পাকিস্তানকে বাংলাদেশের নিকট রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে স্মারকলিপি
একাত্তরের গণহত্যা ও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের অপরাধে পাকিস্তানকে বাংলাদেশের নিকট রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।
সোমবার পাকিস্তান দূতাবাসে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বরাবর এই স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
সোমবার দুপুর ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে পাকিস্তানকে বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে সমাবেশ করে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।
সমাবেশ শেষে পাকিস্তান দূতাবাস অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করে পরে শাহবাগে মিছিল আটকে দেয় পুলিশ।
মিছিল থেকে ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দল পাকিস্তান দূতাবাসে নিয়ে যায় পুলিশ। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি গ্রহণ করেন ডিপ্লোমেটিক পুলিশের ডিসি আশরাফুল ইসলাম। প্রতিনিধি দলে ছিলেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ, ভাস্কর শিল্পী রাশা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল, সাধারণ সম্পাদক মো. আল মামুন, আইন বিষয়ক সম্পাদক এজেডইউ প্রিন্স ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনেট মাহমুদ।
এর আগে সমাবেশে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, পাকিস্তানকে অবিলম্বে গণহত্যার দায় স্বীকার করে বাংলাদেশের নিকট রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমা চাইতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে পাকিস্তান দূতাবাস এখনো ষড়যন্ত্র চলমান রেখেছে। পাকিস্তান দূতাবাসের কার্যক্রমে নজরদারি বাড়ানোর জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।
ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ বলেন, ‘পাকিস্তানকে একাত্তরের গণহত্যা ও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যাকাণ্ডের অপরাধে দ্রুত ক্ষমা চাইতে হবে। অন্যথায় গণহত্যার অপরাধে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আমরা আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করবো। সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী অপশক্তির পৃষ্ঠপোষক হিসেবে পাকিস্তান বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। আমরা এদের সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিবো।”
সমাবেশে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. আল মামুন বলেন, ‘আজ ১৪ ডিসেম্বর: শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। বাঙালি জাতির জীবনে সবচেয়ে বড় কষ্টদায়ক দিন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে আজকের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী হত্যা করেছিলো জাতির শ্রেষ্ঠ মেধাবী সন্তানদের। প্রতিথযশা লেখক, কবি, সাহিত্যক, চিকিৎসক, শিক্ষক, বিজ্ঞানীদের রাতের আঁধারে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। পাকিস্তানি জান্তারা যখন বুঝতে পেরেছিল যে, তারা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে পরাজিত হতে যাচ্ছে ঠিক তখনই জাতিকে মেধা শূন্য করার জন্য এদেশীয় রাজাকার-আলবদর-আল শামসদের সহযোগিতায় হত্যা করেছিল জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের। পাকিস্তান দ্রুত ক্ষমা না চাইলে বাংলাদেশ সরকারকে পাকিস্তানের সঙ্গে সকল ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। অন্যথায় সমগ্র দেশে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ আরোও কঠোর কর্মসূচী ঘোষণা করবে।”
বৈশাখী নিউজ/ বিসি