সেই নারী মানবাধিকারকর্মীর মরদেহ জোর করে নিয়ে গেছে পাকিস্তান

আপডেট: January 27, 2021 |
print news

নিহত মানবাধিকারকর্মী কারিমা বালুচের মরদেহ জোর করে নিয়ে গেছে পাকিস্তান। বালুচের লাশ করাচি থেকে বেলুচিস্তানে নিয়ে যাওয়ার পথে পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ তার পরিবারসহ কারিমার মরদেহ বিমানবন্দর থেকে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় নিহত কারিমা বালুচের ভাই সমীর মেহরাব রবিবার (২৪ জানুয়ারী) পাকিস্তানের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছেন।

গত বছরের ডিসেম্বরে কানাডায় মারা যাওয়া বিশিষ্ট বালুচর কর্মী কারিমাকে ২৫ জানুয়ারি সমাধিস্থ করা হবে বলে জানানো হয়েছিল। তবে লাশটি করাচি থেকে বেলুচিস্তানে নিয়ে যাওয়ার আগে, পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ পরিবারসহ কারিমার মরদেহ বিমানবন্দর থেকে ‘অজানা স্থানে’ নিয়ে যায়।

টুইটারে বেলুচের ভাই সমীর লিখেছেন, আগে আমরা ভেবেছিলাম শুধু জীবিত বালুচ অপহরণের ঝুঁকিতে রয়েছেন। এখন দেখছি একজন মৃত মহিলাও পাকিস্তানের অপহরণ থেকে রেহাই পায় না। তিনি বলেন, আমার পরিবার মাত্র নিশ্চিত করেছে যে তারা বেলুচিস্তানের সীমান্তে পৌঁছেছে। সেখানে তাদের সঙ্গে আরো নিরাপত্তা বাহিনী সদস্য যোগ দিয়েছে। পাকিস্তান প্রেসকে এবং যারা করাচি শহরে কারিমার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এসেছে তাদেরকে এড়াতে চায়।

এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে আফগানিস্তানের সাংবাদিক বশির আহমদ গওয়াখ বলেছেন, পাকিস্তানের সরকারি কর্মকর্তারা এখনো এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানাতে পারেনি।

মানবাধিকারকর্মী লাতিফ জোহর বালুচ, কারিমার পরিবারের দুর্ভোগ কমাতে এই মুহূর্তে লাশ হস্তান্তর করার জন্য পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছিলেন। তবে পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ কারিমা বালুচর মরদেহ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করতে অস্বীকার করেছে।

লাতিফ বলেন, এটি ভুল, অগ্রহণযোগ্য এবং মানবতা বিরোধী কাজ। পাকিস্তান কেন একটি লাশ নিয়ে ভয় পাবে? পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই কারিমা বালুচের পরিবারকে আরো দুর্ভোগ থেকে বাঁচাতে হবে এবং এই মুহূর্তে লাশ হস্তান্তর করতে হবে। এই পোস্টে তিনি কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে ট্যাগ করেছেন।

২০২০ সালের ডিসেম্বরে, করিমাকে টরন্টোতে নিখোঁজ হওয়ার দিনেই মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। এ বালুচ কর্মীর মৃত্যু ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকাজুড়ে বিক্ষোভের সূত্রপাত করেছিল। বালুচ প্রবাসীরা কানাডার সরকারকে তদন্তের জন্য আহ্বান জানিয়ে টরন্টো, বার্লিন এবং নেদারল্যান্ডসে রাস্তায় নেমেছিল।

পাকিস্তানের অস্থির বেলুচিস্তান প্রদেশে গুম ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে করিমা বালুচ জোর প্রচার চালিয়েছিলেন। পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে দীর্ঘদিন থেকেই স্বাধীনতার দাবিতে লড়াই চলছে। পাকিস্তানে বর্তমানে নিষিদ্ধ থাকা বালুচ স্টুডেন্ট অর্গানাইজেশনের সাবেক প্রধান ছিলেন কারিমা বালুচ। ২০১৫ সাল থেকে তিনি কানাডায় বসবাস করে আসছিলেন। ওই সময় তিনি নিজের জীবন শঙ্কার কথা জানিয়ে আশ্রয় প্রার্থনা করেন।

সম্প্রতি পাকিস্তান বিষয়ক বিশেষজ্ঞ তারেক ফাতাহ, এবং পণ্ডিত বুর্জিন ওঘমার বেলুচিস্তানে মতবিরোধের বিরুদ্ধে ক্র্যাকডাউনকে তীব্র নিন্দা জানিয়ে কানাডার সরকারকে পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের বিষয়ে পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন। সূত্র : এএনআই।

বৈশাখী নিউজজেপা

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর