ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেল ও নারী নির্যাতন প্রতিরোধ

আপডেট: September 28, 2020 |

ডেস্ক নিউজ: ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেল সারাদেশে ৪৭টি জেলা সদর হাসপাতাল এবং নির্বাচিত ২০টি উপজেলা স্বাস্থ্য
কমপ্লেক্সে শারিরিক নির্যাতনের শিকার শিশু আর নারীর সুরক্ষায় সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে এবং পুরনো জেলাগুলোতে সার্বক্ষণিক চিকিৎসক, নার্স, কাউন্সেলর, পুলিশ কর্মকর্তা আর আইন কর্মকর্তাসহ ব্যাপক জনবলের পরিধি নিয়ে কাজ করছে । । মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রাম’ এর আওতায় রাজশাহীসহ অন্যান্য বিভাগীয় শহরে স্থাপন করা হয়েছে ন্যাশনাল ফরেনসিক ডিএনএ প্রোফাইলিং ল্যাবরেটরী স্থাপন করা হয়েছে । ওয়াল্ড ইকনোমিক ফোরাম এর দি গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ রিপোর্ট অনুযায়ী, সারাবিশ্বে রাষ্ট্র ক্ষমতায় নারীর অবস্থান বিবেচনায় বাংলাদেশের অবস্থান প্রথম এবং নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম আর লিঙ্গ সমতায় দক্ষিণ এশিয়ায় এক নম্বরে রয়েছে বাংলাদেশ । এর পাশাপাশি রয়েছে কিছু নেতিবাচক সংবাদ যেখানে রিপোর্টে বলা হয়েছে দেশে বাল্য বিবাহের হার প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ এবং বাল্য বিবাহের শিকার শিশুদের নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে । নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ করা
এখন ও সম্ভব হচ্ছেনা।
ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেল (ওসিসি) দেশব্যাপী নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশুদের জন্যে সেবাপ্রাপ্তি সহজলভ্য করতে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সরকারি হাসপাতাল নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে । ওসিসি শুধু চিকিৎসা ও আইনগত সহায়তা প্রদানই করছেনা এর পাশাপাশি নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশুদের সেবাপ্রাপ্তির সুবিধার্তে সরকারি-বেসরকারি সংস্থার কার্যক্রমের মধ্যে সমন্বয় তৈরী করে যাচ্ছে । ওসিসি নির্যাতিত অস্বচ্ছল নারী ও শিশুদের জন্যে বিনামূল্যে সরকারি আইন সহায়তা পেতে লিগ্যাল এইডের সাথে সংযোগ করিয়েও দিয়ে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করছে । ওসিসি নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশুদের কাউন্সিলিং ও পেশাগত উন্নয়নে দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণ সুবিধাও প্রদান করে যাচ্ছে নিরলসভাবে ।
নাটোর জেলা সদর হাসপাতালে ওসিসি’র প্রোগ্রাম অফিসার মো. মুক্তার হোসেন জানান, ২০১৩ সালে কার্যক্রম শুরুর পর থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সাত বছরে ১৪৭ জন শিশুসহ মোট ১ হাজার ২৬৬ জন নারী ও শিশুকে বিভিন্নভাবে সহায়তা প্রদান করেছে ওসিসি । এরমধ্যে ২০১৯ সালে ৫৬ জন শিশু ও ২২৬ জন নারীসহ মোট ২৮২ জনের মধ্যে ২৩৫ জনকে কাউন্সিলিং এবং ৩৭ জন আইনি সুবিধা পেয়েছে।
নাটোরের সিংড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. নাসরিন বানু বলেন, শুধু হাসপাতাল নয় শহর বা গ্রামের যে কোন প্রান্তে যে কোন শিশু নির্যাতনের শিকার হহয়ে সরকারি সেবার ‘কল সেন্টার ৩৩৩ বা ৯৯৯’ বা ‘ন্যাশনাল হেল্প লাইন ১০৯’ ফোন করে জানালে অথবা অন্য যে কোন ব্যক্তির মাধ্যমে আমাদের কাছে এলে আমরা ওসিসি’কে দ্রুত সক্রিয় হতে নির্দেশনা দেই । এক্ষেত্রে চিকিৎসা ও আইনী সহায়তা দেওয়া হয় ।
নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা জানান, ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের মাধ্যমে আসা নির্যাতিত নারী ও শিশুদের আইনী সহায়তা প্রদানে পুলিশ অগ্রাধিকার প্রদান করছে ।
লিগ্যাল এইড নাটোর জেলা কার্যালয়ের জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার ও সিনিয়র সহকারি জজ মো. মতিউর রহমান বলেন, ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের সুপারিশকৃত মামলাগুলোকে আমরা বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করে, দ্রুত বিচারিক কার্যক্রম সম্পন্ন করার চেষ্টা করছি। ক্ষেত্রবিশেষে ‘বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি’র মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্থ ও বিবাদীপক্ষের মধ্যে আপোষ মীমাংসার উদ্যোগ গ্রহন করে আসছি ।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর