শাহজালাল বিমানবন্দরে আট মাস বয়সী শিশুকে ফেলে গেলেন মা

আপডেট: April 2, 2021 |

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে টার্মিনালের ভেতরে আট মাসের একটি দুগ্ধপোষ্য মেয়েশিশুকে ফেলে পালিয়েছেন তার মা। ফেলে যাওয়া শিশুটিকে বিমানবন্দরে দায়িত্বরত আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) এক সদস্য উদ্ধার করেন। পরে এপিবিএনের নারী সদস্যরা মেস থেকে দুধ এনে খাওয়ালে শিশুটির কান্না থামে। শুক্রবার (২ এপ্রিল) সকালে এ ঘটনা ঘটে।

সিসি ক্যামেরার ফুটেজ চেক করে ও অনুসন্ধান করে পুলিশ জানতে পারে, সৌদি আরব থেকে আসা এক নারী যাত্রী শিশুটিকে বিমানবন্দরে ফেলে গেছেন। শিশুটিকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে এবং তার পরিবারের অনুসন্ধান করা হচ্ছে।

বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন বলেন,  রাত ২টায় (২ এপ্রিল) সৌদি আরব থেকে এক নারী বাংলাদেশে আসেন। ৫ নম্বর বেল্ট থেকে মালামাল সংগ্রহ করেন তিনি। তার সঙ্গে একটি শিশু ছিল। তিনি সকাল পর্যন্ত বেল্ট এরিয়ায় ছিলেন। সকাল ৮টার দিকে সেই নারী বাচ্চাটিকে বিমানবন্দরে রেখে চলে যান। পরবর্তী সময়ে এই শিশুটি কান্নাকাটি করছিল, আমরা তাকে উদ্ধার করি।

তিনি জানান, শিশুটির বয়স আনুমানিক সাত বা আট মাস হবে। একই ফ্লাইটে আসা আসমা আক্তার নামের এক যাত্রীকে পাওয়া যায়, যিনি শিশুটিকে সঙ্গে নিয়ে আসা নারীর সঙ্গেই সৌদি আরব থেকে এসেছেন। আসমা জানিয়েছেন, ফ্লাইটে ওই নারীর সঙ্গে তার কথা হয়েছিল। তখন সেই নারী আসমাকে জানান, সৌদিতে তার বিয়ে হয়, এরপর এই শিশুর জন্ম হয়। কিন্তু স্বামীর সঙ্গে তার ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এ কারণে তিনি দোটানায় আছেন শিশুটিকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে যাবেন কি না। প্লেনে কয়েকবার কান্নাকাটিও করেছেন।

আলমগীর হোসেন বলেন, আমরা শিশুটিকে উদ্ধার করে দুধ খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেছি। এখনো শিশুটি আমাদের হেফাজতে আছে। আমরা চেষ্টা করছি তাকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে। এ জন্য প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও অন্যান্য সংস্থার সহায়তা নিচ্ছি।

প্রবাসীদের নিয়ে কাজ করা ব্র্যাকর মাইগ্রেশন প্রগ্রামের প্রধান শরীফুল হাসান তার ফেসবুক পেইজে শিশু উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিমানবন্দর আমর্ড পুলিশ (এপিবিএন) তাদের অফিসে নিয়ে শিশুটির নিরাপদ আবাসন ও পরবর্তী সময়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সহায়তা চেয়ে ব্র্যাকে ফোন করেছে। আমাদের লোকজন এখন বিমানবন্দরে আছে। পুলিশ ও আমরা প্রাথমিকভাবে মনে করছি, সৌদি আরব থেকে ফেরত আসা কোনো মা বাচ্চাটিকে ফেলে যেতে পারেন।’

তিনি আরো লেখেন, গত কয়েক বছরে আমরা হাজারো নারীকে পেয়েছি, যারা অপ্রত্যাশিত বেদনা নিয়ে বিদেশ থেকে ফিরেছেন। এর মধ্যে এমন অন্তত ১০টি ঘটনা পেয়েছি, যেখানে অপ্রত্যাশিতভাবে এই শিশুদের জন্ম হয়।

বৈশাখী নিউজজেপা

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর