করোনা মোকাবেলা করে আগামী বছরের অর্থনীতি ভাল যাবে : অর্থমন্ত্রী

আপডেট: December 30, 2020 |
print news

করোনা মোকাবেলা করে আগামী বছরের অর্থনীতি ভাল যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, সারা পৃথিবীর অর্থনীতি নিম্নগামী হলেও সেই তুলনায় বাংলাদেশ অনেক ভালো অবস্থানে রয়েছে। খাদ্য নিরাপত্তা জোরদার করতে জরুরি ভিত্তিতে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত থেকে ৫০ হাজার মে.টন চাল আমদানিসহ ছয় ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

বুধবার সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এসব কথা বলেন। ওই বৈঠকেই চাল ক্রয়সহ ছয় প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়। চিকিৎসার জন্য বর্তমান অর্থমন্ত্রী সিঙ্গাপুর অবস্থান করছেন। অনলাইনে ভার্চুয়ালি তিনি অংশগ্রহণ করে বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন । অতিরিক্ত সচিব আবু সালেহ্ মোস্তফা কামাল বৈঠকের বিষয়বস্তু নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, বিশ্বব্যাংক ও আন্তজার্তিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) প্রক্ষেপণ করেছে ২০২০ সালে উন্নত দেশগুলোর প্রবৃদ্ধি ৪ শতাংশ কম হবে। এশিয়ার দেশগুলোতে এ হার ১ দশমিক ৭ শতাংশ। দক্ষিণ এশিয়ার বাংলাদেশে এ হার আর কম হবে। অর্থাৎ করোনার মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনীতির সামষ্টিক সূচকগুলো ভালো অবস্থানে থাকবে। তিনি বলেন, করোনা সারা পৃথিবীর অর্থনীতিতে স্থবিরতা নিয়ে এসেছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও এর প্রভাব পরিলক্ষিত। কিন্তু বর্তমান সরকারের বিভিন্ন বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করায় অর্থনীতি ভালো অবস্থানে রয়েছে।

ইংরেজী নববর্ষের শুভেচ্ছো জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, নতুন অর্থ বছরে দেশের মানুষ ভাল থাকবে সুন্দও থাকবে এটাই এ মুহূর্তের প্রত্যাশা। করোনা এখনও শেষ হয়নি। করোনা থেকে বিশ্বের একটি দেশও মুক্ত নয়। সারা পৃথিবীর অর্থনীতি এখন নি¤œগামী। তবে বাংলাদেশের মানুষ এখনো সেই তুলনায় ভাল আছে। আগামী বছরটিও যাতে ভাল যায় সে চেষ্টা রয়েছে সরকারের। আশা করছি, করোনা মোকাবেলা করে আমরা ভালো থাকবো। অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ বিষয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রী ভালো জানেন। তিনি আপনাদের এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিতে পারবেন।

 

৫০ হাজার টন সিদ্ধ চাল কেনা হচ্ছে ॥

খাদ্য নিরাপত্তা জোরদার করতে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত থেকে আরও ৫০ হাজার মে. টন চাল আমদানির ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য ভারত থেকে ৫০ হাজার টন সিদ্ধ চাল আনা হবে। অতিরিক্ত সচিব আবু সালেহ্ মোস্তফা কামাল জানান, টেবিলে উত্থাপিত ৫০ হাজার সেট্রিকটন নন বাসমতি সিদ্ধ চাল ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ১৬৮ কোটি ৬২ লাখ ৯০ হাজার ৪০০ টাকা। সুপারিশকৃত দরদাতা হচ্ছে ভারতের বীরভূমের এম এস পি কে এগ্রি লিংক প্রাইভেট লিমিটেড। প্রতি মেট্রিকটন চালের দাম ৩৯৭.৭১ মার্কিন ডলার। আর প্রতিকেজি চালের মূল্য বাংলাদেশি টাকায় ভ্যাট ছাড়া ৩৩.৭২ টাকা। এর আগে গত ৩ ও ৯ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে ২০২০-২১ অর্থবছরে জন্য ৫০ হাজার করে এক লাখ টন নন-বাশমতি সিদ্ধ চাল ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার। তখন প্রতি কেজি চালের দাম ধরা হয়েছিল ৩৪ টাকা ২৮ পয়সা ও ৩৫ টাকা ২৭ পয়সা। আর প্রতি টনে ক্রয়মূল্যে যথাক্রমে ৪০৪.৩৫ ও ৪১৬ মার্কিন ডলার। এছাড়া সুপারিশকৃত দরদাতা হচ্ছে ভারতের মুম্বাইয়ে এম এস রিকা গ্লোবাল ইমপ্যাক্টস লিমিটেড ও পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমের এম এস পি কে এগ্রি লিংক প্রাইভেট লিমিটেড।

কক্সবাজার বিমান বন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণে ঠিকাদার নিয়োগ ॥ কক্সবাজার বিমান বন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণে এক হাজার ৫৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ঠিকাদার নিয়োগের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবু সালেহ মোস্তফা কামাল ভার্চুয়াল মাধ্যমে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আজকের বৈঠকে ৮ প্রস্তাব উত্থাপন করা হলেও সড়ক ও জনপথ বিভাগের দুইটি ও বিদ্যুৎ বিভাগের একটি প্রস্তাাব ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়া টেবিলে চাল ক্রয়ের একটি প্রস্তাবের অুনমোদন দেয়া হয়েছে। কক্সবাজার বিমান বন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ” প্রকল্পের ঠিকাদার নিয়োগের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। যৌথভাবে এমএস সিওয়াইডব্লিউইবি ও সিসিইসিসি কে এক হাজার ৫৬৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকায় এ কাজটি করবে। বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের অপর এক প্রস্তাবে, কক্সবাজার বিমান বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প (১ম পর্যায়) (৩য় সংশোধিত) পূর্ত কাজের ভেরিয়েশন প্রস্তাব অনুমোদন। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৭০ কোটি ২৩ লাখ ৮৬ হাজার ৮৯৫ টাকা। কাজটি পেয়েছে কোরিয়ার হাল্লা কনস্ট্রাকশন কোম্পানি। বাস্তবায়নকারী সংস্থা বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ।

স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীন “দ্বিতীয় নগর অঞ্চল উন্নয়ন” প্রকল্পের আওতায় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়ছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এতে ব্যয় হবে ৫৭ কোটি ৭৯ লাখ ১৩ হাজার ৪৬৭ টাকা। সম্পূর্ণটা এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ঋণের টাকা। যৌথভাবে কাজটি করবে রেমবল ডেনমার্ক, একোয়া কনসালটেন্ট এন্ড এসোসিয়েট লিমিটেড, রিসোর্স প্লানিং এন্ড ম্যানেজমেন্ট কনসালটেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড। বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্প, কুমিল্লা জোন” প্রকল্পের আওতায় টার্নকি ভিত্তিতে ৮টি সাবষ্টেশনের মানোন্নয়ন কাজের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ১৯৯ কোটি ৬৯ লাখ ৭৪ হাজার ৪১৮ টাকায় কাজটি করবে আইডিয়াল ইলেকট্রিকাল ইন্টারপ্রাইজ লিমিটেড।

এছাড়া বিদ্যুৎ বিভাগের অধীন ‘শতভাগ পল্লী বিদ্যুতায়নের জন্য বিতরণ নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ (ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগ) (১ম সংশোধিত))’ প্রকল্পের আওতায় ১৮ হাজার ৫৬২টি বৈদ্যুতিক খুটি ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

বৈশাখী নিউজ/ এপি

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর