আজারবাইজানে ধর্মপ্রাণ মানুষের ওপর নিপীড়নে উস্কানি

আপডেট: October 11, 2021 |

শত্রুরা ইরান ও আজারবাইজানের মধ্যকার সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে নানা পরিকল্পনা প্রণয়ন ও চেষ্টা চালিয়ে আসছে। আজারবাইজানে ক্ষমতাসীন দলের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন কর্মকর্তা সেদেশে ইরানভীতি ছড়ানো এবং উত্তর আরাসের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের দমনের জন্য আন্তর্জাতিক ইহুদিবাদী চক্রের নতুন ষড়যন্ত্রের কথা ফাঁস করে দিয়েছেন।

দেশটির কয়েকজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইসরাইল আজারবাইজানে ইরানের অবস্থান দুর্বল করার জন্য শিশুসুলভ বক্তব্য ও মিথ্যা প্রচার চালিয়ে ইলহাম আলিয়েভ সরকারকে এমনভাবে উস্কানি দেয়ার চেষ্টা করছে যাতে সেদেশে ধর্মপ্রাণ মানুষ ও ইরান সমর্থক জনগণের বিরুদ্ধে সরকারকে দাড় করানো যায় ও তাদের দমন করা যায়।

অথচ আজারবাইজানে ইরানের প্রভাব ও গ্রহণযোগ্যতা এতটাই বেশি যে ওই দেশটিতে ইরানের অবস্থান তো দুর্বল হবেই না বরং দেশটির জনগণ ইসরাইলি ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে আরো বেশি সচেতন হয়ে উঠবে।

ইরান-আজারবাইজান সাম্প্রতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে আজারবাইজানের জনগণের কাছে একটা বড় প্রশ্ন হচ্ছে এটা কীভাবে সম্ভব যে গত তিন দশক ধরে ইরানের পক্ষ থেকে স্বায়ত্বশাসিত নাখজাবন এলাকায় নিরাপত্তা বজায় রাখার বিষয়ে আজারবাইজানের গণমাধ্যমে আলোচিত হয় না?

বাস্তবতা হচ্ছে, ইরান ও আজারবাইজান সবচেয়ে বন্ধুপ্রতীম দেশ হলেও খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে তারা শত্রুতে পরিণত হয়েছে। এতে কোনো সন্দেহ নেই যে কেবলমাত্র অভিন্ন শত্রুর অনুগত গণমাধ্যমের পক্ষেই অপপ্রচার চালানো সম্ভব যদিও তারা সফল হবে না।

কেননা এই দুই দেশের জনগণের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বহুদিনের পুরানো এবং অপপ্রচার চালিয়ে শত্রুরা হয়তো সাময়িক লাভবান হতে পারে কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে তাদের কোনো লাভ হবে না এবং এতে করে কেবল ইসরাইলের পরম বন্ধু বাকু সরকারই কলঙ্কিত হবে।

আজারবাইজানের এলহাম আলিয়েভ সরকার পরিষদের সদস্য এবং দেশটির জাতীয় সংসদের অর্থনীতি ও শিল্প বিষয়ক কমিশনের সদস্য ওয়াহেদ আহমাদভ ইরানকে সমর্থনের অভিযোগ তুলে আজারবাইজানের ধর্মপ্রাণ মানুষের ওপর জুলুম নির্যাতন ও দমন-পীড়ন চালানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।

তিনি ইরানের ব্যাপারে আজারবাইজান সরকারের নীতিতে পরিবর্তনের ওপরও জোর দেন। আজারবাইজানের এ কর্মকর্তা আরো দাবি করেন আমার মনে হয় না ইরানের সঙ্গে আমাদের কোনো যুদ্ধ হবে। ইরান যুদ্ধে জড়াবে না কারণ দেশটির সেই ক্ষমতা নেই। বরং ইরানের তুলনায় আজারবাইজান ও তার মিত্ররা অনেক বেশি শক্তিশালী।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, আজারবাইজানের এ কর্মকর্তার এ ধরনের বক্তব্য থেকে বোঝা যায় দেশটির রাজনীতিবিদরা এখনো অজ্ঞতা ও অন্ধকারের মধ্যে ডুবে আছে। বাস্তবতা হচ্ছে দেশটির গণমাধ্যমে ইরানের শক্তি সামর্থ্য নিয়ে ব্যাপক অপপ্রচার চালানো হলেও ওই দেশটির উত্তর আরাসের মুসলমানরা প্রচণ্ডভাবে ইরানের ভক্ত।

ইসরাইল প্রভাবিত দেশটির গণমাধ্যমগুলো ইরানের সেনাবাহিনীর সাম্প্রতিক মহড়া এবং দুই ভ্রাতৃপ্রতিম মুসলিম রাষ্ট্রের মধ্যে যুদ্ধের আশঙ্কার ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে প্রচার করে আজারবাইজানের জনগণকে ইরানের বিরুদ্ধে খেপিয়ে তোলার চেষ্টা করেছে। আজারবাইজানের ইসলামি সংগঠনের প্রধান হাজ ইলকার ইব্রাহিম ওগলু বলেছেন, আজারবাইজানের কোনোভাবেই উচিত হবে না ইরানের সাথে কোনো দ্বন্দ্বে লিপ্ত হওয়া।

বৈশাখী নিউজ/ এপি

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর