পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিলল আড়াই কোটি টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার

আপডেট: January 23, 2021 |

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দান সিন্দুক থেকে এবার ২ কোটি ৩৮ লাখ ৫৫ হাজার ৫৪৫ টাকা মিলেছে। এটি এ যাবতকালের রেকর্ড পরিমাণ দান। এছাড়াও বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কারও মিলেছে অনেক।

আজ শনিবার সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মসজিদের ৮টি সিন্দুক খোলা হয়। প্রথমে দানসিন্দুক থেকে টাকা বস্তায় ভরা হয়। এবার সবচেয়ে বেশি ১৪ বস্তা টাকা হয়েছে। পরে বস্তা খুলে শুরু হয় টাকা গণনার কাজ। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ১৪টি বস্তার টাকা গুণতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মসজিদ মাদ্রাসার ৬০ জন ছাত্র-শিক্ষক ছাড়াও রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তারা অংশ নেন।

কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আব্দুল্লাহ আল মাসউদের তত্ত্বাবধানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শফিকুল ইসলাম, মো. উবায়দুর রহমান সাহেল, মো. জুলহাস হোসেন সৌরভ ও মো. ইব্রাহীম, পাগলা মসজিদের পেশ ইমাম মুফতী খলিলুর রহমান, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মুক্তিযোদ্ধা মো. শওকত উদ্দীন ভূঞা ও রূপালী ব্যংকের এজিএম অনুফ কুমার ভদ্র প্রমুখ টাকা গণনার কাজ তদারকি করেন।

এ সময় সিন্দুক খোলা কমিটির সদস্যরা ছাড়াও প্রশাসনের কর্মকর্তা, মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্যবৃন্দ ও সার্বক্ষণিক দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন। টাকা গণনার এলাহী কাণ্ড নিজ চোখে দেখতে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ মসজিদে ছুটে যান।

দান করা স্বর্ণালংকার

জানা যায়, প্রতিদিনই অসংখ্য মানুষ মসজিদটির দান সিন্দুকগুলোতে নগদ টাকা-পয়সা ছাড়াও স্বর্ণালঙ্কার দান করেন। এ ছাড়া গবাদিপশু, হাঁস-মুরগীসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্রও মসজিদটিতে দান করা হয়।

কথিত আছে, খাস নিয়তে এই মসজিদে দান করলে মনোবাসনা পূর্ণ হয়। সেজন্য দূর-দূরান্ত থেকেও অসংখ্য মানুষ এখানে দান করতে আসেন। গতবছর করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর পর লকডাউনের সময়ে মসজিদে মুসল্লিদের চলাচল সীমিত করে দেওয়া হয় এবং মহিলাদের প্রবেশাধিকার বন্ধ করে দেওয়া হয়। সে সময়ও মসজিদটিতে মানুষ দান অব্যাহত রাখেন।

টাকা গণনা কার্যক্রম তদারকির দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আব্দুল্লাহ আল মাসউদ জানান, ‘পাগলা মসজিদের দান সিন্দুক খুলে টাকাগুলো রূপালী ব্যাংকে জমা করা হয়েছে।’

কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে পাগলা মসজিদ অন্যতম। শহরের পশ্চিমে হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে মাত্র ১০ শতাংশ ভূমির ওপর এই মসজিদটি গড়ে উঠেছিল। সময়ের বিবর্তনে আজ এ মসজিদের পরিধির সঙ্গে বেড়েছে এর খ্যাতি। মসজিদকে কেন্দ্র করে একটি অত্যাধুনিক ধর্মীয় কমপ্লেক্স করা হয়েছে। সম্প্রসারিত করা হয়েছে মূল মসজিদ ভবন।

দেশের অন্যতম আয়কারী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃত মসজিদটিকে পাগলা মসজিদ ইসলামী কমপ্লেক্স নামকরণ করা হয়েছে। এ মসজিদের আয় দিয়ে কমপ্লেক্সের বিশাল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। মসজিদের আয় থেকে বিভিন্ন সেবামূলক খাতে অর্থ সাহায্য করা হয়।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর