চোখের ভেতর ডজন খানেক ডিম পাড়ল মাছি! তারপর…

ক’দিন ধরেই ডান চোখে অস্বস্তি হচ্ছিল। চোখে বারবার পানির ঝাপটা দিয়েও কাজ হচ্ছিল না। বরং বাড়ছিল চুলকানি। শেষে চিকিৎসকের দ্বারস্থ হওয়া। চোখ স্ক্যান করতেই বোঝা যায় ভেতরে কিছু ঢুকেছে। কিন্তু কী ঢুকছে?

অপরেশন টেবিলে চক্ষু চড়কগাছ চিকিৎসকদের। দেখা যায় ওই প্রৌঢ়ের চোখের ভেতরে ডিম পেড়েছে মাছি। ডিমের সংখ্যা এক ডজনেরও বেশি। কিন্তু চোখের ভেতরে মাছি ডিম পাড়ল কী করে? এও সম্ভব?

ফ্রান্সের বাসিন্দা ৫৩ বছরের ওই প্রৌঢ়র বক্তব্য, তার বাগান আছে। কিছুদিন আগে সেখানে কাজ করছিলেন তিনি। একটি ভেড়া আর ঘোড়াও ছিল কাছে।

আচমকা কিছু একটা ঢোকে ডান চোখে। অস্বস্তি হয়। সঙ্গে সঙ্গে হাত দিয়ে চোখ পরিস্কার করার চেষ্টা করেন, চোখে পানির ঝাপটাও দেন। তবে এতে সাময়িকভাবে কমলেও পরে অস্বস্তি বাড়ে। এরপর বাধ্য হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেন তিনি। ভর্তি হতে হয় স্থানীয় হাসপাতালে।

নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিনে প্রকাশিত প্রতিবেদন বলছে, হাসপাতালের চিকিৎসকরা তার ডান চোখের স্ক্যান রিপোর্ট দেখেই আন্দাজ করছিলেন, ওই ব্যক্তির চোখের ভেতরে মাছির ডিম বা লার্ভা রয়েছে।

এরপর অস্ত্রোপচারের টেবিলে একে একে লার্ভাগুলিকে বের করা হয়।চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, কনজাংটিভা, চোখের পাতার আস্তরণের ঝিল্লি এবং চোখের সাদা অংশের ভিতরে ছিল একাধিক লার্ভা। কিন্তু ওই ব্যক্তির বাগনে কাজ করার সঙ্গে এই লার্ভার কী কোনও সম্পর্ক আছে?

অবশ্যই আছে। কারণ চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, যে মাছি ডিম পেড়েছিল ওই ব্যক্তির চোখে তাকে বলা হয় ‘ওয়েসট্রাস ওভিস’। এই মাছিকে সাধারণত ভেড়ার শরীরের চারপাশেই ভনভন করতে দেখা যায়।

অর্থাৎ কিনা ভেড়াটির পাশে দাঁড়িয়ে যখন বাগানের কাজ করছিলেন প্রৌঢ়, তখনই ঘটেছিল বিপত্তি। হাজার পানির ঝাপটা দিয়েও যার সুরাহা হয়নি।

চিকিৎসকরাও জানাচ্ছেন, চোখের ভেতর থেকে লার্ভা সহজে বের হয় না। চোখ ধুয়ে কোনও ফল হয় না। একমাত্র অস্ত্রোপচারেই মুক্তি মেলে লার্ভার ও ভুক্তভোগী রোগীর। এক্ষেত্রেও অস্ত্রোপচারের পর ভাল আছেন প্রৌঢ়।

সূত্র: টাইমস নাউ, সংবাদ প্রতিদিন

বৈশাখী নিউজ/ জেপা