কে এই ইলন মাস্ক?


মার্কিন বেসরকারী রকেট নির্মাণপ্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক। টেসলা, পে-পালসহ আরও বেশ কয়েকটি বড় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িয়ে আছে তার নাম। গত ফেব্রুয়ারিতে স্পেসএক্সের তৈরি রকেট ফ্যালকন হেভির সফল উৎক্ষেপণের পর তুমুল আলোচিত হয়েছেন তিনি।
বর্তমান প্রযুক্তি বিশ্ব কিংবা কর্পোরেট জগত- যেটাই বলেন, ইলন মাস্ক এর মতো প্রতিভাধর ব্যক্তিত্ব খুঁজে পাওয়া মুশকিল। তিনি শুধু সফল ব্যবসায়ীই নন, বরং হালের তরুণদের আইকনে পরিণত হয়েছেন। অনেকে হয়ত টেসলা ও স্পেসএক্স এর কল্যাণে এলন মাস্কের নাম জেনে থাকবেন। কিন্তু টেসলা এবং স্পেসএক্স এর বাইরেও তার আরো অসাধারণ কিছু উদ্যোগ রয়েছে।
বিশ্বের অন্যতম এই ধনী ব্যক্তিটি নিজের কোম্পানির সিইও হিসেবে বছরে মাত্র এক ডলার করে বেতন নেন! কখনো আবার তাও নেন না! তাহলে তিনি টাকাপয়সা কোথায় পান? অবাক হচ্ছেন? নিজের অংশীদারিত্ব থাকা বিভিন্ন কোম্পানি থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশ সহ আরও কিছু সুবিধা পান ইলন মাস্ক, যার বেশিরভাগই আসে টেসলা থেকে। বছরে ১ ডলার বেতন নেয়াটা আসলে সিলিকন ভ্যালির একটা ট্রেন্ড, যেখানে কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতারা সরাসরি বেতন না নিয়ে স্টক ও অন্যান্য খাত থেকে সুযোগ সুবিধা নিয়ে থাকেন। স্টিভ জবস ও মার্ক জাকারবার্গেরও এমন রেকর্ড আছে।
মাত্র ১২ বছর বয়সে এলন মাস্ক প্রোগ্রামিং শিখেন এবং সে জ্ঞান কাজে লাগিয়ে তখন একটি ভিডিও গেম তৈরী করেন। মজার ব্যাপার হলো তিনি সেটি ৫০০ ডলারে বিক্রি করতেও সমর্থ হয়েছিলেন।
দক্ষিন আফ্রিকার প্রিটোরিয়ায় জন্ম নেয়া মার্কিন উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী ইলন মাস্ক এর পুরো নাম ইলন ‘রীভ’ মাস্ক। তার জন্ম হয়েছিল ১৯৭১ সালের ২৮শে জুন। ১৯৯৯ সালে এক্স ডট কম নামে তাঁর প্রতিষ্ঠিত অনলাইন ভিত্তিক অর্থ লেনদেনের মাধ্যমটিই বর্তমানে সারাবিশ্বে তুমুল জনপ্রিয় পে-পাল। ২০০২ সালে তিনি স্পেস এক্স ও ২০০৩ সালে টেসলা মোটরস প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০২ সালে তিনি মার্কিন নাগরিকত্ব লাভ করেন।
মাস্ক তার জীবনের দ্বিতীয় দশকের শেষ দিকে কমপ্যাক্ট কম্পিউটার্সের একটি শাখার কাছে তার প্রথম কোম্পানী “জিপ টু” বিক্রি করে প্রথমবারের মত মাল্টিমিলিয়নেয়ারের খাতায় নাম লেখান। ২০১২ সালের মে মাসে তিনি শিরোনামে উঠে আসেন যখন তার কোম্পানী স্পেস এক্স প্রথমবারের মত আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে অর্থের বিনিময়ে ভ্রমনেচ্ছুক যাত্রী প্রেরণ করে। ২০১৬ সালে সোলার সিটি কিনে নেয়ার মধ্যদিয়ে তিনি তার অর্জনের পাল্লা আরও ভারী করেন এবং ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথম দিকে একজন উপদেষ্টা হওয়ার প্রস্তাব গ্রহণ করার মাধ্যমে ব্যবসায়িক জগতের একজন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি হিসেবে নিজের অবস্থান পাকা করেন।
ফোর্বস ম্যাগাজিনে প্রকাশিত ডিসেম্বর ২০১৭ সালের হিসেব অনুযায়ী মাস্কের মোট সম্পদের পরিমান ২০.২ বিলিয়ন (২২০০ কোটি) মার্কিন ডলার। ২০০২ সালে পে-পাল বিক্রি করার মধ্য দিয়ে তিনি প্রথমবারের মত বিলিয়ন ডলার আয় করেন।