সিরিয়ার নির্বাচনে জিতলেন প্রেসিডেন্ট আসাদ, বিরোধীরা বলছে প্রহসন

আপডেট: May 28, 2021 |

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে চতুর্থ মেয়াদে ৯৫ শতাংশ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন বাশার আল আসাদ। তবে তার বিরোধীরা এ নির্বাচনকে ‘প্রহসন’ আখ্যায়িত করে প্রত্যাখ্যান করেছেন। এ খবর বিবিসি বাংলা’র।

দেশটির পার্লামেন্টের স্পিকার নির্বাচনের যে ফল ঘোষণা করেন, তাতে দেখা যাচ্ছে ৯৫.১ শতাংশ ভোট পেয়েছেন আসাদ। আর নির্বাচনে ভোটদানের হার হল ৭৮.৬ শতাংশ।

তার দুই প্রতিদ্বন্দ্বী আব্দুল্লাহ সালৌম আব্দুল্লাহ ও মাহমুদ আহমেদ মারি পেয়েছেন যথাক্রমে ১.৫ শতাংশ ও ৩.৩ শতাংশ ভোট। সিরিয়ার বিরোধী দলগুলো এটিকে ‘প্রহসনের নির্বাচন’ আখ্যায়িত করেছেন। আর যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলো বলেছে, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু ছিল না।

গত বুধবার (২৬ মে) ভোট দিয়ে প্রেসিডেন্ট আসাদ পশ্চিমাদের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, পশ্চিমাদের মতামত ‘শূন্য’ হিসেবেই বিবেচনা করা হবে।

নির্বাচনের আগে এক বিবৃতিতে ফ্রান্স, জার্মানি, ইটালি, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এ নির্বাচনকে অবৈধ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তারা বলেছেন, জাতিসংঘের তত্ত্বাবধান ছাড়া এটি অবাধও নয়, সুষ্ঠুও নয়।

এবারের নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হয়েছে মূলত সরকারি নিয়ন্ত্রিত এলাকায় এবং বিদেশে সিরিয় কিছু দূতাবাসে ভোটগ্রহণ করা হয়েছে। তবে নির্বাচনের বিরুদ্ধে বড় ধরণের প্রতিবাদ হয়েছে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইদলিব প্রদেশে।

দেশটির নির্বাসিত বিরোধী নেতারা এ নির্বাচনকে ‘প্রহসন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। সিরিয়ান নেগোসিয়েশন কমিশনের মুখপাত্র ইয়াহইয়া আল আরিদি একে সিরিয় জনগণের অবমাননা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করতে রাশিয়া ও ইরানের সহযোগিতায় এটি সরকারি একটি সিদ্ধান্ত। এটা স্বৈরতন্ত্রকেই চালু রাখার একটি প্রক্রিয়া।’

২০১৪ সালে সেখানে সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যা বিরোধীরা বর্জন করেছিল। এরপর থেকেই যুদ্ধ পরিস্থিতি মিস্টার আসাদের অনুকূলে যেতে থাকে এবং রাশিয়ার বিমান হামলা আর ইরানের সামরিক সহযোগিতায় বড় শহরগুলোতে সরকারি বাহিনী আবারও কর্তৃত্ব স্থাপনে সক্ষম হয়।

৫৫ বছর বয়সী বাশার আল আসাদ ২০০০ সাল থেকে দেশটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার বাবা হাফিজ আল আসাদ প্রায় পঁচিশ বছর সিরিয়া শাসন করেছেন। তারপর দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি।

প্রায় দশ বছরের গৃহযুদ্ধে সিরিয়া এখন বিপর্যস্ত। ২০১১ সালে আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে একটি শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচিতে সরকারি বাহিনীর রক্তক্ষয়ী পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে এ গৃহযুদ্ধের সূচনা হয়েছিল। এ লড়াইয়ে প্রায় তিন লাখ ৮৮ হাজার মানুষ মারা গেছে এবং দেশটির প্রায় অর্ধেক মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছে। এর মধ্যে বিদেশে শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন প্রায় ৬০ লাখ মানুষ।

বৈশাখী নিউজ/ জেপা

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর