বিশ্বব্যাপী রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের নেতিবাচক প্রভাব

আপডেট: April 12, 2022 |

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয়েছে প্রায় দেড় মাস পেরিয়ে গেছে। এই যুদ্ধের অর্থনৈতিক ক্ষতি দিন দিন বেড়েই চলেছে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা তাদের সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলেছে এই যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতিতে মারাত্মক আঘাত হেনেছে।

আন্তর্জাতিক সংস্থাটি ভবিষ্যদ্বাণী করেছে যে বিশ্ব বাণিজ্য বৃদ্ধির পরিমাণ এ বছর অর্ধেকের মতো কম হবে এবং বিশ্বব্যাপী অভ্যন্তরীণ জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার ভবিষ্যদ্বাণী অনুসারে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট সঙ্কটের কারণে বিশ্বব্যাপী জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার শূন্য দশমিক সাত থেকে এক দশমিক তিন শতাংশ হ্রাস পেতে পারে।

গবেষণায় দেখা যাচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ উভয় দেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে ভয়াবহ আঘাত হেনেছে। ইউক্রেনের অনেক কৃষি জমি চাষাবাদ করা হয়নি। নিরাপত্তাহীনতা এবং যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতি দেশের অর্থনৈতিক অবস্থাকে নাজুক করে তুলেছে।

দেশের অর্থনীতিতে যুদ্ধের পরোক্ষ প্রভাবের কথা উল্লেখ করে ইউক্রেনের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী লুলিয়া সভিরিডেনকো বলেন: সবচেয়ে বড় ক্ষতি হয়েছে অবকাঠামো খাতের। অন্তত আট হাজার কিলোমিটার রাস্তা ধ্বঙস হয়েছে, অসংখ্য স্টেশন এবং বিমানবন্দরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসবের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমপক্ষে এক শ আট বিলিয়ন ডলার। সুদূরপ্রসারী ক্ষতির মধ্যে বেকারত্বের বিস্ফোরণ ঘটতে পারে, পারিবারিক ভরণ-পোষণ ব্যয় হ্রাস পাবে এমনকি সরকারি আয়ের পরিমাণও কমে যাবে।

ইউক্রেনের এই যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতিতেও ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। রাশিয়া এবং ইউক্রেন বিশ্বে কৌশলগত পণ্যের গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহকারী। বিশ্বে শস্য, খাদ্য এবং শক্তি সরবরাহে দুদেশেরই উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। জাতিসংঘের প্রতিবেদনে এসেছে, ২০২১ সালে বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি ক্ষুধার্ত মানুষের খাদ্য নিশ্চিত করেছে ইউক্রেন। অপরদিকে রাশিয়াও পটাশ এবং ফসফেটের মতো মাটির পুষ্টির উপাদানগুলোর প্রধান উৎপাদনকারী। রাসায়নিক সার উৎপাদনের প্রধান উপাদান এগুলো। যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বে এখন কৃষি খাত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের প্রধান লরেন্স বুন বলেছেন: ইউক্রেনের যুদ্ধ ইউরোপের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলেছে। মূল্যস্ফীতি দুই থেকে আড়াই পয়েন্ট বৃদ্ধি পাবে। এর প্রভাব পড়েছে মার্কিন অর্থনীতিতেও। বাইডেন সরকারের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারওম্যান সিসিলিয়া রৌজ বলেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পেয়েছে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মুখপাত্র অগাস্ট লুক এবং গ্যারি রাইস বলেছেন যে বিশ্বব্যাপী তেলের মূল্যবৃদ্ধি বিশ্ব বাণিজ্যের পাশাপাশি ক্ষুদ্র অর্থনীতিতে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ইউক্রেন যুদ্ধ অব্যাহত থাকলে বিশ্বে বিশেষ করে দুর্বল দেশগুলোতে ক্ষুধা ও দারিদ্র্য বৃদ্ধি পাবে। সুতরাং বিশ্ববাসীর প্রত্যাশা যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই। সূত্র: পার্সটুডে

বৈশাখী নিউজ/ বিসি

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর