গাইবান্ধায় কিস্তি ক্রেতার মৃত্যুতে ওয়ালটন প্লাজার সহায়তা

আপডেট: March 11, 2023 |

গাইবান্ধায় ক্রেতার মৃত্যুতে গ্রাহকের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে দেশের শীর্ষ স্থানীয় ইলেকট্রনিক্স ও প্রযুক্তিপণ্যের মাল্টি ন্যাশনাল ব্র্যান্ড ওয়ালটন।

বোনার পাড়া ওয়ালটন প্লাজা থেকে কিস্তি সুবিধায় একটি গ্যাস স্টোভ কিনে কয়েকটি কিস্তি পরিশোধ করার পর অসুস্থতাজনিত কারণে আকস্মিকভাবে মৃত্যুবরণ করেন মুক্তিনগর ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ মতিরাম রবিদাস।

এর প্রেক্ষিতে ‘কিস্তি ক্রেতা ও পরিবার সুরক্ষা নীতির’ আওতায় তার কিস্তি মওকুফ করে পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করলো ওয়ালটন প্লাজা কর্তৃপক্ষ।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি ক্রেতাদের জন্য ‘কিস্তি ক্রেতা ও পরিবার সুরক্ষা নীতি’ চালু করেছে ওয়ালটন প্লাজা। এর আওতায় দেশের যেকোনো ওয়ালটন প্লাজা থেকে কিস্তি পণ্য ক্রয়কারীদের কিস্তি সুরক্ষা কার্ড দেওয়া হচ্ছে।

কিস্তি চলমান থাকা অবস্থায় ক্রেতার মৃত্যু হলে পণ্যমূল্যের ভিত্তিতে ৫০ হাজার থেকে ৩ লাখ এবং তার পরিবারের কোনো সদস্য মৃত্যুবরণ করলে ২৫ হাজার থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত সহায়তা দিচ্ছে ওয়ালটন প্লাজা।

এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পণ্যের অনাদায়ী কিস্তির টাকা সমন্বয়ের পর অবশিষ্ট টাকা ক্রেতা বা তার পরিবারকে দেওয়া হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) সাঘাটার হাট ভরতখালি এলাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে রবিদাসের স্ত্রী শিউলী রাণী রবিদাসের হাতে আর্থিক সহায়তা তুলে দেন মুক্তিনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আহসান হাবিব লায়ন।

সেসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাঘাটা থানার উপ পরিদর্শক শাহজাহান সিরাজ, স্থানীয় ইউপি সদস্য মাহবুবুর রহমান, ওয়ালটনের রিজিওনাল সেলস ম্যানেজার হাসানুজ্জামান, ক্রেডিট ম্যানেজার খন্দকার মাহমুদ রেজা এবং প্লাজা ম্যানেজার আল-মামুন।

জানা গেছে, মৃত ক্রেতার বাড়ি সাঘাটা উপজেলার ভরতখালি গ্রামে। তিনি ৪ নাম্বার ওয়ার্ডে গ্রাম পুলিশ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত বছরের ৭ ডিসেম্বর কলেজ রোডের বোনার পাড়া ওয়ালটন প্লাজা থেকে কিস্তিতে একটি ডাবল বার্নার গ্লাস গ্যাস স্টোভ কেনেন রবিদাস। তার কিস্তি ক্রেতা সুরক্ষা কার্ড নাম্বার ৭৩৬২৮৯৯১৬৩৭২১০৩৬।

চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি মারা যান তিনি। ৪ মেয়েসহ ৬ সদস্যের পরিবারে তিনিই ছিলেন একমাত্র উপার্জনকারী। তার মৃত্যুতে অসহায় হয়ে পড়ে তার পরিবার। অচল হয়ে পড়ে সংসার।

এ অবস্থায় ‘কিস্তি ক্রেতা ও পরিবার সুরক্ষা নীতি’র আওতায় মৃত গ্রাহকের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে ওয়ালটন প্লাজা। মৃত কিস্তি ক্রেতা রবিদাসের পরিবারকে দেওয়া হয়েছে ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা।

এর থেকে কিস্তির অবশিষ্ট ২ হাজার ৩৭৪ টাকা পরিশোধের পর তারা পেয়েছেন নগদ ৪৭ হাজার ৬২৬ টাকা। ওয়ালটন প্লাজার কাছ থেকে এই সহায়তা পেয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন রবিদাসের পরিবার।

কিস্তির টাকা মওকুফ করা হয়েছে জানতে পেরে এবং বাড়তি আর্থিক সুবিধা পেয়ে মহাখুশি শিউলী রাণী রবিদাস।

তিনি বলেন, ‘মানুষ যেকোনো সময় মারা যেতে পারে। এতে আমাদের কোনো হাত নেই। কিন্তু কিস্তিতে পণ্য কেনার পর নিজে বা পরিবারের সদস্য মারা গেলে কিস্তি মওকুফসহ উল্টো অনুদান পাওয়া যায়, তা কখনো শুনিনি।

এমন কিছু কল্পনাও করিনি। মানুষ মারা গেলেও অনুদান পাওয়া যায় ওয়ালটন প্লাজা তার একমাত্র উদাহারণ। ওয়ালটন প্রমাণ করেছে, কাস্টমার সার্ভিসে তারাই সেরা। তারা দেশ-বিদেশের মানুষের হৃদয়ে এভাবেই জায়গা করে নিয়েছে। ওয়ালটনের সাফল্যের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকুক।’

তিনি আরো বলেন, ৪ মেয়ের মধ্যে মাত্র ১টি মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। বাকি রয়েছে ছোট ৩ মেয়ে। ওদের নিয়ে আমি কোথায় যাব, কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না। এই বিপদের দিনে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ায় ওয়ালটন প্লাজা কর্তৃপক্ষের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। সহায়তার টাকা মেয়েদের পড়াশোনার কাজে ব্যয় করবো।

অনুষ্ঠানে ইউপি চেয়ারম্যান আহসান হাবিব লায়ন ওয়ালটনের কিস্তি ক্রেতা সহায়তা নীতির প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, এমন উদ্যোগ প্রত্যেক কোম্পানির গ্রহণ করা উচিৎ। এর মধ্য দিয়ে তারা সহজেই ক্রেতার মন জয় করতে পারেন।

পাশাপাশি এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশে ধনী-দরিদ্রের মধ্যে বিরাজমান বৈষম্য হ্রাস করা সম্ভব। দেশীয় কোম্পানি ওয়ালটন এসব সামাজিক কার্যক্রমের মাধ্যমে মানুষের হৃদয়ে ইতোমধ্যেই স্থান করে নিয়েছে।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর