যে বাজারে বিক্রি হয় মেশিনগান-মর্টার-কামান, ব্যবস্থা রয়েছে হোম ডেলিভারির!

আপডেট: January 28, 2022 |

বিশ্বের সব দেশের অস্ত্রসম্ভারই রয়েছে এখানে। কিন্তু, কোনও দেশের আইনই চলে না। এমনই জনশ্রুতি আছে আফগানিস্তান সীমান্ত লাগোয়া পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের ডেরা আদমখেল অস্ত্রের চোরাবাজার সম্পর্কে।

নব্বইয়ের দশকের চীনা-৯ এমএম পিস্তল থেকে হালফিলের জার্মান এমপি-৫ সাব-মেশিনগান বিক্রি হচ্ছে এই বাজারে।

আফগানিস্তানে তালেবানের ক্ষমতা পুনর্দখলের পরে পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত এলাকাজুড়ে বেআইনি অস্ত্র কারবারে নতুন জোয়ার এসেছে। হালকা অস্ত্রের পাশাপাশি জোগান বেড়েছে মাঝারি ও ভারী মেশিনগান, মর্টার, রকেট লঞ্চারের।

যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বদলেছে ব্যবসার ধরনও। চালু হয়েছে ‘হোম ডেলিভারি’ পদ্ধতি। নেটমাধ্যমে রীতিমতো তালিকা দেখে পছন্দের অস্ত্র বাছাই করে ডিলারকে জানালেই লোক মারফত তা পছন্দের জায়গায় পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।

অস্ত্রের দামও নাগালের মধ্যেই। একটু পুরনো মডেলের কালাশনিকভ রাইফেল বা পিস্তল মেলে সস্তা স্মার্টফোনের চেয়েও কম দামে। তার চেয়ে কয়েক হাজার পাকিস্তানি রুপি বেশি খরচ করলেই মিলবে বিশ্বখ্যাত অস্ত্রনির্মাতা ‘হেকলারের’-এর এমপি-৫।

আশির দশকে আফগানিস্তানে সোভিয়েত সেনার প্রবেশের পর থেকেই ডেরা আদমখেলের অস্ত্র বাজারের রমরমা ব্যবসা শুরু। খাইবার-পাখতুনখোয়ার রাজধানী পেশোয়ারের ৩৫ কিলোমিটার দূরের এই গঞ্জ ছিল আফগান মুজাহিদদের অস্ত্রাগার।

খাইবার-পাখতুনখোয়া এবং সন্নিহিত আফগান অঞ্চলগুলোতে বসবাসকারী উপজাতি গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্র রাখার চল ব্রিটিশ জামানা থেকেই। ধীরে ধীরে দেশি-বিদেশি জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোও আকর্ষিত হয় পাকিস্তানের অস্ত্র-বাজারে। বেআইনি অস্ত্র রফতানির ঘাঁটি হয় করাচি।

তবে সব অস্ত্রই আসল নয়। আদমখেলের কারিগরেরা ইটালিয়ান ব্যারেটা বা বেলজিয়ান ব্রাউনিং পিস্তলের হুবহু নকল তৈরিতেও সিদ্ধহস্ত। পাল্লা বা মারণক্ষমতা প্রায় সমান হলেও নকল অস্ত্র থেকে গুলি ছোড়ার সময় আওয়াজ এবং ঝাঁকুনি (রিকয়েল) বেশি হয়।

১৯৮৯ সালে সোভিয়েত ফৌজ আফগানিস্তান ছাড়ার পরে তাদের ফেলে যাওয়া সাঁজোয়া গাড়ি, হালকা কামান (মাউন্টেন আর্টিলারি)-ও বিক্রি হয়েছে পাকিস্তানের চোরাবাজারে। তথ্যসূত্র: আল-জাজিরাআরব নিউজদ্য ফ্রি প্রেস জার্নাল

বৈশাখী নিউজ/ ইডি

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর