ঢাকার সব দোকানপাট রাত ৮ টার মধ্যেই বন্ধের অনুরোধ মেয়র তাপসের

আপডেট: May 16, 2022 |

ঢাকার ধারণক্ষমতা সব সীমাবদ্ধতা ছাড়িয়ে গেছে। এ থেকে দ্রুত পরিত্রাণ ছাড়া উপায় নাই। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পয়ঃনিষ্কাশন কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আমরা চাই, দ্রুত এ সমস্যা সমাধান করতে। এজন্য রাত আটটার মধ্যেই ঢাকার সব দোকানপাট, শপিং মল বন্ধ করতে হবে। শুধু খাবারের দোকান রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।

এছাড়া ঔষধের দোকানসহ জরুরি প্রয়োনীয় সেবাগুলো তাদের সুবিধামতো সময় খোলা রাখতে পারবেন।

আজ সোমবার দায়িত্ব পালনের দুই বছর পূর্তিতে নগর ভবনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র তাপস বলেন, বিশ্বের অন্যান্য বড় শহরগুলোর দোকানপাট, শপিং মল একটি নির্দিষ্ট সময় অর্থাৎ রাত আটটা থেকে নয়টার মধ্যেই তাদের কার্যক্রম শেষ করেন। আমাদেরকেও ঢাকার শৃঙ্খলা ফেরাতে এ উদ্যোগ নিতে হবে। এজন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।

তাপস বলেন, ঢাকার ওপর চাপ কমাতে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী ইশতেহার ‘আমার গ্রাম, আমার শহর’ পরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। এতে করে ঢাকার ওপর চাপ অনেকটাই কমে আসবে।

শহর রক্ষায় ঢাকামুখী জনস্রোত রোধ করা প্রস্তাব দিয়েছেন মেয়র তাপস। তিনি বলেন, ‘এটি সুস্পষ্ট যে, ঢাকা শহর ২ কোটিরও বেশি জনগোষ্ঠীর ভার বহনে অক্ষম। কিন্তু প্রতিনিয়ত মানুষের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। তাই সরকারকে এ ব্যাপারে এখনই পরিকল্পনা নিতে হবে।’

শহর পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনাকে একটি সময়সীমায় আওতায় নিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দিতে হবে। শহর কখন জেগে উঠবে, কখন ঘুমাবে– সে বিষয়ে পৃথিবীর অন্যান্য শহরের মতোই সুনির্দিষ্ট সময়সীমা ঢাকা শহরের জন্যও থাকা আবশ্যক।’

ঢাকা শহরকে একটি বাসযোগ্য ও উন্নত শহর হিসেবে গড়ে তুলতে অন্যান্য অনুষঙ্গের পাশাপাশি রাত ৮টার মধ্যে বেসরকারি অফিস, দোকান-পাট, বাজার (মার্কেট), শপিং মল ইত্যাদি বন্ধ করারও তাগিদ দেন ফজলে নূর তাপস।

তিনি আরও বলেন, ‘খাবার হোটেল রাত ১০টার পর খোলা রাখা যাবে না। ঔষধালয়, চিকিৎসালয় ইত্যাদি একান্ত জরুরি সেবা ও প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে নির্দিষ্ট সময়ের পর খোলা রাখতে হলে করপোরেশনের বিশেষ অনুমতি নিতে হবে।’

এতে শহরের কার্যক্রম শৃঙ্খলায় আসবে এবং লোকজনও তাদের পরিবার-পরিজন, বন্ধুবান্ধবদের সাথে সময় কাটাতে পারবে, পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধন মজবুত ভিত্তি লাভ করবে বলেও মনে করেন তিনি।

মেয়র বলেন, ‘আমরা যে খালগুলোর দায়িত্ব বুঝে নিয়েছি, সেগুলো হতে বর্জ্য ও পলি অপসারণ করে চলেছি।’

আগামী ১ জুলাই থেকে ডিএসিসির নর্দমায় কোনও পয়ঃবর্জ্য বা পানির সংযোগ আর দিতে দেওয়া হবে না বলে জানান মেয়র। তিনি বলেন, ‘পয়ঃবর্জ্য বা পানি ব্যবস্থাপনা ওয়াসার দায়িত্ব। ওয়াসা সেই দায়িত্ব পালন করুক বা না করুক, আমরা আমাদের স্ট্রম স্যুয়ারেজে আর কোনও পয়ঃবর্জ্যের বা পানির সংযোগ দেবো না।

সেজন্য ঢাকাবাসীকেও আমরা অনুরোধ করছি, আপনারা আপনার বাড়ি বা ভবনে যথানিয়মে সোক ওয়েল ও সেফটিক ট্যাংক নির্মাণের ব্যবস্থা নিন। নতুবা আমাদের কঠোর হতে হবে।’

রাস্তাগুলো কীভাবে হকার মুক্ত করা যায়, হাঁটার পথগুলো কীভাবে উন্মুক্ত করা যায়, সেটা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের একটি গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম বলে জানান মেয়র। তিনি বলেন, ‘সেই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা মনে করি, কিছু কিছু সড়ক বা এলাকাকে আমরা লাল চিহ্নিত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করবো।

সেসব সড়কে কোনোভাবেই কোনও হকারকে বসতে দেওয়া হবে না। কিছু সড়ককে হলুদ চিহ্নিত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হবে। সেসব সড়কে সুনির্দিষ্ট সময়ের জন্য হকাররা বসতে পারবে, তাদের ব্যবসা বাণিজ্য পরিচালনা করতে পারবে। সময়সীমার বাইরে সেসব সড়কেও কোনও ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে দেওয়া হবে না।’

মেয়র বলেন, ‘ঢাকায় যে পরিমাণ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান রয়েছে, তার তুলনায় অনেক কম প্রতিষ্ঠানই করপোরেশনের কাছ থেকে অনুমতি নেয়। আগামী অর্থবছর হতে এ বিষয়ে আমরা কঠোর হবো।’

বৈশাখী নিউজ/ জেপা

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর