বিনা চিকিৎসায় শেকলে বাঁধা জীবন খালেদার


মাছুদ পারভেজ গাজীপুর প্রতিনিধি : গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গোসিংগা ইউনিয়নের কাইচাবাড়ী এলাকার কৃষক ফাইজুদ্দিন-জোসনা দম্পতির চার সন্তানের মধ্যে সবার বড় খালেদা আক্তার।
স্থানীয় একটি মাদরাসা থেকে ২০১১ সালে দাখিল পাস করার পর সংসারে অভাব অনটনের জন্য আর পড়াশোনা করা সম্ভব হয়নি খালেদার।
পরিবার থেকে ২০১২ সালে বিয়েও দেওয়া হয় খালেদাকে। বিয়ের পর ভালোই যাচ্ছিল খালেদার সংসার জীবন।
সড়ক দুর্ঘটনায় ২০১৩ সালের শেষের দিকে বাবা—মা মারা গেছেন এমন উড়ো খবরে মানসিক বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়েন তিনি।
পরে বাবা—মা বাড়ি ফিরে এলেও পুরোনো স্মৃতি আর ফিরে পাননি খালেদা। এখন শুধু ফ্যালফ্যাল করেই তাকিয়ে থাকেন তিনি।
খালেদার মা জোসনা বেগম জানান, ২০১৩ সালে বাকরুদ্ধ হওয়ার পর আমরা সাধ্যমতো চিকিৎসা করেছি। তার চিকিৎসা করতে সহায়—সম্বল শেষ করেছি।
পরে এক সময় অর্থের অভাবে চিকিৎসাও বন্ধ হয়ে যায়। দুই বছর আগে পুরো স্মৃতিশক্তিই হারিয়ে ফেলে সে। এরপর থেকেই তাকে শিকলে বেঁধে রাখতে হচ্ছে।
মেয়েকে শেকলে বাঁধার বিষয়ে তিনি বলেন, তাকে সব সময় দেখে রাখা যায় না। এদিক ওদিক চলে যায়, ছেলে—মেয়েদের মারধর করে। তাউ তাকে শিকলে বেঁধে রাখা হয়।
খালেদার বাবা ফাইজুদ্দিন জানান, কৃষক পরিবার তার। দিন আনেন দিন খান। মেয়ের যে চিকিৎসা করবেন সে ব্যবস্থাও নেই। বিনা চিকিৎসায় দিন কাটছে মেয়ের।
খিলপাড়া বালিকা দাখিল মাদরাসার সুপার সোহরাব উদ্দিন জানান,খালেদা শিক্ষাজীবনে মেধাবী ছিলো জানিয়ে মেধাবী এই শিক্ষার্থীকে উন্নত চিকিৎসা দেওয়া গেলে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবে বলে বিশ্বাস করি। তবে পরিবারের তো সেই সক্ষমতা নেই।
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, শিকলে বাঁধার বিষয়টি জানা নেই।
তবে তার পরিবার যদি মনে করে মেয়েটির চিকিৎসার প্রয়োজন, তাহলে আমরা সে অনুযায়ী চিকিৎসার ব্যবস্থা নেব।