আমাদের বিওপির সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘পার্বত্য অঞ্চলে সন্ত্রাসী গ্রুপ আছে। আমাদের এলাকা দিয়ে ধাওয়া দিলে তারা দুর্গম এলাকা পার হয়ে ওই দিকে (ভারত ও মিয়ানমার) চলে যায়। সেটা যেন না হয় সে জন্য আমাদের বিওপির সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। সীমান্ত সড়কও হচ্ছে। এগুলো হলে তাদের তৎপরতা বন্ধ হয়ে যাবে।’ গতকাল বুধবার পিলখানায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদর দপ্তরে বাহিনীটির সদস্যদের পদক বিতরণী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
২০২০ সালের বীরত্বপূর্ণ ও কৃতিত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ চারটি ক্যাটাগরিতে বিজিবির ৫৯ জনকে পদক পরিয়ে দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এর মধ্যে ১০ জনকে বিজিবি পদক (বিজিবিএম), ২০ জনকে রাষ্ট্রপতি বর্ডার গার্ড পদক (পিবিজিএম), ১০ জনকে বিজিবি পদক সেবা (বিজিবিএমএস) এবং ১৯ জনকে রাষ্ট্রপতি বর্ডার গার্ড পদক সেবা (পিজিবিএমএস) দেওয়া হয়। এ সময় বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পদস্থ কর্মকর্তারা, বিজিবির সব পর্যায়ের কর্মকর্তা, সৈনিক ও বেসামরিক কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সব সময় বলে থাকেন, আমাদের দেশে এক ইঞ্চি জমিও আমরা কোনো বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীকে ব্যবহার করতে দেব না। এ লক্ষ্যে সীমান্তে বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী ঠেকাতে আমরা কাজ করছি। ভারতের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। তারা যতটুকু পারছে সহযোগিতা করছে। মিয়ানমারের সঙ্গেও আমাদের যে সীমান্ত, সেখানেও এমন কিছু এলাকা সম্পর্কে আমাদের কাছে কিছু গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে। ওই সব এলাকা থেকে সীমান্ত পার হয়ে কিছু দুষ্কৃতকারীচক্র অপরাধ করে চলে যায়। আবার ওইখানে অপরাধ করে আমাদের এখানে এসে শেল্টার নেয়। এসব বন্ধ করার জন্য বিজিবিকে ত্রিমাত্রিক বাহিনী (আকাশ, পানি এবং স্থলপথ) হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। এ ছাড়া আমরা বর্ডার রোড নির্মাণ ও বিওপি বৃদ্ধিতে জোর দিয়েছি। এগুলো হয়ে গেলে আর সমস্যা হবে না।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, দেশের সীমান্ত রক্ষার গুরুত্বপূর্ণ ও মহান দায়িত্ব বিজিবির ওপর ন্যস্ত। নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও সীমান্তের নিরাপত্তা রক্ষাসহ চোরাচালান, মাদক পাচার, নারী ও শিশু পাচার রোধে বিজিবির সফলতা প্রশংসনীয়। বিশেষ করে ইয়াবা, ফেনসিডিল ও অন্যান্য মাদক পাচার রোধে বিজিবি বিশেষ কৃতিত্ব দেখাতে সক্ষম হয়েছে।
বিজিবি মহাপরিচালক সাফিনুল ইসলাম বলেন, ‘বিএসএফ প্রতিবার আমাদের কিছু লোকেশন দেয়। আমরা সেখানে অপারেশন পরিচালনা করি। কিন্তু আদতে সেখানে কিছুই (ক্যাম্প) পাই না। সেটাও আমরা বিএসএফকে জানিয়েছি।’
প্রসঙ্গত, গত ২৫ ডিসেম্বর গুয়াহাটিতে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক মিজোরামে পার্বত্য চট্টগ্রামের ‘সশস্ত্র আঞ্চলিক বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর ঘাঁটি’র অস্তিত্ব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং এই আস্তানাগুলো ধ্বংস করার জন্য বিএসএফকে অনুরোধ জানান। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ভারত সরকারের ‘জিরো টলারেন্স নীতি’র কথা উল্লেখ করে বিএসএফ মহাপরিচালক ওই সব আস্তানার (যদি থাকে) বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।
বৈশাখী নিউজ/ ফাজা