এয়ারবাস থেকেই উড়োজাহাজ কিনছে বিমান, ইঙ্গিত বিদায়ী সিইওর

আপডেট: May 29, 2024 |
inbound9101691607656706004
print news

শেষ পর্যন্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এয়ারবাসের উড়োজাহাজ কিনতে যাচ্ছে।

এয়ারবাসের দেওয়া প্রস্তাব মূল্যায়ন শেষে বিমানের পরিচালনা পর্ষদের নির্দেশনা অনুযায়ী সবকিছু চূড়ান্ত করছে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন্স। বিমানের বিদায়ী ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিউল আজিম সেই ইঙ্গিত দিয়েছেন।

বুধবার (২৯ মে) সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময়ে তিনি বলেন, এয়ারবাস চারটি উড়োজাহাজ বিক্রির প্রস্তাব পাঠায়। যদিও এর আগে তারা দুটি কার্গো উড়োজাহাজ বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছিল।

কিন্তু আমাদের মনে হয়েছে আপাতত আমাদের কার্গো উড়োজাহাজের দরকার নেই। এরপর আমাদের যাত্রীবাহী উড়োজাহাজের বহর বাড়ানোর ইচ্ছার কথা জানাই।

যে চারটি যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ বিক্রির প্রস্তাব পাঠানো হয় তার আগের প্রস্তাবের চেয়ে ভালো ছিল। ওই প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটি থেকে বিমানের পরিচালনা পর্ষদে যায় (সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম)।

পর্ষদ এ বিষয়ে এগিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়ে তা নেগোসিয়েশন কমিটিতে পাঠিয়েছে।

তিনি বলেন, এয়ারবাসের প্রস্তুাবগুলোকে আমরা এখন গুরুত্ব দিচ্ছি। কারণ আমাদের বহরে সব বড় উড়োজাহাজগুলো বোয়িংয়ের।

এজন্য কিছু বৈচিত্র্য এবং নতুন উড়োজাহাজ থাকলে যাত্রীরাও পছন্দ করবে। তাছাড়া কোনো সময় যেকোনো কোম্পানির উড়োজাহাজ খারাপ পারফর্ম করতে পারে, তখন যেন ঝুুঁকিতে না পড়ি সে কারণে এই বৈচিত্র্যের কথা ভাবছি।

বোয়িংয়ের প্রস্তাব সম্পর্কে তিনি বলেন, বোয়িংয়ের প্রস্তাব আমরা মূল্যায়ন করবো। বোয়িংয়ের সঙ্গে বিমানের দীর্ঘদিনের ভালো সম্পর্ক রয়েছে।

তবে বিমান যে উড়োজাহাজই কিনুক না কেন দুই প্রতিষ্ঠানের প্রতিযোগিতামূলক প্রস্তাবে ক্রেতা হিসেবে আমরা সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছি।

শফিউল আজিম বলেছেন, যারা বলে বিমান লাভে নাই, আল্লাহ তাদেরকে হেদায়েত দান করুক। বিমানে গত ১০ বছরে ৮ বছরই লাভ ছিল। তবে দুই বছর লস হয়েছে।

এমডি শফিউল আজিম বলেন, ওই দুই বছরের এক বছর করোনা ভাইরাসের আধিক্য ছিল, আরেকবার আমাদের মোটা অঙ্কের পেমেন্ট পরিশোধ করতে হয়েছিল।

তাছাড়া গত বছর ডলারের সমস্যা ছিল, বিশ্বে দুইটি যুদ্ধ চলমান, এর মধ্যেও আমরা লাভ করেছি। বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠান দিয়ে অডিট করা হয়েছে আমাদের লাভের বিষয়ে।

আমরা বিমানে নিয়মিত নিয়োগ দিচ্ছি, বেতন বোনাস দিচ্ছি, বোনাস দিচ্ছি, প্রোফিট বোনাস দিচ্ছি। লাভ না হলে এসব টাকা কোথা থেকে আসছে?

Z

এমডি থাকা অবস্থায় নিজের কার্যক্রম তুলে ধরে তিনি বলেন, বিমানে চাকরি করা অবস্থায় আমি কোনো কর্মীকে মূল্যায়ন করতে কার্পণ্য করিনি, শাস্তি দিতেও কার্পণ্য নয়।

আমি খুব ভাগ্যবান, বিমানবন্দরে কাজ করার সময় কোনো পর্যায় থেকে চাপ আসেনি। আমি আমার অথরিটিকে শতভাগ ব্যবহার করতে পেরেছি।

চেষ্টা করলে বিমানকে পৃথিবীর বড় বড় এয়ারলাইন্সের কাতারে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।

বিমানে অল্প সময়ের মধ্যে এমডি ও সিইও পরিবর্তন হয়। বিমানের জন্য দীর্ঘমেয়াদি এমডির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে কি না জানতে চাইলে এমডি বলেন, বিমানের হিউম্যান রিসোর্স ও টেকনিক্যাল রিসোর্স মানসম্মত।

যেকোনো প্রতিষ্ঠানে সিস্টেম ও স্ট্রাকচার দাড় করানোর গেলে এমনিতেই কাজ হবে। আমি এসব সিস্টেম ও স্ট্রাকচার দাড় করানোর চেষ্টা করেছি। সিস্টেম ঠিক থাকলে কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তির ওপর প্রতিষ্ঠান নির্ভর করবে না।

তিনি বলেন, আমার সুপারিশ থাকবে যারা বিভিন্ন টেকনিক্যাল বিভাগে কাজ করছে সেখানে যেন বয়স বিবেচনা না করা হয়। কারণ টেকনিক্যাল ফিল্ডে বয়স যত বাড়ে অভিজ্ঞতা তত বাড়ে।

অভিজ্ঞদের বয়স বিবেচনা না করে অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বিমানে রেখে দিতে হবে। বিমানকে সরকারি অফিসের মনমানসিকতা প্র‍্যাক্টিস করলে বিমান কাজ করবে না।

এটা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। সব কিছু বাণিজ্যিকভাবে চিন্তা করতে হবে।

আপনার কোনো আক্ষেপ আছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার দায়িত্বপালনের সময়ের মধ্যে যদি বিমানের বহরে ৪ টা এয়ারক্রাফট অ্যাড হতো, তাহলে খুবই খুশি হতাম। আমি চাইতাম ৫০টা এয়ারলাইন্সের মালিক হোক।

মতবিনিময় সভায় এটিজেএফবির সভাপতি তানজিম আনোয়ার, সহ-সভাপতি রাজীব ঘোষ, সাধারণ সম্পাদক বাতেন বিপ্লব, সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরুল কাউসার ইমনসহ এটিজেএফবির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, গত ২১ মে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে শফিউল আজিমকে সচিব পদে পদোন্নতি দিয়ে নির্বাচন কমিশনের সচিব হিসেবে বদলির আদেশ দেওয়া হয়।

আর গত ২৬ মে আরেক প্রজ্ঞাপনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জাহিদুল ইসলাম ভূঞাকে বিমানের নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী হিসেবে নিয়োগ দেয়।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর