মিলেছে মরদেহের বাকী অংশ, পাওয়া গেছে পরিচয়

গাজীপুর প্রতিনিধি: গাজীপুরের কালীগঞ্জে অজ্ঞাত হিসেবে যে যুবকের মরদেহের তিন অংশ (দুই হাত ও কোমড় থেকে উরু) উদ্ধার করা হয়েছিল, ওই যুবকের মরদেহের বাকী অংশগুলোও উদ্ধার করেছে কালীগঞ্জ থানার উলুখোলা ফাঁড়ি পুলিশ। পাশাপাশি মিলেছে যুবকের পরিচয়ও।

শনিবার (০১ অক্টোবর) সকালে উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য মানিক মিয়ার ভাড়া বাড়ির সামনে কোমড় থেকে উরু ও দুটি বিচ্ছিন্ন হাতসহ মরদেহের তিনটি অংশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে সারাদিন ব্যাপী উদ্ধারকৃত স্থানের আশেপাশে মরদেহের বাকী আরো ৪ টুকরো উদ্ধার করা হয়। তবে এখনো পায়ের এক অংশের সন্ধান মেলেনি। উদ্ধারকৃত প্রতিটির টুকরোর দূরত্ব ছিল কমপক্ষে আধা কিলোমিটার। কোনটা পুকুরের পাড়ে, কোনটি পাওয়া গেছে ডাঙ্গায় ও ঝোপঝাড়ে। বিকেলে মুখমন্ডল উদ্ধারের পর নিহতের স্বজনরা পরিচয় নিশ্চিত করেন।

মরদেহের বাকী অংশ উদ্ধার ও পরিচয় সনাক্তের বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমকে নিশ্চিত করেছে গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোহাম্মাদ ছানোয়ার হোসেন।

নিহত সবুজ বার্নাড ঘোষাল (৩২)। তিনি নাগরী ইউনিয়নের পানজোড়া গ্রামের অমূল্য বার্নাড ঘোষালের ছেলে। পানজোড়া এলাকার পূর্বাচল এপারেলস লিমিটেড নামে একটি পোশাক কারখানায় কোয়ালিটি চেকার (কিউসি) হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোহাম্মাদ ছানোয়ার হোসেন জানান, খন্ডিত মরদেহের একাধিক টুকরো উদ্ধার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।

নিহতের পিতা জানান, পোষাক কারখানায় কর্মরত থাকা অবস্থায় গত ২৮ সেপ্টেম্বর (বুধবার) বিকেল ৪টা ৬ মিনিটে সবুজ বার্নার্ড পূর্বাচল অ্যাপারেল লিমিটেড পোশাক কারখানা থেকে বের হয়। এরপর তিনি আর কারখানায় বা বাড়িতে ফেরেনি। এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) কালীগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (নং ১৩৭৪) করা হয়েছিল।

স্থানীয়রা জানান, শনিবার (০১ অক্টোবর) সকালে স্থানীয়রা ওই কারখানা সংলগ্ন সাবেক ইউপি সদস্য মানিক মেম্বারের ভাড়া বাড়ির সামনে একটি ডোবায় অজ্ঞাত দেহ পানিতে ভাসতে দেখে থানায় খবর দেয় স্থানীয়রা। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহের কোমরের নিচের অংশ, দুই হাত উদ্ধার করে। পরে দিনব্যাপী ওই এলাকার চারদিকে সন্ধান করে একে একে আরো চার টুকরো উদ্ধার করে পুলিশ। এর মধ্যে মাথা, কোমর ও এক পায়ের দুই টুকরো উদ্ধার করা হয়েছে। সব মিলিয়ে মরদেহের ৭টি টুকরো উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এখনো এক পায়ের সন্ধান মেলেনি।

সূত্র আরো জানান, ওই এলাকায় অপরিচিত কিছু লোক আশপাশে ভাড়া বাসা নিয়ে বসবাস করেন। তবে এদের মধ্যে কোন সিরিয়াল কিলার থাকতে পারে। তাদের ধারণা যেভাবে সবুজকে টুকরা করা হয়েছে এটা উন্মুক্তস্থানে নয়, বরং কোনো রুমের মধ্যে করে হতে পারে। কারণ এমন কাজ খোলা জয়গায় অসম্ভব।