সরিষার ফলন ও দামে খুশি কৃষক
আলিফ হোসেন, তানোর প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোরে রেকর্ড পরিমাণ জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। এবার আশাব্যঞ্জক ফলন ও বাজারে ভাল দাম থাকায় কৃষকেরা বেশ খুশি।
অল্প খরচে বেশী লাভ হওয়ায় কৃষকেরা সরিষা চাষে ঝুঁকছে। ফলে আগামীতে আরো বেশি পরিমান জমিতে সরিষা চাষ হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ।
জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার প্রতিটি মাঠে কমবেশী সরিষা চাষ হয়েছে। অনেক মাঠে ইতমধ্যে সরিষা কাটা-মাড়াই শুরু হয়েছে। এবার এখন পর্যন্ত্য সরিষার বাম্পার ফলন ও বাজারে ভাল দাম থাকায় কৃষকেরা বেশ খুশি।
সুত্রে জানা যায়, বিগত বছর থেকে আমদানি নির্ভর ভোজ্য তেলের হঠাৎ অস্বাভাবিক মুল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে দেশে ভোজ্য তেলের আমদানি নির্ভরতা কমাতে উদ্যোগ নেয় সরকার।
এই লক্ষ্যে সরকার দেশে ভোজ্য তেল ও মসলা জাতীয় ফসল উৎপাদনে, কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে কৃষি প্রণোনা হিসেবে ভর্তুকিতে সার, বীজ, কীটনাশকসহ কৃষি উপকরণ বিতরণ করেছেন। ফলে উপজেলায় এবার রেকর্ড পরিমাণ জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে।
কৃষি অফিস সুত্র জানা যায়, উপজেলায় চলতি মৌসুমে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার হেক্টরের জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। এর মধ্যে বারি-৯- জাতের সরিষা প্রায় ৮৩ হেক্টর, বারি ১৪,- ৪৭৮৬ হেক্টর- বারি১৫- ৭৩ হেক্টর বারি ১৭- ১১৮৯ হেক্টর বারি ১৮-৪৭ হেক্টর বিনা -৯ ২৪ হেক্টর এবং বিএডিসির প্রায় কয়েক হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে।
প্রতি বিঘায় খরচ প্রায় ৭ হাজার টাকা এবং ফলন প্রায় সাড়ে ৬ থেকে ৭ মণ। বাজারে এক মন সরিষা প্রকার ভেদে ৩ হাজার ২০০ থেকে ৩ হাজার ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এতে সরিষা চাষ করে প্রতি বিঘায় ৭ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকা লাভ হবে।
উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নের (ইউপি) ছাঐড় গ্রামের কৃষক আব্দুল জানান, তিনি ২ বিঘা জমিতে সরিষা রোপণ করেছেন, সরিষার গাছ ভালো আছে, আগামি ১০-১২ দিনের মধ্যে সরিষা তুলা হবে, তার বিঘা প্রতি ৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।
একই এলাকার কৃষক মামুন ৩ বিঘা, জুয়েল এক বিঘা সরিষা চাষ করেছেন।
তানোর পৌরসভার গুবিরপাড়া মহল্লার কৃষক আব্দুর রহমান জানান, তিনি ১০ কাঠা জমিতে সরিষা রোপণ করেছিলেন। এতে তার ফলন হয়েছে প্রায় তিন মণ।
কৃষকেরা বলেন, যাদের নিজস্ব জমি, তাদের বিঘা প্রতি ৫ হাজার টাকা খরচ হবে।তবে ইজারা নেয়া জমিতে প্রায় ৭ হাজার টাকা খরচ হবে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মেদ জানান, বর্তমান সরকার তেলের ঘাটতি মিটাতে সরিষা চাষের সঠিক সময়ে উপজেলার ৩ হাজার ৫০০ জন প্রান্তিক কৃষকে বীজ ও সার প্রনোদনা দিয়েছিলেন।
যার ফলে এবার রেকর্ড পরিমান জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে, সরিষা চাষে খরচ কম, লাভ ভালো। সরিষা থেকে তেল, মধু ও জালানি হিসেবে ব্যবহার হয়।
শুরু থেকে এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকুলে থাকার কারনে এবং সার্বক্ষনিক মাঠ তদারকির ফলে রোগ বালা নেই।
যেখানেই সমস্যা হয়েছে, সেখানেই পৌছে সঠিক পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এর সুফলও পেয়েছেন চাষীরা। সরিষা মাড়াই করে বা খোজ নিয়ে জানা গেছে ৬- ৭ মন ফলন হচ্ছে।
আগামীতে আরো বেশি জমিতে সরিষা চাষ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এই কর্মকর্তা।