কবি-প্রাবন্ধিক বিষ্ণু দে’র জন্মদিন আজ

আপডেট: July 18, 2020 |

প্রয়াত কবি-প্রাবন্ধিক বিষ্ণু দে’র জন্মদিন আজ। ১৯০৯ সালের আজকের দিনে কলকাতার টেমার লেনে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার বাবা অবিনাশ চন্দ্র দে ছিলেন একজন উকিল এবং মা মনোহারিণী দেবী ছিলেন গৃহিণী।

১৯৩০-এর দশকে যে পাঁচজন কবির নেতৃত্বে আধুনিক বাংলা কবিতার নবজাগরণের সূচনা হয়েছিল, তাদের মধ্যে বিষ্ণু দে অন্যতম। রবীন্দ্র কাব্য বলয়ের বাইরেও এক সফল আধুনিক কবিতার ধারা সৃজন করেন এই লেখক।

১৯২৭ সালে কলকাতার সংস্কৃত কলেজিয়েট স্কুল থেকে বিষ্ণু দে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক পাস করেন। পরে তিনি ১৯৩০ সালের বঙ্গবাসী কলেজ থেকে আইএ এবং ১৯৩২ সালে সেন্ট পলস কলেজ থেকে বিএ পরীক্ষায় কৃতকার্য হন।

ছাত্র জীবনে তিনি প্রথম থেকেই ইংরেজিতে খুব ভালো ছিলেন এবং বিএ পরীক্ষায় ইংরেজিতে ভালো করার জন্য তাকে পুরস্কারও দেওয়া হয়। ১৯৩৪ সালে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে এমএ পাস করেন।

১৯৩৫ সালে বিষ্ণু দে কলকাতার রিপন কলেজে ইংরেজি বিষয়ে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান। সেখানে তিনি সহকর্মী হিসেবে পেয়েছিলেন কবি বুদ্ধদেব বসুকে। পরবর্তী জীবনে তিনি ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক হিসেবেই বিভিন্ন সরকারি কলেজে শিক্ষকতা করেছেন। পরে ১৯৬৯ সালে চাকরি থেকে অবসর নিয়ে তিনি লেখালেখিতে মনোনিবেশ করেন।

কর্ম জীবনে বিষ্ণু দে, সুধীন্দ্রনাথের ‘পরিচয়’ পত্রিকার সঙ্গে দীর্ঘদিন যুক্ত ছিলেন। পরে তিনি ১৯৪৮ সালে নিজেও ‘সাহিত্যপত্র’ নামে একটি পত্রিকার সম্পাদনা করেন।

প্রয়াত কবি-প্রাবন্ধিক বিষ্ণু দে’র বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থগুলোর মধ্যে আছে— ‘উর্বশী ও আর্টেমিস’ (১৯৩৩), ‘চোরাবালি’ (১৯৩৭), ‘পূর্বলেখ’ (১৯৪১), ‘সাত ভাই চম্পা’ (১৯৪৫), ‘সন্দ্বীপের চর’ (১৯৪৭), ‘অন্বিষ্ট’ (১৯৫০), ‘নাম রেখেছি কোমল গান্ধার’ (১৯৫৩), ‘আলেখ্য’ (১৯৫৮), ‘তুমি শুধু পঁচিশে বৈশাখ’ (১৯৫৮), ‘স্মৃতি সত্তা ভবিষ্যৎ’ (১৯৬৩), ‘সেই অন্ধকার চাই’ (১৯৬৬), ‘সংবাদ মূলত কাব্য’ (১৯৬৯) ‘রুশতী পঞ্চাশতী’ (১৯৬৭)।

বিষ্ণু দে’র রচিত অনুবাদ কাব্যগুলোর মধ্যে রয়েছে— ‘এলিয়েটের কবিতা’ (১৯৫৩), ‘হে বিদেশী ফুল’ (১৯৫৬), ‘মাও সে তুং-এর কবিতা’ (১৯৫৮) ইত্যাদি। লেখালেখির মাঝে বিষ্ণু দে কবিতার বই ছাড়াও অনেক গদ্য রচনা করেছন। তিনি একজন মননশীল প্রাবন্ধিক ও সমালোচকও। তার লেখা বেশ কয়েকটি ইংরেজি বইও রয়েছে।

বিষ্ণু দে’র প্রবন্ধের বইগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘রুচি ও প্রগতি’ (১৯৪৬), ‘সাহিত্যের ভবিষ্যৎ’ (১৯৫২), ‘এলোমেলো জীবন ও শিল্পসাহিত্য’ (১৯৫৮), ‘রবীন্দ্রনাথ ও শিল্পসাহিত্যে আধুনিকতার সমস্যা’ (১৯৬৫), ‘মাইকেল, রবীন্দ্রনাথ ও অন্যান্য জিজ্ঞাসা’ (১৯৬৭), ‘জনসাধারণের রুচি’ (১৯৭৫), ‘যামিনী রায়’সহ (১৯৭৭) প্রভৃতি।

১৯৮২ সালের ৩ ডিসেম্বর বার্ধক্য জনিত কারণে তিনি পরলোক গমন করেন।

বৈশাখী নিউজজেপা

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর