ইরানের কাছে ক্ষমা চাইলেন ব্রিটিশ ও রুশ রাষ্ট্রদূত

আপডেট: August 13, 2021 |

ইরানের প্রতি অবমাননাকর ছবি প্রকাশের জন্য ইরানের সরকার ও জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন ব্রিটিশ ও রুশ রাষ্ট্রদূত। তাদেরকে বৃহস্পতিবার ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করার পর তারা নিজেদের আচরণ ব্যাখ্যা করে এ ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত সাইমন শেরকলিফ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উপস্থিত হয়ে সৃষ্ট ‘ভুল বোঝাবুঝির’ জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, “আমি ইরানের জনগণ ও এদেশের ইতিহাসের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে বলতে চাই ছবিটি প্রকাশ করার ক্ষেত্রে আমাদের কোনও অসৎ উদ্দেশ্য ছিল না। ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত দাবি করেন, তিনি ও রুশ রাষ্ট্রদূত শুধুমাত্র দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মান নাৎসি বাহিনীর বিরুদ্ধে রাশিয়া ও ব্রিটেনের সামরিক জোটের স্মৃতি স্মরণ করতে চেয়েছিলেন।

এদিকে প্রকাশিত ছবিটির ব্যাপারে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য বৃহস্পতিবার তেহরানে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত লুয়ান জাগারিয়ানকেও ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়। এ সময় মন্ত্রণালয়ের ইউরেশিয়া বিভাগের মহাপরিচালক আলীরেজা হাকিকিয়ানের সঙ্গে বৈঠকে রুশ রাষ্ট্রদূতও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মান নাৎসি বাহিনীর বিরুদ্ধে রুশ-ব্রিটিশ সামরিক জোটের অজুহাত তুলে ধরেন। তিনি নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করে দাবি করেন, কোনও অবস্থাতেই ইরানি জনগণকে অবজ্ঞা করার কোনও ইচ্ছা তাদের ছিল না।

বুধবার তেহরানে নিযুক্ত ব্রিটিশ ও রুশ রাষ্ট্রদূতের একটি ছবি প্রকাশ করে রুশ দূতাবাস। ছবিটি তেহরানস্থ রুশ দূতাবাসের সেই স্থানে বসে তোলা হয় যেখানে ১৯৪৩ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ, মার্কিন ও রুশ সরকার প্রধানরা একসঙ্গে বসে ছবি তুলেছিলেন।

উইন্সটন চার্চিল, ফ্রাঙ্কলিন রুজভেল্ট ও জোসেফ স্টালিন রুশ দূতাবাসের করিডোরে পাশাপাশি তিনটি চেয়ারে বসেছিলেন। বুধবার প্রকাশিত ছবিতে চার্চিলের বসার স্থানে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত ও স্টালিনের বসার স্থানে রুশ রাষ্ট্রদূতকে বসে থাকতে দেখা যায়। মাঝখানের যে চেয়ারটিতে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রুজভেল্ট বসেছিলেন সেখানে একটি খালি চেয়ার রেখে ছবিটি তোলা হয়।

১৯৪৩ সালের ওই তিন রাষ্ট্রনেতার তেহরান সফর সম্পর্কে সম্প্রতি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী এক ভাষণে বলেছিলেন, ইসলামি বিপ্লবের আগে ইরানের তাবেদার শাহ সরকার এতটা নতজানু নীতি গ্রহণ করেছিল যে, তেহরানকে কোনওরকম খবর না দিয়েই মার্কিন ও রুশ প্রেসিডেন্ট এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ইরান সফরে আসেন। তারা ইরানের শাহের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাওয়ার প্রয়োজন মনে করেননি বরং শাহ তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসেন। সবচেয়ে অবমাননাকর বিষয় ছিল, শাহ কক্ষে প্রবেশ করার পর তিন বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানের একজনও চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ানোর প্রয়োজন মনে করেননি।

আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী আরও বলেন, ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর ইরানের অবস্থার আমূল পরিবর্তন এসেছে। এখন কোনও বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধান ইরানের সঙ্গে এমন অবমাননাকর আচরণ করার কথা কল্পনাও করতে পারে না।

বৈশাখী নিউজ/ জেপা

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর