করোনাকালে রতন টাটা, জ্যাক মা, জেফ বেজস, বিল গেটস

আপডেট: August 16, 2020 |

রতন টাটা

করোনা মহামারিতে আর্থিক সংকটের কারণ দেখিয়ে ভারতের অনেক কম্পানি কর্মী ছাঁটাই করলেও বৃহৎ শিল্পপ্রতিষ্ঠান টাটা গ্রুপ কোনো কর্মী ছাঁটাই করেনি। এর বিপরীতে তারা শীর্ষ কর্মকর্তাদের বেতন সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়েছে।

টাটা গ্রুপের চেয়ারম্যান ইমেরিটাস রতন টাটা এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘ভারতের কম্পানিগুলো ব্যয় সংকোচনের নামে যে উপায়ে কর্মী ছাঁটাই করছে তা কোনো সমাধানের পথ নয়।’

তিনি বলেন, ‘এ ছাঁটাই প্রমাণ করছে শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে সমবেদনার ঘাটতি রয়েছে। আপনি যাদের ছাঁটাই করছেন, এরাই আপনার জন্য কাজ করে যাচ্ছে, নিজেদের পুরো ক্যারিয়ার আপনার কম্পানির পেছনে দিয়েছে। অথচ আপনি তাদের ঝড়ের কবলে ছেড়ে দিচ্ছেন।’

জ্যাক মা

এশিয়ার সবচেয়ে বড় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আলিবাবার প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মা করোনার শুরু থেকেই চিকিৎসা সরঞ্জাম দিয়ে বিভিন্ন দেশে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। তিনি মাস্ক, ভেন্টিলেটরসহ করোনার বিভিন্ন চিকিৎসাসামগ্রী এ পর্যন্ত বিশ্বের ১৫০টি দেশে পাঠিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘করোনায় আমরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও প্রযুক্তিগত উন্নয়নে এটি আমাদের অনেক দূর এগিয়ে দিয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা, কৃষি থেকে শুরু করে বিভিন্ন শিল্প খাতে এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে।

বিশ্বে প্রযুক্তিগত যে পরিবর্তন আনতে আমাদের ৩০ থেকে ৫০ বছর লেগে যাওয়ার কথা ছিল তা হয়ে যাচ্ছে এখন ১০ থেকে ২০ বছরে।’ তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য সংকট মানুষকে উদ্ভাবনে আগ্রহী করে তুলেছে।’

জেফ বেজস

অনলাইন বেচাকেনা বেড়ে যাওয়ায় ব্যাপকভাবে লাভবান হচ্ছে জেফ বেজসের প্রতিষ্ঠান আমাজন। ফলে বিশ্বজুড়ে যখন কর্মী ছাঁটাই চলছে তখন আমাজন উল্টো নিয়োগ দিচ্ছে। শুধু মার্চ-এপ্রিল দুই মাসে কম্পানি মৌসুমি নিয়োগ দিয়েছে এক লাখ ৭৫ হাজার। এতে কম্পানির মোট কর্মীর সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। যা একটি বড় মাইলফলক। বিক্রি বাড়ায় ব্যাপকভাবে লাভবান হয়েছেন কম্পানিটির সিইও জেফ বেজস। এ বছর তাঁর সম্পদ বেড়েছে ৬৩.৬ বিলিয়ন ডলার। এমনকি আমাজনের শেয়ারবাজারে উত্থানের ফলে এক দিনেই বেজসের সম্পদ বেড়েছে ১৩ বিলিয়ন ডলার। বর্তমানে তাঁর সম্পদের পরিমাণ ১৮০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে গেছে। করোনার এই সময়ে বিভিন্ন দেশে হাজার হাজার কর্মী নিয়োগ দিয়ে সুখবর শুনিয়ে যাচ্ছেন জেফ বেজস।

বিল গেটস

মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস তাঁর শীর্ষ ধনীর মর্যাদা হারিয়েছিলেন মানবহিতৈষী কর্মকাণ্ডে বিপুল অঙ্কের অর্থ ব্যয় করার কারণে। করোনা মহামারির এই সময়েও তিনি থেমে নেই। বিল অ্যান্ড মিলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে করোনার টিকা উদ্ভাবনের বিভিন্ন প্রকল্পে অর্থায়ন করে যাচ্ছেন, দরিদ্রদের চিকিৎসায় সহায়তা দিচ্ছেন। অথচ তাঁর বিরুদ্ধে গুজব ছড়িয়েছিল তিনি করোনার প্রাদুর্ভাবের জন্য দায়ী। মানুষকে সম্ভাবনা ও আশার বাণী শোনানো বিল গেটস বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে উদ্ভাবন কার্যক্রম বেগবান হয়েছে। করোনা পরীক্ষা, ওষুধ এবং টিকা সব ক্ষেত্রেই আমরা সাফল্যের পথে আছি। ফলে আমি আশা করছি ধনী দেশগুলো ২০২১ সাল নাগাদ করোনামুক্ত হতে পারবে আর পুরো বিশ্ব পারবে ২০২২ সালের মধ্যে। সূত্র : সাউথ চায়না পোস্ট, ফোর্বস ম্যাগাজিন, সিএনইটি।

বৈশাখী নিউজজেপা

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর