ইরানের সঙ্গে আলোচনায় বসছে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য পরাশক্তি দেশগুলো
ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তিতে ফিরতে আলোচনায় বসছে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য পরাশক্তি দেশগুলো। ২০১৫ সালে সম্পাদিত ঐতিহাসিক ওই চুক্তিতে স্বাক্ষর করা দেশগুলোর প্রতিনিধিরাই কেবল তেহরানের সঙ্গে এই বৈঠকে অংশ নেবেন। শুক্রবার (২ এপ্রিল) ভার্চ্যুয়ালি এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
এদিকে পরমাণু চুক্তি নিয়ে তেহরানের সঙ্গে আলোচনার এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এটাকে ‘ইতিবাচক পদক্ষেপ’ বলেও উল্লেখ করেছে দেশটি।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান উভয়েই পরমাণু চুক্তিতে ফিরতে ইচ্ছুক। তবে গত জানুয়ারিতে বাইডেন প্রশাসন দায়িত্ব নেওয়ার পর এই ইস্যুতে তেহরানকে আলোচনার টেবিলে আনতে চাইছে ওয়াশিংটন। অবশ্য চুক্তিতে ফিরতে চাইলেও জানুয়ারি থেকেই ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কে আগে পরমাণু চুক্তিতে ফিরবে তা নিয়ে টানাপোড়েন চলছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিদায়ের পর ইরানের সঙ্গে পরমাণু সমঝোতায় ফেরার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন। প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে পরমাণু সমঝোতা মেনে চলার বিষয়ে তেহরানের অঙ্গীকার করার আহ্বান জানায় ওয়াশিংটন।
তবে ইরানের দাবি, আগে তাদের ওপর থেকে সকল নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিতে হবে যুক্তরাষ্ট্রকে, এরপরই সমঝোতায় ফিরবে দেশটি। এবিষয়ে উভয় দেশ অনড় অবস্থানে থাকায় পরমাণু সমঝোতায় ফেরা নিয়ে সৃষ্টি হয় অনিশ্চয়তা।
বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে ইইউ জানায়, ‘ইরানের সঙ্গ স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্লান অব অ্যাকশনে (জেসিপিওএ) অংশগ্রহণকারী পক্ষগুলো আলোচনায় বসবে। একইসঙ্গে এই চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন এবং সকলপক্ষই কিভাবে সেটা মেনে চলতে পারে; সেটাও আলোচনা করা হবে।’
২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্ব পরাশক্তির মধ্যে পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। কিন্তু ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘ত্রুটিপূর্ণ’, ‘একপেশে’, ‘এর কোনো ভবিষ্যৎ নেই’ অভিযোগ তুলে চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নিয়ে যান। যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়ার পর চুক্তির শর্তগুলো মেনে চলার ব্যাপারে ইরানও উদাসীন হয়ে পড়ে।
এরপর তেহরানের ওপর আবারও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। তবে চীন, রাশিয়া, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি সমঝোতায় টিকে থাকলেও চুক্তি মেনে চলার ক্ষেত্রে এসব দেশের ঢিলেঢালা মনোভাব ছিল লক্ষ্য করার মতো।
তবে ওয়াশিংটনের নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরান বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার কারণে খাদ্য, ওষুধ ও কোভিড-১৯ টিকা আমদানিতেও বাধার মুখে পড়ছে দেশটি।
বৈশাখী নিউজ/ জেপা