বরেণ্য সংগীতশিল্পী মুস্তাফা জামান আব্বাসী আর নেই

আপডেট: May 10, 2025 |
inbound4491925812332070492
print news

বরেণ্য সংগীতশিল্পী, গবেষক ও লেখক মুস্তাফা জামান আব্বাসী ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শনিবার, ১০ মে সকালে রাজধানীর বনানীর একটি হাসপাতালে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।

কন্যা শারমিন আব্বাসী গণমাধ্যমে তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন। বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় তিনি দীর্ঘদিন ভুগছিলেন।

উপমহাদেশের অন্যতম খ্যাতিমান সংগীত পরিবারে জন্ম নেওয়া মুস্তাফা জামান আব্বাসী ছিলেন পল্লীগীতির কিংবদন্তি আব্বাস উদ্দীন আহমেদের পুত্র।

সংগীত ছিল তাঁর রক্তে, চাচা আব্দুল করিম ভাওয়াইয়া ও ভাটিয়ালি গানের জনপ্রিয় শিল্পী, বোন ফেরদৌসী রহমান দেশের প্রথিতযশা সংগীতজ্ঞ এবং ভাই বিচারপতি মোস্তফা কামালের কন্যা নাশিদ কামালও সংগীতাঙ্গনের পরিচিত মুখ।

১৯৩৬ সালের ৮ ডিসেম্বর ভারতের কোচবিহার জেলার বলরামপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আব্বাসী। শৈশব ও কৈশোর কেটেছে কলকাতায়, যেখানে তার পরিবার জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৯ সালে বিএ অনার্স ও ১৯৬০ সালে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন। পাশাপাশি হার্ভার্ড গ্রুপ থেকে মার্কেটিংয়ের ওপর উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ করেন।

পেশাগত জীবনে শিল্পগোষ্ঠীর মহাব্যবস্থাপক এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

সংগীত সাধনা ও গবেষণায় নিজস্ব অবস্থান গড়ে তোলেন আব্বাসী। প্রায় পাঁচ দশক তিনি ফোক মিউজিক রিসার্চ গ্রুপের পরিচালক ও সংগ্রাহক হিসেবে কাজ করেন, সংগ্রহে ছিল হাজারো মূল্যবান বাংলা লোকগান, বিশেষ করে লালনের গান, ভাটিয়ালি, ভাওয়াইয়া, বিচ্ছেদী ও চটকা। সম্পাদিত গ্রন্থ “দুয়ারে আইসাছে পালকি” এবং “স্বাধীনতা দিনের গান” পাঠকমহলে প্রশংসিত।

বিশ্বের ২৫টিরও বেশি দেশে ভাটিয়ালি ও নজরুলগীতি পরিবেশন করে আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেন। দক্ষিণ কোরিয়ায় আন্তর্জাতিক লোকসঙ্গীত সম্মেলনে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করেন, ইউনেস্কোর আওতায় ১১ বছর বাংলাদেশ ন্যাশনাল কমিটি অব মিউজিকের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

সঙ্গীতের পাশাপাশি সাহিত্যেও ছিল তার সমান বিচরণ। ২১টি গ্রন্থের লেখক মুস্তফা জামান আব্বাসী জীবদ্দশায় নানা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর