কুমারখালীতে করোনায় পশুর দাম নিয়ে দুঃচিন্তাই খামারিরা
আপডেট: July 3, 2020
|
নজরুল ইসলাম মুকুল, কুষ্টিয়া : আর এক মাস পরেই ঈদুল আযহা। কোরবানির ঈদ নামেই বেশি পরিচিত এই ঈদ। ঈদুল আযহার বিশেষ আকর্ষন কোরবানির পশু জবাহ। ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার খামারিদের দুশ্চিন্তা ততই বেড়ে চলেছে।
কারন বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রকোপ এখনও কমেনি। বরং বাংলাদেশে আরও দিন দিন বেড়েই চলেছে। এমন অবস্থায় পশু বাজারে নিতে পারবেন কিনা, বাজারে নিলেও ক্রেতা মিলবে কিনা, ক্রেতা মিললেও দাম পাওয়া যাবে কিনা এসব নানাবিধ বিষয় নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে উপজেলার পশু খামারিরা।
খামারিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কোরবানির পশু বাজার তোলার সময় ঘনিয়ে আসলেও মহামারি করোনা ভাইরাস নিয়ে এখনও দুশ্চিন্তায় ভুগছেন তারা। প্রকৃতপে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখেই খামারিরা সারাবছর পশু হিসেবে গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া লালন পালনে বড় অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করেন।
তাই ঈদে পশু বিক্রি করতে না পারলে বড় ধরনের লোকসান গুণতে হবে তাদের। শুধু খামারিরা নয়, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে একজন বিধবা মহিলা বা সাধারণ কৃষক থেকে শুরু করে হাজার হাজার সরকারি, বেসরকারি চাকুরীজীবী, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশাজীবি মানুষ গরু, ছাগল, ভেড়া পালন করেন।
তারাও করোনার কারনে পশু নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন। এছাড়াও লেখাপড়া শেষ করে অনেক শিতি যুবক-যুবতী পেশা হিসেবে বেঁছে নিয়েছে ডেইরি ফার্ম বা গরু ছাগল মোটা তাজাকরণ পেশা। এই কারনেই প্রত্যন্ত অঞ্চলে গড়ে উঠেছে বড় বড় খামার।
সেখানে সারাবছর কসাইদের কাছে পশু বিক্রি করা হলেও স্পেশাল পশু তৈরি করা হয় কোরবানি ঈদে অধিক লাভে বিক্রির জন্য। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সুত্রে জানা যায়, একটি পৌরসভা ও ১১ টি ইউনিয়নে এবছর কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ৩ হাজার ৭৯৩ টি খামারে মোট ২৪ হাজার ৯৩৯ টি হৃদপুষ্টকরন পশু প্রস্তুত করা হয়েছে।
তন্মধ্যে ষাঁড় ১০ হাজার ৪৯৮ টি, বলদ ৬ হাজার ৪৬৫ টি, মহিষ ১৯ টি এবং ছাগল ৭ হাজার ৭১৪ টি ও ভেড়া ২৪৩ টি। সরেজমিন গেলে উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের জোতমোড়া গ্রামের খামারি হান্নান মোল্লা বলেন, আমরা খামারিরা সারাবছর গরু মোটাতাজাকরণ করি কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য। বড় এবং দেখতে সুন্দর গরু গুলোই কেবল মোটা অঙ্কের টাকায় বিক্রির জন্য ভালো ভালো খাবার দিয়ে পালন করি।
ঈদে সেগুলো যদি বিক্রি করতে না পারি তাহলে অনেক লোকসান হবে। আরেক খামারি রাজীব বলেন, দেশে এখনও করোনা পরিস্থিতি ভাল হয়নি। এত টাকা বিনিয়োগ করে যদি গরুর ভালো দাম না পাই তাহলে খামারিদের দুঃখের সীমাও থাকবে না। খামারি সুমন বলেন, ১৮ টি গরু লালন পালন করেছি কোরবানির আশায়।
ঈদের বাজার সন্নিকটে। তবু করোনা নিয়ে আতঙ্কে আছি। সদকী ইউনিয়নের দরবেশপুর গ্রামের খামারি সোহেল রানা বলেন, গতবছর সাত ল টাকা লোকসান হয়েছিল। করোনা নিয়ে এবার কি হবে বুঝতে পারছিনা।
এবিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডাঃ মোঃ নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে এবার উপজেলায় ৩ হাজার ৭৯৩ টি খামারে মোট ২৪ হাজার ৯৩৯ টি হৃদপুষ্টকরন পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। তন্মধ্যে ষাঁড় ১০ হাজার ৪৯৮ টি, বলদ ৬ হাজার ৪৬৫ টি, মহিষ ১৯ টি এবং ছাগল ৭ হাজার ৭১৪ টি ও ভেড়া ২৪৩ টি।
তিনি আরো বলেন, আমরা সারাবছর খামারিদের সার্বিক খোঁজখবর ও সেবা দিয়েছি। তবে করোনায় লোকসানের সম্ভাবনা রয়েছে খামারিরা।
বৈশাখী নিউজ/ জেপা