বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা মুক্তিযুদ্ধের দলিল সংগ্রহের উদ্যোগ

আপডেট: August 14, 2021 |

বাংলাদেশ ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের অসংখ্য দলিল-দস্তাবেজ। ৫০ বছর পরে হলেও সেসব গুরুত্বপূর্ণ দলিল সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে ৬২ কোটি ৬৭ লাখ ৯০ হাজার টাকার একটি প্রকল্প নিয়েছে তথ্য মন্ত্রণালয়।

‘দেশি ও বিদেশি উৎস থেকে মুক্তিযুদ্ধের অডিও ভিজ্যুয়াল দলিল সংগ্রহ ও সংরক্ষণ এবং বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের সক্ষমতা বৃদ্ধি’ শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ।

গত ১০ আগস্ট একনেক সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন হয়। চলতি বছর থেকে ২০২৩ সালের জুন মেয়াদে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্পের আওতায় মুক্তিযুদ্ধের নথি, বই, চিঠিপত্র, পত্রিকা, ম্যাগাজিন, স্মরণিকা, ছবি, মানচিত্র, চুক্তিপত্র, সাক্ষাৎকার, দিনপঞ্জি, অডিও-ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করবে সরকার।

জানা যায়, অর্ধশতাব্দী পার হয়ে গেলেও মুক্তিযুদ্ধের দলিল-দস্তাবেজ সংগ্রহে ছিল না দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ। হয়নি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক আর্কাইভ। সংগ্রহে থাকা মুক্তিযুদ্ধের ১ হাজার ৫৫১টি নথি জাতীয় জাদুঘরে পড়ে আছে অযতেœ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের বাইরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের দলিল সংরক্ষণ করেছে অনেক দেশ, আন্তর্জাতিক অনেক প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়। সেসব সংগ্রহে কখনো উদ্যোগ নেয়নি কোনো সরকার। মুক্তিযুদ্ধের এসব দলিল-দস্তাবেজ ছাড়া সঠিক ইতিহাস প্রণয়ন ও তথ্য বিকৃতি রোধ করা কঠিন।

তথ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ১৮ মে মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতিরোধ ও মুক্তিযুদ্ধের দলিলপত্র সঠিকভাবে সংরক্ষণের নির্দেশ দেন।

জানা যায়, প্রকল্পের আওতায় মুক্তিযুদ্ধের তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি ৪০০ বীর মুক্তিযোদ্ধার সাক্ষাৎকারভিত্তিক তথ্যচিত্র নির্মাণ করা হবে। ফিল্ম মিউজিয়াম নির্মাণ ছাড়াও দেশ-বিদেশ থেকে মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত গ্রন্থ, সাময়িকী প্রকাশ, গানের বই, পোস্টার, প্রচারপত্র, স্থিরচিত্র, পাণ্ডুলিপি সংগ্রহ করা হবে। শিক্ষা, গবেষণা ও সংরক্ষণের জন্য পুনর্মুদ্রণ করা হবে অডিও-ভিজ্যুয়াল দলিল।

প্রকল্পসূত্রে আরও জানা যায়, ফিল্ম আর্কাইভ সমৃদ্ধ করে শিক্ষার্থী ও চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের পড়াশোনা এবং চলচ্চিত্র প্রদর্শনের সুযোগ দেওয়া হবে। আয়োজন করা হবে চলচ্চিত্র উৎসব।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ মহাপরিচালক মো. নিজামূল কবীর বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছর হয়ে গেছে। এখন মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা আমরা তথ্যচিত্রের মাধ্যমে সংরক্ষণ করতে চাই। বেশি দেরি করলে তাদের অনেককেই হয়তো আর পাওয়াই যাবে না।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে যেসব দেশ আমাদের সহযোগিতা করেছে তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ডকুমেন্ট সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা হবে। পাশাপাশি ফিল্ম আর্কাইভের সক্ষমতা বাড়াতেও সহায়ক হবে প্রকল্পটি।

বৈশাখী নিউজ/ জেপা

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর