ফণীর দাপটে ওড়িশায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪

ভারতে ওড়িশায় শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র দাপটে এখনও পর্যন্ত চার জনের মৃত্যু হয়েছে বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে। রাজ্যটির কেন্দ্রপাড়া জেলার রাজনগর ব্লকের গুপ্তি পঞ্চায়েত এলাকায় একটি আশ্রয় শিবিরে ঊষারাণী বৈদ্য নামে ৭০ বছরের এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়।

শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮ টা নাগাদ ওই বৃদ্ধাকে যখন দেবেন্দ্র নারায়ণপুরের আশ্রয় শিবিরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল সে সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

আরেকটি পৃথক ঘটনায় পুরী জেলায় দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে ঘরের ওপর গাছ ভেঙে পড়ায় এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়, অনজ্যনের মৃত্যু হয় প্রবল বৃষ্টি ও ঝড়ে অ্যজবেস্টারের ছাদ ভেঙে পড়ার কারণে। দুই জনকেই পুরী জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।

শেষ ঘটনায় ওড়িশার সাক্ষীগোপাল জেলার হিরণপদ গ্রামে ১৮ বছর বয়সী এক যুবকের মৃত্যু হয়। প্রবল ঝড়ে তার ওপর গাছ উপড়ে পড়ায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়।

উল্লেখ্য, শুক্রবার সকালেই ভারতের ওড়িশায় আছড়ে পড়ে স্লাইকোন ‘ফণী’। এদিন সকালে ওড়িশার উপকূলবর্তী এলাকা পুরীতে এই ঝড় আছড়ে পড়ে। ঝড়ের গতিবেগ ঘন্টায় প্রায় ২০০ কিলোমিটার। এর ফলে পুরী ছাড়াও ওড়িশার গোপালপুর, পারাদ্বীপের মতো জায়গায় ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। একটানা বর্ষণের ফলে ওই সমস্ত এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। একাধিক জায়গায় গাছ, বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ার খবরও পাওয়া গেছে।

ভুবনেশ্বরের আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের মহাপরিচালক এইচ আর বিশ্বাস জানিয়েছেন ‘শুক্রবার সকাল ৮টায় ওড়িষ্যার পুরীতে ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ে এবং আগামী তিন ঘণ্টা এটা স্থায়ী থাকবে।’

প্রাকৃতিক দুর্যোগের আগাম পূর্বাভাষ থাকায় ইতিমধ্যেই পুরী, জগৎসিংহপুর, কেন্দ্রপাড়া, ভদ্রক, বালাসোর, গজপতি, কটক, ময়ূরভঞ্জসহ ওড়িশার ১১টি উপকূলবর্তী জেলা থেকে ১১ লাখ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। খোলা হয়েছে একাধিক ত্রাণ শিবির।

গোটা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখতে কন্ট্রোল রুম খুলেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়।

ওড়িশার পাশাপাশি অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকাকুলাম জেলাতেও ফণীর তাণ্ডব শুরু হয়েছে। বজ্রপাতসহ ঝড়, সঙ্গে ভারী বর্ষণে একাধিক বড় বড় গাছ উপড়ে পড়েছে, বেশকিছু কাঁচাবাড়িও ভেঙে পড়েছে, ভেঙে পড়েছে বিদুতের খুঁটি। একাধিক নারকেল গাছে আগুন ধরে গেছে। প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে রাজ্যটির উত্তর উপকূলবর্তী এলাকায় বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।