মিয়ানমারে পুলিশের গুলিতে আরও ২ জন নিহত
মিয়ানমারে আজ সোমবার ফের সেনা অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। এ সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন আরও ২ জন।
ইয়াঙ্গুন ও মান্দালয়ে আজও ভোরের বিক্ষোভের ডাক দেয় তারা। রবিবার মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে দুজন নিহত হয়েছে। মনিওয়া শহরে পুলিশের গুলিতে একজন ও মান্দালয়ে আরও একজন নিহত হয়।
গুলিতে আহত হয় বেশ কয়েকজন। মনিওয়া শহরে আহতদের রক্ত দিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আহ্বান জানানো হয় বলে এক চিকিৎসক জানান।
রবিবার তাইওয়ানের রাজধানী তাইপেতেও বিক্ষোভ করেছে বার্মিজ কমিউনিটি। এ সময় চীনের বিরুদ্ধে সেনা অভ্যুত্থানে মদদ দেয়ার অভিযোগ আনে তারা।
অন্যদিকে, ভারতে আশ্রয় নিতে মিজোরাম সীমান্তে ভিড় করেছেন মিয়ানমারের শরণার্থীরা। তাদের প্রবেশ ঠেকিয়ে দ্রুত ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। তাদের ভারতে আশ্রয় দেয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে চিঠি লিখেছেন মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা।
এদিকে মিয়ানমারে ইন্টারনেট পরিসেবা ক্রমাগতভাবে সীমিত হতে থাকায় এবং শেষ বেসরকারি সংবাদপত্রটির প্রকাশনাও বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দেশটি কার্যত বিচ্ছিন্নতার মুখোমুখি।
অন্যদিকে ফ্রান্সের অন্যতম বৃহৎ জ্বালানি কোম্পানি ‘ইলেক্ট্রিসিটে ডে ফ্রান্স’ মিয়ানমারে একটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প স্থগিত করেছে।
সামরিক জান্তা ক্ষমতা দখলের পর ইন্টারনেট পরিষেবা ক্রমাগতভাবে শিথিল হওয়ায় একেক পর এক বন্ধ হচ্ছে মিয়ানমারের গণমাধ্যমগুলো। তবে রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যমগুলোতে তার প্রভাব পড়েনি। দুদিন আগে রাজধানী নেপিদোর একটি আদালত থেকে আটক করা হয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিসিসির সাংবাদিক অং থুরারে। এখনো পর্যন্ত তার কোনো খবর পাওয়া যায়নি। এমন পরিস্থিতিতে মিয়ানমারে সংবাদ সংগ্রহ ও পরিবেশন কঠিন হচ্ছে বলে মনে করেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো।
মিয়ানমারের শান রাজ্যে ফরাশি কোম্পানি ইলেট্রিসিটে ডে ফ্রান্স এর বাতিল হওয়া প্রকল্পটির আনুমানিক ব্যয় ১৫০ কোটি ডলার। সামরিক অভ্যুত্থানবিরোধী চলমান বিক্ষোভে রক্তপাত ও সহিংসতার পর এই সিদ্ধান্ত জানালো ফরাসি কোম্পানিটি।
সেনাবাহিনী ও বেসামরিক সরকারের মধ্যে নির্বাচনে জালিয়াতি নিয়ে চলমান উত্তেজনার মধ্যে ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থান ঘটে। এর পর পরই এনএলডির শীর্ষ নেত্রী অং সান সু চি, দেশটির প্রেসিডেন্ট এবং মন্ত্রিসভার সদস্যসহ প্রভাবশালী রাজনীতিকদের আটক করে সেনাবাহিনী। পরে সেনাবাহিনী এক ঘোষণায় জানায়, আগামী ১ বছরের জন্য মিয়ানমারের ক্ষমতায় থাকবে তারা।
গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে দিয়ে সেনা অভ্যুত্থানের ঘটনায় হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করতে রাস্তায় নেমে আসে। বড় জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞা ও রাত্রিকালীন কারফিউ থাকা সত্ত্বেও তারা বিক্ষোভ দেখায়।
দেশটিতে চলমান আন্দোলনে নিহতের সংখ্যা ২৩৭ এ দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে অ্যাস্টিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিকাল প্রিজনার্স।
বৈশাখী নিউজ/ জেপা