৪ উইকেটের রুদ্ধশ্বাস জয় পেল মোহামেডান


মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তখন পিনপতন নিরাবতা। মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ড্রেসিংরুমে থমথমে পরিবেশ। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের লড়াইয়ে টিকে থাকতে মোহামেডানের জয়ের জন্য ২ বলে প্রয়োজন ৭ রান।
ক্রিজে নাসুম আহমেদ। বোলার গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের স্পিনার শেখ পারভেজ হোসেন জীবন। স্নায়ু স্থির রেখে জয়ের সমীকরণ মিলিয়ে দেন নাসুম। পারভেজের শর্ট বল মিড উইকেট দিয়ে সাজঘরে উড়ানোর পরের বলে ১ রান নিয়ে মোহামেডানকে ৪ উইকেটের রুদ্ধশ্বাস জয় এনে দেন নাসুম।
এই ম্যাচে মোহামেডান হারলে শিরোপার লড়াই থেকে ছিটকে যেত। আবাহনী ২৪ পয়েন্ট নিয়ে আছে শীর্ষে। মোহামেডানের পয়েন্ট ২২। আজ ২ পয়েন্ট হারালে আবাহনীর শিরোপা জয় নিশ্চিত হয়ে যেত। শেষ ম্যাচে মোহামেডান জিতলেও আবাহনী ২ পয়েন্টে এগিয়ে থাকতো।
সুপার লিগে শেষ ম্যাচে মিরপুরেই মুখোমুখি হবে আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। আবাহনী জিততে না পারলে দুই দলের পয়েন্ট সমান হবে। তখন হেড টু হেড কাউন্ট হবে। হেড টু হেডে পিছিয়ে আবাহনী শিরোপা জিততে পারবে না। আর আবাহনী ম্যাচ জিতে গেলে খুব সহজেই শিরোপাধারীরা নিজেদের কাছেই শিরোপা রাখতে পারবে।
লো স্কোরিং ম্যাচে রোমাঞ্চ ছড়িয়েছে বেশ। আগে ব্যাটিং করতে নেমে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স ২৩৬ রানে গুটিয়ে যায়। জবাব দিতে নেমে মোহামেডান শেষ বলে জয় নিশ্চিত করে।
মোহামেডানের ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ না হলে ম্যাচটায় শেষ দিকে এতোটা রোমাঞ্চ ছড়াত না। শুরুতে রনি তালুকদার ৫৫ রান করেন। টপ অর্ডারে আনিসুল ২ ও তৌফিক খান ১৪ রান করে দ্রুত সাজঘরে ফেরেন।
তাওহীদ হৃদয় ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ মিডল অর্ডারে হাল ধরেছিলেন। তাওহীদ ৩৭ রানে আটকে গেলেও মাহমুদউল্লাহ দলের জয়ের আশা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু শেষ দিকে দলকে খাদের কিনারায় ফেলে দেন মাহমুদউল্লাহ। ৬২ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৪৯ রান করেন।
শেষ দিকে সাইফ উদ্দিনের ৫৫ বলে ৩০ ও নাসুম আহমেদের ২ ছক্কা ও ১ চারে ১৩ বলে ২১ রানের ইনিংসে মোহামেডানের জয় নিশ্চিত হয়। গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের হয়ে ২টি করে উইকেট নেন শামীম মিয়া ও ওয়াসি সিদ্দিকী।
এর আগে ব্যাটিংয়ে তাদের হয়ে লড়াই করেন ওপেনার মুনিম শাহরিয়ার। ৮২ বলে ১০টি চার ও ২ ছক্কায় ৮০ রান করেন। এছাড়া গাজী তাহজিবুল ইসলাম ৩২, পারভেজ জীবন ৩৩ ও ওয়াসি ২২ রান করেন। প্রত্যেকের সম্মিলিত প্রচেষ্টাও জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না।
মোহামেডানের হয়ে ৩টি করে উইকেট নেন মোস্তাফিজুর রহমান ও সাইফ উদ্দিন। অলরাউন্ডার পারফরম্যান্সে সাইফ উদ্দিন হয়েছেন ম্যাচ সেরা।