গোপালগঞ্জে এনসিপি’র সমাবেশে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের হামলা, ভাঙচুর

আপডেট: July 16, 2025 |
inbound1596491156000322629
print news

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মাসব্যাপী কেন্দ্রীয় কর্মসূচি ‘জুলাই পদযাত্রা’ ঘিরে বুধবার (১৬ জুলাই) দিনভর একের পর এক সহিংস ঘটনার জন্ম দিয়েছে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ ও প্রশাসনের গাড়িতে আগুন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) গাড়িবহরে হামলা এবং সমাবেশস্থলে ককটেল বিস্ফোরণ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

দুপুর পৌনে ১টার দিকে গোপালগঞ্জ শহরের সমাবেশস্থলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে প্রবেশ করে স্লোগান দিতে দিতে মঞ্চে চড়াও হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তারা ব্যানার-পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে ও চেয়ার ভাঙচুর করে। হামলার সময় ককটেল বিস্ফোরণেরও ঘটনা ঘটে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

ঘটনার সময় পুলিশ ও এপিবিএনের সদস্যরা আশপাশে অবস্থান করলেও তা ঠেকাতে ব্যর্থ হন। এনসিপির নেতাকর্মীরা দৌড়ে সমাবেশস্থল ত্যাগ করলেও পরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের মাধ্যমে তারা ফিরে আসেন এবং কর্মসূচি পুনরায় শুরু হয়।

এর আগে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সদর উপজেলার বৌলতলী ইউনিয়নের গান্ধিয়াশুর এলাকায় এনসিপির পদযাত্রা ঠেকাতে গাছ ফেলে সড়ক অবরোধ করে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। ইউএনও এম রকিবুল হাসান ঘটনাস্থলে গেলে তার গাড়িবহরে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়। তিনি বলেন, “আমার গাড়িতে হামলার সময় সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে আমাদের উদ্ধার করেন।”

সকাল ১০টার দিকে সদর উপজেলার উলপুর সংযোগ সড়কে (লিংক রোড) পুলিশের একটি গাড়িতে পেট্রল বোমা নিক্ষেপ করে আগুন ধরিয়ে দেয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এতে পুলিশের তিন সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এ সময় গাড়ির কাচও ভাঙচুর করা হয়।

গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির মো. সাজেদুর রহমান বলেন, “জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় কর্মসূচি বানচাল করতে ছাত্রলীগের জেলা সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান পিয়ালের সমর্থকেরা পুলিশের গাড়িতে আগুন ও ইউএনওর গাড়িতে হামলা চালিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে।”

জাতীয় নাগরিক পার্টির ‘জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজকের কর্মসূচির নাম ছিল ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’। এতে দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নেয়ার কথা ছিল। সকাল থেকে উত্তেজনার মধ্যেই দলটি শহরের পৌর পার্কে পথসভার আয়োজন করে।

উল্লেখ্য, গণঅভ্যুত্থানে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয় ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের সব রাজনৈতিক কার্যক্রম। এর পরও আজকের ঘটনায় ফের এই দুই সংগঠনের সহিংস উপস্থিতি প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ ও নিষিদ্ধ ঘোষণার বাস্তব প্রয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর