দক্ষিণ চীন সাগরের ভাসমান ব্যারিকেড অপসারণ করেছে ফিলিপাইন কোস্ট গার্ড

আপডেট: September 25, 2023 |
boishakhinews 13
print news

দক্ষিণ চীন সাগরের বিতর্কিত এলাকা থেকে একটি ভাসমান ব্যারিকেড অপসারণ করা হয়েছে বলে ফিলিপাইন কোস্ট গার্ড সোমবার জানিয়েছে। ফিলিপিনোদের মাছ ধরার ঐতিহ্যগত জায়গায় প্রবেশ বন্ধ করতে ব্যারিকেডটি মোতায়েন করা হয়েছিল বলে তারা জানিয়েছিল।

ফিলিপাইনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এডুয়ার্ডো আনো দক্ষিণ চীন সাগরের স্কারবোরো শোলে চীনা উপকূলরক্ষীদের স্থাপন করা ব্যারিকেড অপসারণের জন্য ‘যথাযথ সব পদক্ষেপ’ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর বিবৃতিটি জারি হয়। তবে ফিলিপাইনের বিবৃতি থেকে স্পষ্ট নয় যে পানি থেকে সম্পূর্ণ ব্যারিকেড অপসারণ করা হয়েছে কি না।
ফিলিপাইন কোস্ট গার্ড প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, ডুবুরিদের মতো পোশাক পরা একজন ব্যক্তি ছুরি ব্যবহার করে সাদা বয়াগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত একটি দড়ি কাটছেন। আরেকটি ভিডিওতে দেখানো হয়েছে, একটি নোঙরকে পানি থেকে কাঠের নৌকায় তোলা হচ্ছে।

কোস্ট গার্ড ঘোষণা করেছে, ‘প্রেসিডেন্টের নির্দেশ মেনে’ তারা ‘সফলভাবে’ বাধা অপসারণ করেছে। তারা আরো বলেছে, ‘ব্যারিকেড নৌচলাচলের জন্য বিপদ সৃষ্টি করেছে।
এটি আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।’
গত সপ্তাহে দক্ষিণ চীন সাগরের স্কারবোরো শোলের প্রবেশপথজুড়ে একটি ৩০০ মিটার দীর্ঘ ভাসমান ব্যারিকেড পাওয়া যায়। ভাসমান ব্যারিকেড মাছ ধরার নৌকাগুলোকে শোলের অগভীর পানিতে প্রবেশে বাধা দিচ্ছে, যেখানে মাছ বেশি থাকে। চীন ২০১২ সালে ফিলিপাইনের কাছ থেকে স্কারবোরো শোল দখল করে এবং মাছ ধরার জায়গায় টহল দিতে উপকূলরক্ষী ও অন্যান্য জাহাজ মোতায়েন করে।

এর আগে ফিলিপাইনের কর্মকর্তারা বুধবার ব্যুরো অব ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকুয়াটিক রিসোর্সেসের জাহাজ শোলে পৌঁছনোর কিছুক্ষণ আগে চীনা উপকূলরক্ষীর বিরুদ্ধে ব্যারিকেড স্থাপনের জন্য অভিযুক্ত করেছিলেন। এএফপিসহ বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমের কর্মীরা ওই জাহাজে ছিলেন। তারাও ওই ব্যারিকেড দেখেছেন।

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এডুয়ার্ডো আনো সোমবার এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, ‘আমরা ব্যারিকেড অপসারণ এবং জেলেদের অধিকার রক্ষায় সব উপযুক্ত পদক্ষেপ নেব।’

আনো বলেন, ফিলিপাইন ব্যারিকেড স্থাপনের নিন্দা করে।

তিনি যুক্তি দেন, ‘এ ধরনের পদক্ষেপ আমাদের জেলেদের মাছ ধরার ঐতিহ্যগত অধিকার লঙ্ঘন করে, যাদের অধিকার…২০১৬ সালের সালিসি রায়ে নিশ্চিত করা হয়েছে।’
এদিকে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন সোমবার পাল্টা আঘাত করে বলেছেন, স্কারবোরো শোল ‘চীনের অন্তর্নিহিত অংশ’ এবং এটি ও এর আশপাশের পানির ওপর চীনের ‘অবিসংবাদিত সার্বভৌমত্ব’ রয়েছে।

স্কারবোরো শোল ফিলিপাইনের প্রধান দ্বীপ লুজন থেকে ২৪০ কিলোমিটার পশ্চিমে ও চীনের হাইনান থেকে প্রায় ৯০০ কিলোমিটার দূরে।

১৯৮২ সালের সাগরের আইন সম্পর্কিত জাতিসংঘের কনভেনশনের অধীনে, তীরের প্রায় ২০০ নটিক্যাল মাইলের (৩৭০ কিলোমিটার) মধ্যে ওই দেশের প্রাকৃতিক সম্পদের এখতিয়ার রয়েছে। চীন ওই আলোচনায় সহায়তা করেছিল। কিন্তু দক্ষিণ চীন সাগরের প্রায় পুরো অংশের ওপর চীন সার্বভৌমত্ব দাবি করে। ফিলিপাইনসহ অন্য কয়েকটি দেশও সেই অংশের কিছু জায়গা তাদের বলে দাবি করে। বেইজিং ২০১৬ সালের আন্তর্জাতিক আদালতের রায়কেও উপেক্ষা করেছে।

ফিলিপাইনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনো বিশদ বিবরণ ছাড়াই সোমবার বলেছিল, ‘আমাদের দেশের সার্বভৌমত্ব ও আমাদের জেলেদের জীবিকা রক্ষার জন্য উপযুক্ত সব ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

ফিলিপিনো জেলেরা বলছেন, স্কারবোরো শোলে চীনের কর্মকাণ্ড তাদের আয়ের মূল উৎস ও ঝড়ের সময় নিরাপদে আশ্রয় নেওয়ার জায়গা কেড়ে নিচ্ছে।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর