জুমার দিনের আমল ও ফজিলত

শুক্রবার জুমার দিন। এ দিনটি মুসলিমদের জন্য সপ্তাহের সেরা দিন। মুসলিমদের কাছে সাপ্তাহিক ঈদের দিন। দিনটি আল্লাহর কাছে অতি মর্যাদাসম্পন্ন। এই দিনের রয়েছে বিশেষ কিছু আমল ও ফজিলত।

পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে মুমিনরা! জুমার দিন যখন নামাজের আজান দেওয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে এসো এবং বেচাকেনা বন্ধ করো, এটা তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা বুঝ। এরপর নামাজ শেষ হলে জমিনে ছড়িয়ে পড়ো, আল্লাহর অনুগ্রহ (জীবিকা) তালাশ করো এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করো যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ (সুরা জুমা : ৯-১০)

জুমার দিন জুমার নামাজের জন্য যে যত তাড়াতাড়ি মসজিদে আসবে সে তত বেশি সওয়াব পাবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যখন জুমার দিন আসে ফেরেশতারা মসজিদের দরজায় দাঁড়িয়ে আগন্তুকদের নাম লিখতে থাকে। যে সবার আগে আসে সে ওই ব্যক্তির মতো যে একটি উট সদকা করে।

তারপর যে আসে সে ওই ব্যক্তির মতো যে একটি গাভী সদকা করে। তারপর আগমনকারী মুরগি সদকাকারীর মতো। তারপর আগমনকারী একটি ডিম সদকাকারীর মতো। এরপর যখন ইমাম খুতবা দিতে বের হন, তখন ফেরেশতারা তাদের দফতর বন্ধ করে দেন এবং মনোযোগ দিয়ে খুতবা শুনতে থাকেন। (বুখারি : ৮৮২)

নিন্মের হাদিসগুলোতে জুমার দিনের আরও কিছু আমলের কথা চমৎকারভাবে আলোচিত হয়েছে। হযরত আউস ইবনে আউস (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করাবে (জুমার নামাজের পূর্বে স্ত্রী-সহবাস করে তাকেও গোসল করাবে) এবং নিজেও গোসল করবে অথবা উত্তমরূপে গোসল করবে। এরপর ওয়াক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মসজিদে আসবে, আসার সময় হেঁটে আসবে, কোনো বাহনে চড়বে না, ইমামের কাছাকাছি বসবে, এরপর দুটি খুতবা মনোযোগ দিয়ে শুনবে এবং (খুতবার সময়) কোনো অনর্থক কাজকর্ম করবে না, সে মসজিদে আসার প্রতিটি পদক্ষেপে একবছর নফল রোজা ও একবছর নফল নামাজের সওয়াব পাবে। (আবু দাউদ : ৩৪৫)

রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, যখন জুমার দিন কোনো ব্যক্তি গোসল করে এবং সাধ্যমতো পবিত্রতা অর্জন করে, এরপর তেল মাখে বা ঘরের সুগন্ধি ব্যবহার করে বের হয়, আর দুজনের মাঝে বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টি না করে, এরপর সে তার জন্য ধার্যকৃত নামাজ আদায় করে এবং ইমাম খুতবা দেওয়ার সময় চুপ থাকে, তার এই জুমা থেকে পরবর্তী জুমা পর্যন্ত (সগিরা গোনাহ) মাফ করে দেওয়া হয়। (বুখারি : ৮৮৩)

জুমার দিন অন্য দিনের তুলনায় বেশি বেশি দরুদ শরিফ পড়ার কথা এসেছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমাদের দিনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উত্তম দিন হলো জুমার দিন। এই দিন আদম (আ.)কে সৃষ্টি করা হয়েছে। এই দিন তাঁর ইন্তেকাল হয়েছে। আর এই দিনই (সিঙ্গায়) ফুৎকার হবে এবং এই দিনই সবাই অজ্ঞান হবে। কাজেই তোমরা এই দিন বেশি বেশি দরুদ পাঠ করো। (আবু দাউদ : ১০৮৯)

জুমার দিনের বিশেষ আমল
১. জুমার দিন উত্তমরূপে গোসল করা।
২. জুমার নামাজের জন্য সুগন্ধি ব্যবহার করা।
৩. মিসওয়াক করা।
৪. গায়ে তেল ব্যবহার করা।
৫. উত্তম পোশাক পরে জুমা আদায় করা।
৬. মুসল্লিরা ইমামের দিকে মুখ করে বসা।
৭. পায়ে হেঁটে মসজিদে যাওয়া।
৮. জুমার দিন ও জুমার রাতে বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা।
৯. বেশি বেশি দোয়া করা।
১০. মুসল্লিদের ফাঁক করে সামনের কাতারে না যাওয়া।
১১. সুযোগ থাকলে দুই রাকাত ‘তাহিয়্যাতুল মসজিদ’ নফল আদায় করা।
১২. জুমার দিন সুরা কাহাফ তিলাওয়াত করা।

বৈশাখী নিউজ/ জেপা