শিশুর কৃমি সংক্রমণের লক্ষণ

আপডেট: April 14, 2022 |

বাচ্চাদের মধ্যে পেটে ব্যথার সমস্যা খুবই সাধারণ। বেশিরভাগ বাচ্চার মধ্যেই এই সমস্যা লক্ষ্য করা যায়। আর পেটে ব্যথা হওয়ার অন্যতম কারণ হল অন্ত্রের সংক্রমণ, যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অন্ত্রের পরজীবী যেমন কৃমির কারণে হয়। কৃমি অন্ত্রেই বাস করে এবং শরীরের সমস্ত পুষ্টি শোষণ করতে থাকে। ফলে মাঝে মধ্যেই পায়ুদ্বারে ইরিটেশন, পেটে ব্যথা, সঙ্গে বমি হতে থাকে।

এ রকম সমস্যায় অনেক মা-বাবাই ভাবেন, পেটের গোলমাল থেকে শরীর খারাপ করছে। কিন্তু এই সব লক্ষণ কৃমির কারণে দেখা দিতে পারে।

ছোটো বাচ্চাদের মধ্যে কৃমির সমস্যা নতুন কিছু নয়। অনেক সময় কৃমি সংক্রমণের তেমন কোনও উপসর্গও চোখে পড়ে না।

জেনে নিন শিশুদের মধ্যে কৃমি সংক্রমণের লক্ষণ এবং এর থেকে বাঁচার উপায়।

মানুষের শরীরে বিভিন্ন ধরনের কৃমি বংশবৃদ্ধি করতে পারে। তবে বাচ্চাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি যেগুলো দেখা যায়, সেগুলো হল – টেপওয়ার্ম বা ফিতাক্রিমি (একে ফ্ল্যাটওয়ার্মও বলে), রাউন্ডওয়ার্ম, পিনওয়ার্ম বা থ্রেডওয়ার্ম এবং হুকওয়ার্ম। এগুলির মধ্যে কোনও একটি অন্ত্রে বংশ বিস্তার করলেই কৃমির সংক্রমণ হয়।

কৃমি সংক্রমণের লক্ষণ

বিরক্তি, ওজন কমে যাওয়া, পেটে ব্যথা, বিছানায় প্রস্রাব করে ফেলা, মলে রক্ত পড়া, বমি বমি ভাব, দুর্বলতা বা ক্লান্তি, খিদে না হওয়া। এগুলি ছাড়াও আরও যে সমস্ত লক্ষণ দেখা যায় – ১) কৃমি হলে কাশি বা বমি হতে পারে। ২) মলদ্বারের চারপাশে চুলকানি বা ব্যথা। এই লক্ষণটি সাধারণত পিনওয়ার্মের ক্ষেত্রে দেখা যায়। ৩) চুলকানির কারণে ঘুমের সমস্যা। ৪) মূত্রনালীর সংক্রমণ এর কারণে প্রস্রাবের সময় ব্যথা এবং ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া। এটি মেয়েদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। ৫) অ্যানিমিয়া ৬) ডায়ারিয়া, মলের সঙ্গে কৃমি বেরোনো। ৭) গুরুতর টেপওয়ার্ম সংক্রমণের কারণে খিঁচুনি হতে পারে। ৮) জ্বর, জনডিস হতে পারে। ৯) খুব ঘন ঘন খাওয়া, এমনকি অপুষ্টিও হতে পারে। ১০) অন্ত্রের সমস্যা, কোষ্ঠকাঠিন্য

কৃমি সংক্রমণের কিছু সাধারণ কারণ

১) সংক্রমিত পৃষ্ঠের সংস্পর্শে আসা, যেমন – খেলার মাঠে জীবাণুযুক্ত মাটি স্পর্শ করা, কৃমিতে সংক্রামিত পোষা প্রাণী স্পর্শ করা। ২) সংক্রমিত খাবার বা জল খাওয়া। ৩) খারাপ স্বাস্থ্যবিধি বা পরিচ্ছন্নতার অভাব, হাত ভালভাবে না ধোওয়া। ৪) কাঁচা বা ভালোভাবে রান্না না করা খাদ্য গ্রহণ। ৫) সংক্রামিত ব্যক্তির সান্নিধ্যে আসা।

কৃমি সংক্রমণ কীভাবে নির্ণয় করা হয়?

বাচ্চা কৃমিতে আক্রান্ত কিনা তা নির্ণয় করার জন্য ডাক্তাররা বিভিন্ন টেস্ট করেন – মল পরীক্ষা, স্টিকি টেপ টেস্ট, নখ পরীক্ষা, কটন বাড সোয়াব, আল্ট্রাসাউন্ড টেস্ট, ইত্যাদি।

কৃমি সারানোর উপায় কৃমির সংক্রমণ নির্মূল করা খুব কঠিন নয়। কৃমির সমস্যায় এখন নানান ওষুধ বেরিয়ে গেছে, ফলে খুব সহজেই এটি চিকিৎসা করা যায়। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা সাধারণত অ্যান্টি-ওয়ার্ম বা অ্যান্টি-প্যারাসাইটিক ওষুধের একটি কোর্স লিখে দেন। ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চললেই খুব কম দিনের মধ্যেই কৃমির হাত থেকে নিস্তার মিলতে পারে। তাছাড়া, বাড়িতে বাচ্চার খাওয়াদাওয়া, স্বাস্থ্যবিধি বা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকেও খেয়াল রাখতে হবে।

সূত্র: বোল্ডস্কাই

বৈশাখী নিউজ/ জেপা

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর