
মৃত্যুর সংখ্যা যে আরও বাড়তে পারবে তা থান উইন অংয়ের কথাতেই স্পষ্ট। তিনি বলেন, “পানির নিচে আমরা খুরতে পারছি না, মৃতদেহগুলোও উদ্ধার করা যাচ্ছে না…পানিতে ভেসে ওঠা মৃতদেহগুলো কেবল আমরা উদ্ধার করছি।”
স্থানীয় এক পুলিশ সদস্য বলেন, বৃষ্টির মধ্যে খনিতে না যেতে সতর্ক করা হলেও শ্রমিকেরা তা মানেনি।
এদিকে এই ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করতে জাতিসংঘ প্রস্তুত আছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির এক মুখপাত্র।
মিয়ানমারের কাচিনের হাপাকান্ত এলাকার খনিগুলোতে এই ধরনের ঘটনা প্রায়ই ঘটে থাকে। এখানে খনি শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের কোনো বালাই নেই কর্তৃপক্ষের।
অলংকার তৈরিতে ব্যবহৃত হয় মূল্যবান জেড পাথর। সবুজ রঙের প্রায়-স্বচ্ছ একটি পাথর। মিয়ানমারেই বিশ্বের সবচেয়ে ভালো জেড পাথর পাওয়া যায়।
মিয়ানমারের মোট জিডিপির বড় অংশই আসে জেড শিল্প থেকে। এই পাথরের সবচেয়ে বড় বাজার পার্শ্ববর্তী দেশ চীন, যেখানে এটিকে ‘স্বর্গের পাথর’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।
বৈশাখী নিউজ/ জেপা