মিয়ানমারে ধর্মঘটের ডাক বিক্ষোভকারীদের

আপডেট: February 22, 2021 |

গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত এবং অং সান সু চিসহ রাজনীতিকদের আটকের প্রতিবাদে সোমবার সাধারণ ধর্মঘট এবং রাস্তায় রাস্তায় আরও বিক্ষোভ দেখানোর ডাক দিয়েছে মিয়ানমারের অভ্যুত্থানবিরোধীরা।

এর আগে শুক্রবার মারা যায় আহত এক ছাত্রী। ফলে অসহযোগ আন্দোলন (সিডিএম) আরও জোরদার করে সেনাশাসন উৎখাতের লক্ষ্যে এ ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়।

১ ফেব্রুয়ারি ক্ষমতা দখলের পর ধীরে চললেও ক্রমশ চড়াও হচ্ছে জান্তা। সম্প্রতি প্রতিবাদ-বিক্ষোভকারীদের ওপর দমন-পীড়ন তীব্র করেছে। সেনা শাসনবিরোধী প্রতিবাদ-বিক্ষোভ সহ্য করা হবে না- এমন ইঙ্গিত দিচ্ছে সামরিক বাহিনী। শনিবার দেশজুড়ে বিভিন্ন স্থানে সেনা ও পুলিশের হামলায় চারজনের প্রাণহানি ও শতাধিক আহত হওয়ার ঘটনা তার প্রমাণ। বিপরীতে জনতাও ছেড়ে কথা বলতে রাজি নয়। সোমবার সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়ে নিজেদের অনড় অবস্থানের জানান দিয়েছে তারা। ধর্মঘট আহ্বানকারী অধিকারকর্মী ও বিভিন্ন ক্ষেত্রের তারকারা প্রতিটি নাগরিককে ধর্মঘটে যোগদানের আহ্বান জানিয়েছেন।

শেষ পর্যন্ত জান্তার বাধা উপেক্ষা করে সাধারণ ধর্মঘট অনুষ্ঠিত হলে এটি হবে ১৯৮৮ সালের ৮ আগস্টের পর মিয়ানমারের আধুনিক ইতিহাসে দেশজুড়ে দ্বিতীয় জনপ্রিয় বিপ্লব। ওই বিপ্লবে কয়েক লাখ মানুষ অংশ নিয়েছিলেন। আজকের ধর্মঘটে দেশের অফিস-আদালত, ব্যবসা-বাণিজ্য সব বন্ধ হয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। রবিবার মিয়ানমারের সবচেয়ে বড় খুচরা বিক্রেতা ‘সিটি মার্ট হোল্ডিং’ ও থাই পাইকারি ব্যবসা ‘মাকরো’ ইয়াঙ্গুন ও অন্যান্য শহরে সোমবার তাদের ব্যবসা বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। এ ছাড়া বেশিরভাগ দোকান ও মার্কেট মালিকরা শনিবার থেকেই তাদের গ্রাহকদের বলে দিচ্ছেন, সোমবার প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। এরই মধ্যে বিক্ষোভ তীব্র রূপ ধারণ করা মিয়ানমারের জন্য আজকের দিনসহ কয়েকদিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জান্তা ও জনগণ- দুপক্ষই নিজেদের অনড় অবস্থানে মরিয়া। জান্তার হুমকি উপেক্ষা করে রবিবারও দেশজুড়ে হাজারো মানুষ তীব্র প্রতিবাদ দেখিয়েছে। কিছু মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছেন ‘যত বেশি তোমরা দমন করবা, ততবেশি আমরা উঠে দাঁড়াব।’ এর মধ্য দিয়ে নিজেদের দৃঢ়সংকল্পের চিত্র তারা তুলে ধরছে।

১০ ফেব্র“য়ারি নেপিদোতে দাঙ্গা পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা করলে গুরুতর আহত হন ২০ বছর বয়সী ছাত্রী মা মিয়া থোয়েট খাইন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১৯ ফেব্র“য়ারি তিনি মারা যান। অভ্যুত্থানবিরোধী বিপ্লবে প্রথম নিহত তিনি। কিন্তু তার মৃত্যুর দায় অস্বীকার করেছে জান্তা।

যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাজ্য ও জার্মানি মিয়ানমারে সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছে; জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস মারাত্মক শক্তি প্রয়োগকে অগ্রহণযোগ্য অ্যাখ্যা দিয়েছেন।

বৈশাখী নিউজজেপা

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর