বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক সম্পর্কে অজানা ১২ তথ্য
জেফ বেজোস, বিল গেটসকে পেছনে ফেলে বিশ্বের ধনীর তালিকার শীর্ষে উঠে এসেছেন ইলন মাস্ক। স্পেস-এক্স এবং টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্কের মোট সম্পদের অর্থমূল্য ১৯১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ব্লুমবার্গ সূচক অনুযায়ী বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি এখন ইলন মাস্ক। গত তিন বছর ধরে শীর্ষ ধনী অ্যামাজনের প্রধান জেফ বেজোসকে পেছনে ফেলেছেন তিনি। গতবছর প্রায় আট গুণ বেড়েছে টেসলার শেয়ারের দাম। টেসলায় ২০ শতাংশ শেয়ার আছে মাস্কের। তার সম্পর্কে জেনে নিন অজানা ১২ তথ্য।
১. দক্ষিণ আফ্রিকার ছেলে
১৯৭১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেটোরিয়াতে এলন মাস্কের জন্ম। বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের পর হাইস্কুল শেষে মা আর ভাই-বোনকে নিয়ে কানাডায় চলে যান মাস্ক। সেখানে অন্টারিও’র একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও পরে যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিদ্যা আর অর্থনীতিতে মাস্টার্স করেন।
২. শেষ করেননি শিক্ষাজীবন
স্নাতকোত্তর শেষে পিএইচডি’র জন্য যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পান। কিন্তু অর্থ উপার্জনের নেশায় পিএচইডি অধরা থেকে যায়। বর্তমানে উদ্যোক্তা হিসেবে বিশ্বের তরুণদের আইকন তিনি।
৩. প্রতিভাধর
মাত্র দশ বছর বয়সে কমোডর ভিআইসি-২০ কম্পিউটার ব্যবহার করতে গিয়ে কম্পিউটারের প্রতি আগ্রহ জন্মায়। শেখেন কম্পিউটার প্রোগ্রামিং। ১২ বছর বয়সে বেসিক প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ ব্যবহার করে ব্লাস্টার নামে একটি ভিডিও গেম তৈরি করে ৫০০ ডলারে পিসি অ্যান্ড অফিস টেকনোলজি ম্যাগাজিনের কাছে বিক্রি করে দেন।
৪. জিপ-টু
উদ্যোক্তা হিসেবে ভাইকে সাথে নিয়ে তিনি জিপ-টু নামে একটি সফটওয়্যার কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৯৫ সালে এর পথচলা শুরু হলেও সফল হতে সময় লেগেছিল। সেসময় অ্যাপার্টমেন্টে থাকার খরচ না থাকায় অফিসেই ঘুমাতেন। ১৯৯৯ সালে কমপ্যাক কোম্পানির কাছে ২২ মিলিয়ন ডলারে জিপ-টু বিক্রি করেন তিনি।
৫. পেপ্যাল
পেপ্যাল নামের টাকা লেনদেনের একটি ডিজিটাল সার্ভিস চালু করে তিনি সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছে যান। ১৯৯৯ সালে তিনি এক্স.কম নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন, যা পরে পেপ্যালের সাথে একত্রিত হয়। ২০০২ সালে ই-বে’র কাছে পেপ্যাল ১.৫ বিলিয়ন ডলারে বিক্রি করে দেন। এই বিক্রি থেকে তার লাভ থাকে ১৬৫ মিলিয়ন ডলার।
৬. স্পেস এক্সের মঙ্গল অভিযান
রকেট নির্মাণপ্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স। গত ফেব্রুয়ারিতে স্পেসএক্সের তৈরি রকেট ফ্যালকন হেভির সফল উৎক্ষেপণের পর তুমুল আলোচিত হন মাস্ক। স্পেসএক্স থেকে ফ্যালকন ১ নামের রকেটটি উৎক্ষেপণ করতে গিয়ে বারবার ব্যর্থ হয়েছিলেন কিন্তু হাল ছাড়েননি। ২০৫০ সালের মধ্যে মঙ্গলে একটি পরিপূর্ণ শহর স্থাপনের পরিকল্পনা মাস্কের।
৭. টেসলা
২০০৩ সালে যখন এই কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত হয়, তখন এর সাথে ছিলেন না মাস্ক। পরবর্তীতে ২০০৪ সালে ইলন মাস্ক বোর্ড অব ডিরেক্টরসে যোগ দিলে কোম্পানিতে আমূল পরিবর্তন আসে। বর্তমানে বৈদ্যুতিক গাড়ি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানটি র প্রধান নির্বাহী এবং পণ্য প্রকৌশলী তিনি।
৮. দ্য বোরিং কোম্পানি
২০১২ সালে এই হাইপারলুপ প্রযুক্তির দৈনন্দিন ব্যবহারে সর্বপ্রথম আগ্রহ দেখান ইলন মাস্ক। হাইপারলুপ-এর জন্য সুরঙ্গ খুঁড়তে তিনি ‘দ্য বোরিং কোম্পানি’ নামক একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেছেন। সম্প্রতি ঘণ্টায় এক হাজার কিলোমিটার গতিবেগে চলা হাইপারলুপের প্রথম পরীক্ষা সফল হয়।
৯. বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট মহাকাশে পাঠায় ইলন মাস্কের কোম্পানি স্পেস এক্স। স্পেস-এক্স-এর সবচেয়ে আধুনিক ফ্যালকন রকেটের মাধ্যমে ২০১৮ সালের মে মাসে বঙ্গবন্ধু-১ টেলিকম স্যাটেলাইট মহাকাশে পাঠানো হয়।
১০. নিউরালিঙ্ক
২০১৬ সালে মাস্কের প্রতিষ্ঠিত এই কোম্পানিটি সম্প্রতি একটি ব্রেইন-মেশিন ইন্টারফেস প্রকাশ করেছে, যা মানুষের মস্তিষ্কের সাথে কম্পিউটার ও মোবাইল ফোন যুক্ত করবে।
১১. বেতন
কোম্পানির সিইও হিসেবে বছরে বেতন নেন মাত্র এক ডলার। নিজের অংশীদারিত্ব থাকা বিভিন্ন কোম্পানি থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশসহ আরও কিছু সুবিধা পান মাস্ক, যার বেশিরভাগই আসে টেসলা থেকে। বছরে ১ ডলার বেতন নেওয়াটা আসলে সিলিকন ভ্যালির একটা ট্রেন্ড।
১২. বিতর্কিত চরিত্র
বিতর্কের জন্ম দিতে ভালোবাসেন মাস্ক। টুইটারে নানা বিতর্কিত টুইট করেন। নিজের প্রতিষ্ঠানের সহযোগীদের সাথে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন নানা সময়। একবার কমেডিয়ান জো রোগান-এর সঙ্গে অংশ নেওয়া এক পডকাস্টে সরাসরি সম্প্রচারের সময় গাঁজা সেবন করেছিলেন। সূত্র: ডয়চে ভেলে
বৈশাখী নিউজ/ জেপা