সিংগাইরে থামছে না অবৈধ ড্রেজার দিয়ে মাটি উত্তোলন

আপডেট: October 11, 2023 |
inbound6074731164770523791
print news

সোহরাব হোসেন, সিংগাইর প্রতিনিধি : মানিকগঞ্জের সিংগাইরে প্রশাসনের তোয়াক্কা না করে দীর্ঘদিন যাবত অবৈধভাবে ড্রেজার লাগিয়ে মাটি উত্তোলন কোনো ভাবেই থামছে না ।

এতে যেমন বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি,আশপাশের বাড়ি-ঘর ও রাস্তাঘাট। সেই সাথে স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ও উঠেছে নানা প্রশ্ন ।

উপজেলার বলধারা ইউনিয়নের খোলাপাড়া এলাকায় একাধিকস্থানে অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে প্রতিনিয়ত কৃষিজমি, পুকুর ও বসতবাড়ি সংলগ্ন জায়গা থেকে মাটি উত্তোলন করছেন স্থানীয় প্রভাবশালী মাটি ব্যবসায়ী আব্দুল কুদ্দুস কোম্পানী ও তার লোকজন।

এদের ভয়ে আশ-পাশের ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকেরা জিম্মি হয়ে পড়েছেন।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বেশীরভাগ ক্ষেত্রে এসব জেনেও না জানার ভান করছেন।

কখনো ঘটনাস্থলে গিয়ে ড্রেজার মেশিন বন্ধ করে পাইপ খুলে দিয়েই দায় সারেন তারা।

পরক্ষণেই আবারো চালু করা হয়। মাঝে-মধ্যে দিনে বন্ধ রাখলেও চলে সন্ধ্যা থেকে ভোর রাত পর্যন্ত।

সরেজমিন মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) বিকেলে দেখা যায়, খোলাপাড়া গ্রামের হায়েত আলীর বাড়ির পেছনেই গত দু’ সপ্তাহ ধরে অবাধে চলছে ড্রেজার মেশিন দিয়ে মাটি উত্তোলন। ভরাট করা হচ্ছে পার্শ্ববর্তী জায়গা।

পরবর্তীতে সুবিধামতো বিক্রি করে থাকে এসব মাটি। ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটায় হুমকির মুখে ফসলি জমি ও তৎসংলগ্ন বসতবাড়ি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই এলাকার একাধিক কৃষক অভিযোগ করে বলেন, ড্রেজার বসিয়ে গভীর করে মাটি কাটার কারণে আমাদের ফসলি জমি ড্রেজিংয়ের গর্তে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

কেউ যদি জমি দিতে না চায় তাহলে ভয়ভীতি ও হুমকি-ধমকি দিয়ে জোর করেই সেখান থেকে মাটি কেটে নেয় ভূমি খেঁকোরা।

শেষ পর্যন্ত ড্রেজার মালিকদের কাছেই কম মূল্যে জমি বিক্রি করতে বাধ্য হন সাধারণ কৃষক। এতে অভিযোগ তো দুরের কথা তারা টু শব্দ পর্যন্ত করতে সাহস পান না চক্রের ভয়ে ।

সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের লোকজন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসলেও ড্রেজার মেশিন বন্ধ রাখার কথা বলে চলে যান।

পরক্ষণেই তারা আবারো মাটি কাটার উৎসবে মেতে ওঠেন। স্থানীয় সংবাদকর্মীদের কাছে ভুক্তভোগীরা নিজেদের অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরেন।

অভিযুক্ত ড্রেজার মালিক আব্দুল কুদ্দুস কোম্পানী বলেন, আমার পুকুর থেকে ড্রেজার দিয়ে মাটি কেটে পাশের জমিতে ফেলছি।

চার- পাঁচ ফুট গভীর করে কাটলে পার্শ্ববর্তী জমির কোনো ক্ষতি হয় না। তাছাড়া বসতবাড়ি থেকে প্রায় একশ শতাংশ দুরে ড্রেজার বসানো হয়েছে।

আরেক ড্রেজার মালিক কুদ্দুস কোম্পানীর সহোদর সিরাজুল ইসলাম বলেন, থানায় অবজেকশন জানানোর কথা শুনে আমার ক্ষতি হলেও ড্রেজার বন্ধ করে পাইপ খুলে ফেলেছি।

দীর্ঘদিন যাবত জমিতে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন লাগিয়ে অবাধে মাটি কাটার বিষয়টি প্রশাসনের নিরব ভূমিকায় মূলহোতারা থাকছেন ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। এতে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে তাদের কর্মযজ্ঞ ।

বলধারা ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, আমি স্যারদের সাথে কথা বলে এক্ষুনি ব্যবস্থা নিচ্ছি।

এ ব্যাপারে সিংগাইর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আব্দুল কাইয়ুম খান বলেন, গত তিন দিন আগে ওই এলাকা থেকে একটি অবৈধ ড্রেজার ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। অপরটির বিরুদ্ধে ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর