ফরিদপুরে কিশোর গ্যাং এর দুই সদস্য গ্রেফতার
তারেকুজ্জামান ফরিদপুর প্রতিনিধি: ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলায় শনিবার (১৫ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে চাঞ্চল্যকর কিশোর গ্যাং কর্তৃক হামলা ও কোপাকুপি ঘটনায় জড়িত দুইজন কিশোর গ্যাং সদস্যকে ফরিদপুর হতে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৮, সিপিসি ২।
হামলায় আহতরা হলেন, বোয়ালমারী পৌরসভার দক্ষিণ কামারগ্রামের সিফাত শেখ (১৬) এবং নিয়ামুল ইসলাম নাঈম (১৫)।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব জানায়, গত বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) বোয়ালমারির কিশোর গ্যাং এর ১ জন সদস্য অন্য এক দল কিশোরকে ইংগিত করে ফেসবুকে হামলার হুমকিসহ স্ট্যাটাস দেয়।
এরই জের ধরে অভিযুক্ত কিশোর গ্যাং সদস্যরা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী পরে গত শনিবার (১৫ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টার দিকে আহতরা বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে অনুষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী গুয়োতলার মেলা দেখে ফেরার সময় পৌর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন কাজী সিরাজুল ইসলাম মহিলা কলেজের গেটে পৌঁছালে কিশোর গ্যাং লিডারের নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ জনের একটি গ্রুপ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ফিল্ম স্টাইলে হামলা করে।
এ সময় হামলাকারীরা চারদিক থেকে ঘিরে বেধড়ক পিটিয়ে বোয়ালমারী পৌরসভার দক্ষিণ কামারগ্রামের সিফাত শেখ (১৬) এবং নিয়ামুল ইসলাম নাঈম (১৫) এর মাথা, হাত ও বামপাঁজর এবং সিফাতের মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে পালিয়ে যায়।
এই ঘটনা দেশব্যাপী পত্র পত্রিকা, টিভি ও সোশ্যাল মিডিয়াতে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।
উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের মা বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করে। ঘটনার পর থেকে উক্ত মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য র্যাব-৮, ফরিদপুর ক্যাম্প বিশেষ গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু করে।
এরই প্রেক্ষিতে, র্যাব-৮, ফরিদপুর ক্যাম্পের একটি বিশেষ আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ফরিদপুর ক্যাম্পের কোম্পানী অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার কে এম শাইখ আকতার এর নেতৃত্বে ২৫ এপ্রিল রাত ০৩:৫০ ঘটিকায় ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী থানার চালিনগর গ্রামস্থ এলাকা থেকে উল্লেখিত কিশোর গ্যাং এর দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, মোঃ শাকিল মোল্লা (১৮) ও মোঃ আাকাশ মোল্লা (২২), তারা সম্পর্কে দুই ভাই, তাদের পিতা- মোঃ জামিল মোল্লা, তারা বোয়ালমারী থানার চালিনগর গ্রামের বাসিন্দা।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি একটি সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে বোয়ালমারী সদর ইউনিয়নের চালিনগর গ্রামের আরাফাত রহমান কোকোর সঙ্গে আহত নিয়ামুল ও সিফাতের দ্বন্দ্ব চলছিল।
দ্বন্দ্বের জেরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বেশ কিছুদিন একে অপরকে ইঙ্গিত করে স্ট্যাটাস দিলেও গত ১৩ এপ্রিল এমডি হৃদয় নামের একটি ফেসবুক আইডি হতে আহত নিয়ামুল, সিফাত ও তাদের এক বন্ধুকে লালবৃত্তে চিহ্নিত করে একটি স্ট্যাটাস দেওয়া হয়, যাতে লেখাছিলো-তোদের তিনটারে পাইলেতো ছিঁড়ে ফেলামু খানকির পোলা। এর দুইদিন পরই এ হামলার ঘটনা ঘটে।
আটকের পরে উক্ত আসামিদের থানায় হস্তান্তর করা হয়।
আটককৃত কিশোর গ্যাং এর দুই সদস্যকে ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী থানার মামলা-১৫, তারিখঃ ১৭/০৪/২০২৩ ইং ধারা- ১৪৩/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৩৭৯/৫০৬/১১৪ পেনাল কোড মূলে ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী থানায় হস্তান্তর করা হয়।