বিশ্বের শীর্ষ ৫০ নারী নেত্রীর তালিকায় জবি শিক্ষার্থী শিফা

আপডেট: August 18, 2025 |
inbound8702797841162167093
print news

তানিয়া শবনম, জবি প্রতিনিধি : বিশ্বের শীর্ষ ৫০ নারী নেত্রীর তালিকায় স্থান পেয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সমাজকর্ম বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের সাবেক শিক্ষার্থী সাবিতা বিনতে আজাদ শিফা।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ পারমাণবিক শক্তি কর্পোরেশন ‘রোসাটম’এর অধীন প্রতিষ্ঠান ‘অবনিন্সক টেক একাডেমি’ তে ‘ভিজিবল পাওয়ার ফিমেল লিডারশিপ’ ক্যাটাগরিতে মনোনীত হন তিনি।

সারা বিশ্বের আবেদনকারীদের মধ্য থেকে কয়েক ধাপের বাছাই প্রক্রিয়া শেষে শিফাকে নির্বাচিত করা হয়।

এ ক্ষেত্রে তার পূর্ববর্তী কর্মঅভিজ্ঞতা, স্বেচ্ছাসেবামূলক কার্যক্রম, অর্জিত পুরস্কার-স্বীকৃতি এবং গবেষণাকর্মকে মূল্যায়ন করা হয়।

রাশিয়ার ওয়ার্ল্ড অ্যাটমিক উইক এবং আন্তর্জাতিক নারী নেতৃত্ব কর্মশালা ফিমেল লিডারশিপ ক্যাম্পে অংশ নেবেন নির্বাচিত এ ৫০ নারী নেত্রী।

পারমাণবিক শিল্পের ৮০ বছরের সাফল্য উদযাপনে ওই ক্যাম্পে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ১০ হাজারেরও বেশি অংশগ্রহণকারী অংশ নেবেন।

শেফা ‘ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্সেস (UITS)’ এ প্রভাষক হিসেবেও নিযুক্ত ছিলেন।

তিনি ওয়ার্ল্ড ভিশন ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের অধীনে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে রোহিঙ্গা ক্রাইসিস রেসপন্স প্রকল্পে গ্রান্ট অ্যাকুইজিশন ম্যানেজমেন্টের লিড প্রগ্রাম অফিসার হিসেবেও কাজ করেছেন।

বর্তমানে দেশের তরুণদের সফট স্কিল ও যোগাযোগ দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করছেন এবং প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘ভিলেজ ইমপাওয়ারমেন্ট’ নামের একটি সংগঠন।

এর আগে শিফা একাধিকবার সম্মানজনকভাবে রাশিয়ায় একাধিক কনফারেন্স এবং সামিটে অংশগ্রহণ করেন।

ভারতের মেঘালয়ের নর্থ-ইস্টার্ন হিল ইউনিভার্সিটিতে তার গবেষণা সংশ্লিষ্ট কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে।

সাবিতা বিনতে আজাদ শিফার গ্রামের বাড়ি গাজীপুরে। তার বাবা ইঞ্জিনিয়ার আবুল কালাম আজাদ, যিনি দুইবার জাতিসংঘের স্কলারশিপ পেয়েছেন এবং মস্কোর পিপলস ফ্রেন্ডশিপ ইউনিভার্সিটি অব রাশিয়া (লুমুম্বা ইউনিভার্সিটি) থেকে উচ্চশিক্ষা অর্জন করেন এবং মা সোহরাত বেগম ছিলেন গাজীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা।

শিফা এর আগে একাধিকবার রাশিয়ায়সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নেন। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে সোচিতে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড ইয়ুথ ফেস্টিভালে বাংলাদেশ থেকে ৮৫ তরুণ-তরুণীর সঙ্গে যোগ দেন।

২০২৪ সালের মে মাসে মস্কোতে অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল চিলড্রেনস কমিটিতে বাংলাদেশের হেড হিসেবে নেতৃত্ব দেন।

একই বছরের অক্টোবরে রাশিয়ার ওরেনবুর্গে অনুষ্ঠিত ইউরেশিয়া গ্লোবালে অংশ নেন, যেখানে বাংলাদেশকে বিশেষ মর্যাদা দিয়ে সমাপনী অনুষ্ঠানে টিম বাংলাদেশকে রিপ্রেজেন্ট করার সুযোগ দেওয়া হয়।

এ ছাড়া ২০১৯-২০ সালে টোস্টমাস্টার্স ইন্টারন্যাশনাল আয়োজিত ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ অব পাবলিক স্পিকিংয়ে বাংলাদেশ থেকে ইন্টারন্যাশনাল স্পিচ কনটেস্ট চ্যাম্পিয়ন হন শিফা।

পরে এশিয়ার বিভিন্ন দেশে সেমিফাইনালিস্ট হিসেবেও প্রতিযোগিতা করেন। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম অ্যাডভান্সড টোস্টমাস্টার্স ক্লাবের নারী সভাপতি।

এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডে দুটি ক্লাবের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ভারত ও নেপালে আন্তর্জাতিক বক্তা হিসেবে যোগ দিয়েছেন এবং নেপালের লাক্সমি ব্যাংকে বক্তব্য রেখেছেন।

শিফা এখন রাশিয়ার ‘ডাইরেক্টোরেট অব দ্য ওয়ার্ল্ড ইয়ুথ ফেস্টিভাল’ এর প্রতিনিধিত্বকারী ‘ন্যাশনাল প্রিপারেটরি কমিটি অব বাংলাদেশ’-এর শিশু কমিটির প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রসঙ্গে শিফা জানান, ‘বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই আমার লক্ষ্য। আমি ইতোমধ্যে অনেক কাজ করেছি।

সামনে আরো কাজ করার ইচ্ছে আছে। আমাদের কমিউনিকেশন ও স্পিকিং নিয়ে সবখানে যে ঝামেলায় পড়তে হয় এটা নিয়ে আমি বেশি গুরুত্বের সাথে কাজ করে যাব।

আমি একটা সংগঠনের মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছি এখন আমার লক্ষ্য ২০২৭ সালের মধ্যে ‘ভিলেজ ইমপাওয়ারমেন্ট’ কর্মসূচির মাধ্যমে এক লাখ শিক্ষার্থীকে কমিউনিকেশন, প্রেজেন্টেশন ও স্পিকিং দক্ষতায় পারদর্শী করে গড়ে।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর