ইকুয়েডরের কারাগারে দাঙ্গা, নিহত ৪০ কয়েদি

আপডেট: September 29, 2021 |
print news

দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ইকুয়েডরের গুয়াইয়াকুইল কারাগারে সংঘাতে জড়িয়েছেন কয়েদিরা। এতে নিহত হয়েছেন ৪০ কয়েদি, আহত হয়েছেন আরও শতাধিক।

বার্তাসংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে করা এক প্রতিবেদনে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, মঙ্গলবার ঘটেছে এই ঘটনা। এএফপিকে দাঙ্গার খবর নিশ্চিত করেছে দেশটির কেন্দ্রীয় কারা বিভাগ ন্যাশনাল ব্যুরো অব প্রিজন।

গুইয়াকুইল কারাগারের কর্মকর্তারা এফপিকে জানান, ইকুয়েডরভিত্তিক মাদক চোরাচালানকারী গ্যাং লস লোবোস এবং লস শোনেরোসের কয়েদিরা কারাগারের ভেতর পরস্পরের সঙ্গে দাঙ্গায় জড়িয়ে পড়ায় মারা গেছেন এই ৪০ কয়েদি।

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, কারাগারের জানালা থেকে গুলি ও বিস্ফোরক ছুড়ছেন কয়েদিরা। গুয়াইয়াকুইলের প্রধান পুলিশ কর্মকর্তা ফাউস্তো বুয়োনানো এএফপিকে জানিয়েছেন, মঙ্গলবারের সংঘাতে অ্যাসল্ট রাইফেল, পিস্তল, গ্রেনেড ও ধারাল অস্ত্র ব্যবহার করতে দেখা গেছে কারারক্ষীদের।

দক্ষিণ আমেরিকা থেকে মেক্সিকো হয়ে মাদকের যেসব চালান যুক্তরাষ্ট্র যায়, সেগুলোর প্রধান রুট হিসেবে গত কয়েক বছর ধরে ব্যবহৃত হচ্ছে ইকুয়েডর। বিপুল ঝুঁকি এবং একই সঙ্গে প্রচুর অর্থ থাকায় এ কারণে ইকুয়েডরের বন্দর এলাকাগুলোতে প্রভাব বাড়ছে বিভিন্ন সন্ত্রাসী গ্যাংয়ের, যারা কোনো না কোনোভাবে মাদক চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত।

গুয়াইয়াকুইল ইকুয়েডরের প্রধান বন্দর শহর হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই শহরটিতে এসব গ্যাংয়ের আনাগোনা সবচেয়ে বেশি।

দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন- মাদক, বিশেষ করে কোকেনের চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ততার অভিযোগে নিয়মিত এসব সন্ত্রাসী গ্যাংয়ের সদস্যদের গ্রেফতার করছে পুলিশ; এবং তাদের প্রভাবে দেশের কারাগারগুলো দিন দিন যুদ্ধক্ষেত্রে রূপান্তরিত হচ্ছে।

তারা আরও জানান, সম্প্রতি গুয়াইয়াকুইলসহ অন্যান্য বন্দর শহরগুলোর কারাগারে আগ্নেয়াস্ত্র খুবই সহজলভ্য হয়ে উঠছে। গত সপ্তাহে এই গুয়াইয়াকুইল কারাগার এক কয়েদির কাছ থেকে দুটি পিস্তল, একটি রিভলবার, ৫০০ রাউন্ড গুলি, একটি হ্যান্ড গ্রেনেড, দু’টি ডিনামাইট স্টিক, হাতবোমা এবং বেশ কয়েকটি ছুরি জব্দ করেছে পুলিশ।

তার আগের সপ্তাহে ওই একই কারাগারে ড্রোন হামলা হয়েছিল, তবে সেই হামলায় কেউ হতাহত হয়নি।

গত জুলাই মাসে ইকুয়েডরের দুটি কারাগারে কয়েদিদের এ রকম সংঘাতে ২৭ কারবন্দির মারা গিয়েছিলেন। ২০২০ সালে দেশটির বিভিন্ন করাগারে কয়েদিদের ‘যুদ্ধে’ জড়িয়ে পড়ায় প্রাণ গিয়েছিল মোট ১০৩ কয়েদির।

তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপে মঙ্গলবারের সংঘাত নিয়ন্ত্রণ করা গেছে এবং এই মুহূর্তে সেখানকার অবস্থা স্থিতিশীল আছে বলে বুধবার এক টুইটবার্তায় জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট গুইলেরমো ল্যাসো।

এদিকে কারাগারে হামলার পর সেখানকার অবস্থা এ মুহূর্তে স্থিতিশীল আছে বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে জানিয়েছেন ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট গুইলেরমো ল্যাসো।

বৈশাখী নিউজ/ জেপা

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর