সারাদেশে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ৫

আপডেট: May 14, 2019 |

 

কক্সবাজার, পাবনা, ও যশোরে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে দুই রোহিঙ্গাসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। সোমবার দিবাগত রাত ও মঙ্গলবার ভোররাতে এসব ঘটনা ঘটে। বন্দুকযুদ্ধে পুলিশের অন্তত ৯জন সদস্য আহত হয়েছেন। জাগো নিউজের জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে এ তথ্য জানা গেছে।কক্সবাজার : কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে মানবপাচারকারী দুই রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার ভোররাতে বঙ্গোপসাগর লাগোয়া শামলাপুর মেরিনড্রাইভে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।নিহত রোহিঙ্গারা হলেন- শামলাপুর ২৩ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আব্দুর রহিমের ছেলে আজিম উল্লাহ (২০) ও উখিয়ার জামতলী ১৫ নং রোহিঙ্গা কাম্পের মৃত রহিম আলীর ছেলে আব্দুস সালাম (৫২)।আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন- এএসআই জহিরুল ইসলাম, কনস্টেবল মোবারক হোসেন, খাইরুল ও মানিক মিয়া।টেকনাফ মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ জানান, শেষ রাতের দিকে কতিপয় দালাল রোহিঙ্গাদের পাচারের উদ্দেশ্যে জড়ো করছে- এমন খবর পেয়ে টেকনাফ থানা পুলিশের একটি দল তাৎক্ষণিক অভিযান পরিচালনা করে। পুলিশের উপস্থিতি টের পাচারকারীরা পুলিশের ওপর গুলিবর্ষণ করতে থাকে। একপর্যায়ে আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। কিছুক্ষণ পরে আক্রমণকারীরা পিছু হটলে ঘটনাস্থল থেকে দুইজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। আহতদের হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে যাচাই-বাছাই করে চিহ্নিত করা হয়, নিহতরা রোহিঙ্গা। তারা দীর্ঘদিন ধরে মানবপাচারে জড়িত।অপরদিকে, সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে কক্সবাজার শহরের পাহাড়তলীর ইয়াবা গডফাদার সৈয়দুল মোস্তফা ভুলু (৩৫) নিহত হয়েছেন। নিহত ভুলু কক্সবাজার পৌরসভার পাহাড়তলির মাদক সম্রাট হাজী জহির আহাম্মদের ছেলে। ভুলুর বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ৭টির অধিক মামলা রয়েছে। তার বাবা জহির আহাম্মদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় দুই ডজনের মতো মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।কক্সবাজার সদর মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. খায়রুজ্জামান বলেন, ভুলু কক্সবাজার শহরের মোস্ট ওয়ান্টেড ইয়াবা ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ৭টির অধিক মামলা রয়েছে। সে দীর্ঘদিন আইনের চোখকে ফাঁকি দিলেও সোমবার সন্ধ্যায় তাকে পাহাড়তলী এলাকা হতে আটক করেন এসআই আনসারুল হক। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে নিয়ে ইয়াবা ও অস্ত্র উদ্ধারে রাতে তার এলাকায় যায় পুলিশ।পাহাড়তলী এলাকায় তার আস্তানায় গেলে তার সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। বেশ কিছুক্ষণ গুলি বিনিময়ের পর তারা পিছু হটে। তখন ঘটনাস্থলে ভুলুকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। তাকে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে ৪০০ পিস ইয়াবা, দুটি তাজা ও ছয়টি খালি কার্তুজ এবং একটি এলজি উদ্ধার করা হয়।পাবনা (ঈশ্বরদী) : পাবনার ঈশ্বরদীতে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে হাফিজুর রহমান তিতাস (৩৩) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার সাঁড়া ঝাউদিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।পুলিশের দাবি- নিহত হাফিজুর রহমান তিতাস মাদক ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে মাদকসহ ১৭টি মামলা রয়েছে। বন্দুকযুদ্ধে পুলিশের পাঁচ সদস্য আহত হয়েছেন। হাফিজুর রহমান তিতাস উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের আওতাপাড়া বাশেরবাঁদা গ্রামের মৃত আজিজ মোল্লার ছেলে।ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জহুরুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।পুলিশ জানায়, গভীর রাতে সাঁড়া ঝাউদিয়া এলাকার একটি মাঠে মাদক ব্যবসায়ীরা মাদক ভাগাভাগি করছে- এমন খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল অভিযান চালায়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে প্রথমে পুলিশের ওপর ইট পাটকেল নিক্ষেপ ও পরে গুলি চালায় মাদক ব্যবসায়ীরা। পুলিশও পাল্টা গুলি চালালে মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। পরে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাফিজুর রহমানকে উদ্ধার করে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।যশোর : যশোরে দুই দল ডাকাতের মধ্যে কথিত বন্দুকযুদ্ধে অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার ভোরে যশোর-মাগুরা মহাসড়কের নোঙ্গরপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতের মরদেহ যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।যশোর কোতোয়ালি থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহবুব জানান, দুই দল ডাকাতের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে গিয়ে তারা দেখতে রাস্তার উপর গাছের গুঁড়ি পড়ে আছে দেখতে পান। পরে ঘটনাস্থলের পাশ থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়। তাকে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে একটি ওয়ান শুটার গান, তিন রাউন্ড গুলি, তিনটি হাঁসুয়া ও এক জোড়া স্যান্ডেল উদ্ধার করা হয়েছে।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর