দুই বছর বয়সেই মা-বাবার ডিভোর্স, ছেলে ভুগছেন মরণব্যাধি রোগে

আপডেট: September 3, 2025 |
inbound8018606685680477281
print news

জাহাঙ্গীর আলম, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: দুই বছর বয়সেই বাবা-মায়ের ডিভোর্সের কারণে ভেঙে যায় নাগর রায় (২৫) এর শৈশব। মা-বাবা দুজনেই চলে গেলে আর কেউ খোঁজ নেননি তাকে।

সেই ছোটবেলা থেকেই মামা ও নানির আশ্রয়ে বড় হন তিনি। কয়েক বছরের মাথায় মামার মৃত্যু হলে মামিও চলে যান বাবার বাড়িতে। এরপর থেকে নানির সঙ্গেই একাকী জীবন কাটাতে থাকে নাগর।

অভাবের সংসারে কোনোমতে এসএসসি পাস করেন তিনি। পরে ফ্লেক্সিলোড ও বিকাশের দোকান দিয়ে জীবিকা নির্বাহ শুরু করেন। কিছুটা স্বচ্ছলতায় ফিরছিল তাদের জীবন।

কিন্তু দুই বছর আগে মাথাব্যথা আর জ্বর নিয়ে শুরু হয় নতুন দুঃস্বপ্ন। ধরা পড়ে বিরল রোগ মায়োপ্যাথী। এই রোগে ধীরে ধীরে শুকিয়ে যাচ্ছে তার মাংসপেশি।

এখন আর হাঁটাচলা তো দূরের কথা, নিজের কোনো কাজই করতে পারেন না নাগর। চিকিৎসার জন্য দরকার ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা। কিন্তু দারিদ্র্যের কারণে তা জোগাড় করতে না পেরে প্রতিদিন মৃত্যুর দিকে এগোচ্ছেন তিনি।

বলছিলাম ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার চাড়োল ইউনিয়নের লাহিড়ী কলেজ পাড়ার বাসিন্দা নাগর রায়ের কথা।

স্থানীয়রা জানান, ছোটবেলা থেকেই কষ্টে বড় হয়েছেন নাগর। এখন অসুস্থ হয়ে পড়ায় নানির চোখের সামনেই ধুঁকে ধুঁকে মরছেন তিনি। নানি মারা গেলে তাকেই বা দেখবে কে? এমন প্রশ্ন তুলছেন প্রতিবেশীরা।

নাগরের বন্ধু সাহসুর রহমান সজীব বলেন, “আমার বন্ধু অনেক মেধাবী ছিল। এখন অসুস্থ হয়ে পড়েছে। নিজে কিছু করতে পারে না। আমি আর তার নানি মিলে তাকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখি। বোতলে প্রসাব করে, সেটিও আমরা পরিষ্কার করি। অবস্থা খুব করুণ।”

অসহায় কণ্ঠে নাগর রায় বলেন, “আমার তো কেউ নাই। ইচ্ছে ছিল সরকারি চাকরি করে নানির দায়িত্ব নেব। এখন নিজেই চলাচল করতে পারি না।

মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছি। যদি সকলে সাহায্য করতো, ঢাকায় গিয়ে চিকিৎসা নিয়ে হয়তো সুস্থ হতে পারতাম। যারা সাহায্য করবেন, তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ থাকব।”

নানি বিদ্যাশ্বরী কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “ছোট থেকে নাতিকে লালন করছি। এখন সে অসুস্থ হয়ে গেছে। যদি সকলে একটু সাহায্য করে, সুস্থ হয়ে উঠলে সে আমাকে দেখাশোনা করবে।”

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম জানান, সমাজসেবা অফিস থেকে নির্দিষ্ট ছয়টি জটিল রোগের রোগীকে এককালীন ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়।

যেহেতু নাগরের রোগটি তালিকায় নেই, তাই তাকে প্রতিবন্ধী ভাতার আওতায় আনা সম্ভব। পাশাপাশি ওষুধের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। তিনি আবেদন করলে উপজেলা সমাজকল্যাণ পরিষদ থেকেও সহযোগিতা দেওয়া হবে।

নাগর রায়কে সহযোগিতার জন্য যোগাযোগ: ০১৭৭২৭৬৪১৬১ (বিকাশ/রকেট)

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর