বেলি ড্যান্স করায় চাকরি হারালেন, স্বামীও দিলেন তালাক!

আপডেট: January 13, 2022 |

বেলি ডান্সের উৎপত্তি ফ্যারাওদের যুগে। কিন্তু এখনও মিশরের সমাজে বেশির ভাগ নারীকে জনসমক্ষে বেলি ডান্সের সময় তাচ্ছিল্যের চোখেই দেখা হয়। বেলি-ডান্সের জন্য সমাজের মানদণ্ডে মাপার রীতি নতুন নয়। এইবার সেই মাপকাঠিতে মাপা হল দেশটির স্কুল শিক্ষিকা আয়া ইউসুফকে।

দোষ হিসেবে জানা যায়, নীল নদে নৌকার উপরে একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে বেলি ডান্স করেন আয়া। আর এই নাচের ভিডিও তার অনুমতি ছাড়াই তার এক সহকর্মী রেকর্ড করে ফেলেন।

ভিডিওতে পুরুষ সহকর্মীদের পাশাপাশিই নাচতে দেখা যায় তাকে। আর এর মাসুল হিসেবেই চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয় তাকে। পাশাপাশি তার স্বামীও তাকে ‘তালাক’ দিয়ে ঘরছাড়া করেন।

ভিডিওতে দেখা যায়, আয়া ইসলামিক স্কার্ফ এবং একটি দীর্ঘ-হাতা পোশাক পরে নাচছেন। গত সপ্তাহে আরব নেট মাধ্যমে এই ভিডিও ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়ার পরে এটি মিশরীয় রক্ষণশীলদের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।

নেট মাধ্যমে সমালোচকরা দাবি করেছেন যে, তার এই আচরণ অত্যন্ত লজ্জাজনক। মিশরে শিক্ষা নিম্নস্তরে পৌঁছেছে বলেও একজন নেট মাধ্যমে মন্তব্য করেছেন। এর পরেই আয়াকে স্কুল থেকে বরখাস্ত করা হয়।

কিন্তু আয়ার অভিযোগ, তিনি শিক্ষার্থীদের সামনে নাচেননি। তিনি একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে আনন্দ প্রকাশ করতে নেচেছিলেন। একই সঙ্গে এই ভিডিওটি চিত্রায়িত করা ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করার পরিকল্পনা করেছেন বলেও তিনি জানিয়েছেন।

যদিও এই ঘটনার পরে সারাজীবন নাচ না করার প্রতিজ্ঞা করেন তিনি। এমনকি তিনি আত্মহত্যার কথা ভেবেছিলেন বলেও সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান।

তবে এই পরিস্থিতিতে আয়ার পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন মিশরে নারী অধিকার কর্মীরা। তারা জোর দিয়ে বলেছেন যে, আয়া কিছু ভুল করেননি এবং তিনি সমাজের গোঁড়ামির শিকার।

ইজিপ্সিয়ান সেন্টার ফর উইমেনস রাইটসের প্রধান, ডঃ নিহাদ আবু কুমসান আয়াকে তার অফিসে চাকরির প্রস্তাব দিয়েছেন এবং বেআইনিভাবে বরখাস্ত করার বিরুদ্ধে আইনি অভিযোগ দায়ের করতেও সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন। স্থানীয় কর্তৃপক্ষও আয়াকে নতুন একটি স্কুলে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ করেছেন।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

বৈশাখী নিউজ/ ফাজা

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর