মানুষের চোখও কি করোনাভাইরাসের টার্গেট?
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, কোভিড থেকে সেরে উঠার পর তার দৃষ্টিশক্তি নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। তাকে হয়তো এখন চশমা ব্যবহার শুরু করতে হবে।
ব্রিটেনে চোখের চিকিৎসা এবং শিক্ষা বিষয়ক শীর্ষ প্রতিষ্ঠান – রয়্যাল কলেজ অব অপথালমোলজিস্টস অ্যান্ড কলেজ অব অপটোমেট্রিস্টস – বলছে করোনাভাইরাসের আক্রান্ত অনেকের চোখের সমস্যা দেখা গেছে।
চিকিৎসকরা বলছেন, ঠাণ্ডা বা ফ্লুয়ের মতো শ্বাসতন্ত্রের ওপরের অংশে যে কোনো সংক্রমণে চোখের পাতায় চুলকানি শুরু হতে পারে।
এমন উপসর্গকে অনেক সময় ভাইরাল কনজাংটিভাইটিস বলা হয়। চোখ তখন লাল বা গোলাপি রং ধারণ করে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এখন জ্বর-কাশি, স্বাদ-গন্ধ চলে যাওয়ার সাথে রক্তবর্ণ চক্ষুকেও কোভিডের উপসর্গ হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
তবে ব্রিটেনের স্বাস্থ্য বিভাগ এখনও অবশ্য এটিকে কোভিড উপসর্গের তালিকায় ঢোকায়নি।
কনজাংটিভাইটিস হলে অনেক সময় চোখে পানি টলটল করে, চোখ চুলকায় এবং অস্বস্তি বোধ হয়। তবে ব্যথা হয় না বা দৃষ্টিশক্তির সাধারণত কোনো ক্ষতি হয় না।
কিন্তু চোখের পিউপিল বা আইরিস (চোখের বর্ণালি অংশ) যদি আক্রান্ত হয়, তাহলে অনেক সময় দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে যেতে পারে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের চক্ষু বিশেষজ্ঞ ড. রবার্ট ম্যাকলারেন বলেন, চীনের উহানে এক গবেষণায় দেখা গেছে কোভিডে আক্রান্ত অনেকের চোখে নানা ধরনের সমস্যা হয়েছে।
উহানে অনেক রোগীর চোখ ফুলে গিয়েছিল, অনেকের চোখ চটচটে হয়ে গিয়েছিল।
তিনি বলেন, “এরকম কিছু হলে দৃষ্টিশক্তি ব্যাহত হতে পারে। এমন অবস্থায় কারো গাড়ি চালানো উচিত নয়, কারণ অনেক সময় দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যেতে পারে বা একটি জিনিসকে দুটো দেখা যেতে পারে (ডাবল ভিশন)।“
ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ থেকে হওয়া কনজাংটিভাইটিস খুবই ছোঁয়াচে। মুখ বা নাকের মতো চোখ দিয়েও ভাইরাস দেহে ঢুকতে পারে।
তবে চোখের মাধ্যমে মহামারি ছড়াতে পারে কি না তা এখনও অস্পষ্ট।
অ্যানালস অব ইন্টারনাল মেডিসিন নামে একটি মেডিকেল জার্নালে ছাপা একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে- ইতালির প্রথম কোভিড রোগীর চোখে কনজাংটিভাইটিস ছিল। ৬৫ বছরের ওই নারীর চোখের পানি পরীক্ষা করে তাতে করোনাভাইরাস পাওয়া গিয়েছিল। সূত্র: বিবিসি
বৈশাখী নিউজ/ জেপা