কবি শঙ্খ ঘোষ আর নেই

আপডেট: April 21, 2021 |

পশ্চিমবঙ্গের প্রখ্যাত কবি শঙ্খ ঘোষ আর নেই। শক্তি-সুনীল-শঙ্খ-উৎপল-বিনয়, জীবনানন্দ পরবর্তী বাংলা কবিতার এই পঞ্চপাণ্ডবের বাকি চারজন চলে গিয়েছিলেন আগেই। ২১ এপ্রিল বুধবার সকালে ৮৯ বছর বয়সে চিরপ্রস্থানের এ যাত্রায় শামিল হলেন শঙ্খ ঘোষ।

গায়ে জ্বর থাকায়, গত সপ্তাহে করোনা পরীক্ষা করিয়েছিলেন কবি। ১৪ এপ্রিল বিকালে রিপোর্ট এলে জানা যায়, তিনি সংক্রমিত হয়েছেন। এমনিতেই বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন কবি, যা শারীরিকভাবে দুর্বল করে দিয়েছিল তাকে। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে, এ বছর জানুয়ারি মাসে হাসপাতালেও ভর্তি করতে হয় তাকে।

কোভিড সংক্রমণ ধরা পরার পর ঝুঁকি না নিয়ে বাড়িতেই নিভৃতবাসে ছিলেন। কিন্তু মঙ্গলবার রাতে আচমকা তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। বুধবার সকালে তাকে ভেন্টিলেটরে দেওয়ার চেষ্টাও হয়। কিন্তু চিকিৎসকদের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে চিরতরে চলে গেলেন তিনি।

দীর্ঘ কর্মজীবনে নানা ভূমিকায় দেখা গেছে শঙ্খ ঘোষকে। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি অব আইওয়া এবং বিশ্বভারতীর মতো প্রতিষ্ঠানে অধ্যাপনা করেছেন। ১৯৯২ সালে তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসরগ্রহণ করেন।

বছর দুয়েক আগে ‘মাটি’ নামের একটি কবিতায় মোদি সরকারের মুসলিমবিদ্বেষী নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিলেন তিনি।

সাহিত্যজীবনে একাধিক সম্মানে সম্মানিত হয়েছেন শঙ্খ ঘোষ। ১৯৭৭ সালে ‘বাবরের প্রার্থনা’ কাব্যগ্রন্থটির জন্য তিনি ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কার ‘সাহিত্য অকাদেমি’ পুরস্কার পান। ১৯৯৯ সালে কন্নড় ভাষা থেকে বাংলায় ‘রক্তকল্যাণ’ নাটকটি অনুবাদ করে ফের সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার পান তিনি।

এ ছাড়াও রবীন্দ্র পুরস্কার, সরস্বতী সম্মান, জ্ঞানপীঠ পুরস্কার পেয়েছেন। ২০১১ সালে তাকে পদ্মভূষণে সম্মানিত করে ভারতের তৎকালীন সরকার।

শঙ্খ ঘোষ এর আসল নাম চিত্তপ্রিয় ঘোষ। তার পিতা মনীন্দ্রকুমার ঘোষ এবং মাতা অমলা ঘোষ। ১৯৩২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের বর্তমান চাঁদপুর জেলায় তার জন্ম। বংশানুক্রমিকভাবে পৈত্রিক বাড়ি বরিশালের বানারিপাড়ায়। তবে শঙ্খ ঘোষ বড় হয়েছেন পাবনায়।

পিতার কর্মস্থল হওয়ায় তিনি বেশ কয়েক বছর পাবনায় অবস্থান করেন এবং সেখানকার চন্দ্রপ্রভা বিদ্যাপীঠ থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। ১৯৫১ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বাংলায় কলা বিভাগে স্নাতক এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। তথ্যসূত্র : আনন্দবাজার

বৈশাখী নিউজজেপা

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর