নদী রক্ষায় অগ্রগতি নেই: বগুড়ায় দখল আর দূষণে করতোয়া নদী


শাহজাহান আলী, বগুড়া জেলা প্রতিনিধি: বগুড়ায় দখল আর দুষণে করতোযা নদী,নদী রক্ষায় নেই কোনো অগ্রগতি। বগুড়া শহরে বরে যাওয়া একমাত্র নদী করতোয়া এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে।
প্রাচীন এই নদীর ব্যপক বিস্তৃত বর্তমানে দখল,দূষণ আর অব্যবস্হাপনার কারণে দিন দিন সংকীর্ণ হয়ে আসছে নদীটি। বছরের বেশিভাগ সময় পানি প্রবাহ না থাকায় সহজে দখল হচ্ছে নদীর দুই তীর।
ক্ষমতাশীলদের দাপটের পাশাপাশি আইন না মানায় করতোয় নদী এখন প্রায় মৃত। নদীর দুই তীর ক্ষমতাসীনদের স্হাপনা ও বসতির পাশাপাশি বিভিন্নভাবে জায়গা দখল করা হচ্ছে।
এছাড়াও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ(টিএমএসএস) করতোয়া নদীর বেশিভাগ অংশই দখল করে নানা ধরণের স্হাপনা তৈরি করছেন।
করতোয়া নদী রক্ষার্থে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) বগুড়া ও গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপারসহ ২০ জনকে বিবাদি করে ২০১৫ সালে হাইকোর্টে একটি রিট করেন।
ওই বছরই ২২ জুন হাইকোর্টের বিচারপতি মির্জা হোসেন হায়দার ও বিচারপতি একেএম জহুরুল হক এর সমম্বয়ে একটি ডিভিশন বেঞ্চ এই আদেশ দেন যে, বগুড়া ও গাইবান্ধা জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া করতোয়া নদীর ১১৬ কিলোমিটার পানি প্রবাহ এলাকা ও সীমানা নির্ধারণ,গোবিন্দগঞ্জের খলশী সুইচগেটসহ অন্যান্য অবৈধ দখল উচ্ছেদ করা, নদীটির পানি প্রবাহ আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা ও সকল উৎস থেকে নদীর বর্জ্য না ফেলা।
এরপরই বগুড়া জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে কয়েকবার অবৈধ স্হাপনা উচ্ছেদ শুরু করলেও তা বেশি দূর পর্যন্ত এগোতে পারেনি।
অবৈধ দখলদাররা এতটাই শক্তিশালী যে, এই উচ্ছেদ অভিযান সেখানেই বন্ধ করে দেন। মাঝে মাঝে বিভিন্ন জরিপ আর সীমানা পিলার বসানোর মত কিছু কাজ চোখে পড়লেও দৃশ্যমান কিছুই নেই।
হাইকোর্টের আদেশের পর থেকে কাজের কোন অগ্রগতি না থাকায় সাধারণ মানুষের পাশাপাশি পরিবেশবিদরাও এখন এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রযেছেন।
২০১৯ সালের ১৬ই ফেব্রুয়ারি বগুড়া সার্কিট হাউজে এক আলোচনা সভায় জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বগুড়া জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দিয়েছিলেন,করতোয়া নদীর দুই তীরে থাকা অবৈধ দখলদারদের তালিকা তৈরি করতে।
এই আদেশের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক ৩৮ জন ব্যক্তির নামে একটি তালিকা তৈরি করেন। কিন্তু পরবর্তীতে ওই সব ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
বিভিন্ন পরিবেশবাদি সংগঠনগুলো জানান, তালিকাভুক্ত ছাড়াও আরো ব্যক্তি আছেন যারা এ নদী দখল করে আছেন।