ফরিদপুরে ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা

আপডেট: April 27, 2024 |

ফরিদপুর প্রতিনিধি: ফরিদপুরের মধুখালীর পঞ্চপল্লীতে মন্দিরে আগুন দেওয়ার গুজব রটিয়ে পিটিয়ে ও ইট দিয়ে মাথা থেতলিয়ে দুই ভাই আরশাদুল ও আশরাফুলকে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনায় ডুমাইন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহ মো. আসাদুজ্জামান তপন এবং ১ নং ওয়ার্ডের মেম্বার অজিত কুমার বিশ্বাসের সম্পৃক্ততার যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ পাওয়া যাওয়ায় তাদের ধরিয়ে দিতে পারলে বা কোন প্রকার তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করলে আর্থিক পুরস্কারের দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে মধুখালীর ঘটনা নিয়ে প্রেস ব্রিফিং ‌প্রেস ব্রিফিংয়ে জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার এ ঘোষণা দেন।

সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রশাসক (ডিসি) কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, ডুমাইন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান একজন পেশাগত অপরাধী। ইতিমধ্যে সে দুইবার বরখাস্ত হয়েছে।

একবার ইউএনওর উপরে হামলার ঘটনায় এবং আরেকবার টিসিবির কার্ড দুর্নীতির কারণে তাকে বহিস্কার করা হয়। দুইবারই উচ্চ আদালতে আপিল করে তিনি পদ ফিরে পান।
চেয়ারম্যান ও মেম্বার তারা এখন পলাতক রয়েছে।

তাদের ধরতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করছেন। চেয়ারম্যান আত্মগোপনে যাওয়ার আগে মোবাইল ফোন রেখে গেছেন।

এরই মধ্যে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের প্রথমে মাগুরায় সনাক্ত করে। সেখানে ধরতে গেলে তারা পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে যশোরে তাদের সনাক্ত করলেও সেখান থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় তারা।

জেলা প্রশাসক আরো বলেন, এরই মধ্যে এয়ারপোর্ট বর্ডার রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদের বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট জারি করে, তারা যাতে কোন ভাবে দেশ ত্যাগ করতে না পারে সে বিষয়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে বলা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক এ সময় বলেন, এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে সকলের সহযোগিতা চাই।

তাদের ধরিয়ে দেওয়ার জন্য আমরা সকলের সহযোগিতা চাই। কেউ যদি অন্যান্য আসামিদের অবস্থানও জানাতে পারেন তাহলে তাদেরও উপযুক্ত পুরস্কার দেওয়া হবে।

এ সময় তিনি আরো জানান, এ ঘটনার তদন্তে গঠিত কমিটির অনুরোধের প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটির সময় আরও ৭দিন বৃদ্ধি করা হয়েছে।

তিনি নিহতদের পরিবারকে ধর্মমন্ত্রী এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রীর পক্ষ থেকে নগদ আর্থিক সহায়তা করা ছাড়াও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহায়তার তথ্য তুলে ধরেন এবং এ ঘটনায় আহতদের চিকিৎসা ও তাদের পরিবারকে জীবিকা নির্বাহের জন্য খাদ্য সামগ্রী প্রদান ও কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানান।

তাই এ ঘটনাকে নিয়ে যাতে কোনো মহল বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনের অপচেষ্টা চালাতে না পারে সেজন্য সকলের সহযোগিতা চান।

এ ঘটনাকে যাতে সাম্প্রদায়িক উস্কানির কাজে কেউ ব্যবহার করতে না পারে সেদিকেও সকলকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানান।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় নিরপরাধ ব্যক্তিদের ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। কোনো বাড়িতে আক্রমণ করে পরিস্থিতি ভিন্নখাতে প্রবাহের চেষ্টা চলছে।

এজন্য আসামিরা গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত এবং তদন্ত রিপোর্ট না দেওয়া পর্যন্ত মধুখালীতে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়ন থাকবে বলেও জানান।

সংবাদ সম্মেলনে এ-সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক ইয়াসিন কবির, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রামানন্দ পাল, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক চৌধুরী রওশন আলী, ফরিদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তামান্না তাসনীম, ফরিদপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি কবিরুল ইসলাম সিদ্দিকী, সহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা বৃন্দ এবং ‌প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ‌ সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর