বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট লেবাননে

আপডেট: July 5, 2022 |
print news

পানির অভাব নেই লেবাননে। প্রায় ৭০ লাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত দেশটিকে ঘিরে আছে ২২টি ছোটবড় নদী। তা সত্ত্বেও বিশুদ্ধ পানির অভাবে ধুঁকছে পশ্চিম এশিয়ার দেশটির মানুষ।

লিটানি, আরকা, কাদিশা, আব্রাহাম, বৈরুত, দামৌর, আওয়ালি, জাহরানি নামের নদীগুলো নিজেরাই যেন বিশুদ্ধ পানির অভাবে আজ মৃতপ্রায়।

কারণ, দেশটির পয়নিষ্কাশন ব্যবস্থা এতটাই নাজুক যে, ময়লা-আবর্জনা আর কল-কারখানার বর্জ্যে বিষাক্ত হয়ে পড়েছে নদীগুলোর পানি।

বিশেষ করে দেশের সবচেয়ে বড় লিটানি নদীর পানি শতভাগ বিষাক্ত। যে কারণে প্রতি সপ্তাহে বিশুদ্ধ পানি পেতে লাখ লাখ লেবানিজ পাউন্ড খরচ করতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। দেশটিতে এখন দেড় লিটারের পানির বোতলের দাম ১২২৫ লেবানিজ পাউন্ড (৭৫ টাকা)।

লেবাননের বিশুদ্ধ পানিসংকট তীব্র। সেই সংকট উত্তরণে অর্থনৈতিকভাবে চাপে পড়েছে পরিবারগুলোর নিত্যজীবন, ব্যবসায়িক কার্যক্রম। প্রচুর পানিসম্পদ থাকা সত্ত্বেও সেগুলো সংরক্ষণ ও সুরক্ষার কৌশল বাস্তবায়ন না হওয়ায় পৃথিবীর অন্যতম পানি সংকটের দেশে পরিণত হয়েছে লেবানন।

এ সংকট থেকে বাঁচতে পানি কম ব্যবহারের দিকে ঝুঁকতে গিয়ে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন নাগরিকরা। অন্যদিকে তাদের পানির ঘাটতি পূরণ করতে বেসরকারি সংস্থাগুলোকে দিতে হচ্ছে তাদের আয়ের বিরাট অংশ। পরিবারপ্রতি সপ্তাহে পানি বাবদ খরচ হচ্ছে ১০ লাখ লেবানিজ পাউন্ডেরও বেশি। কম করে হলেও সপ্তাহে পরিবারপ্রতি এ খাতে খরচ করতে হয় ছয় লাখ ৭৫ হাজার লেবানিজ পাউন্ড (প্রায় ৪২ হাজার টাকা)।

লেবাননে তুষারভর্তি পাহাড়ও রয়েছে। সেগুলোর স্রোতধারা নদীগুলোয় এলেই বিষাক্ত হয়ে পড়ে। পরিবেশবাদী দলগুলো লেবাননের পানি সংকটের জন্য সরকারের নীতিকে দায়ী করে বলেছে, পর্যাপ্ত পানির অবকাঠামোর অভাব এবং অব্যবস্থাপনা পরিস্থিতিকে সংকটজনক পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। গত গ্রীষ্মে ইউনিসেফ সতর্ক করে দিয়ে বলেছিল, জরুরি পদক্ষেপ না নিলে লেবাননজুড়ে ৪০ লাখেরও বেশি মানুষ নিরাপদ পানি সংকটে পড়ে যাবেন।

বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নগদ অর্থ সংকটে থাকা সরকার পানির সরবরাহ নিরাপদ ও সুরক্ষিত রাখার জন্য বিনিয়োগ করেনি। লিতানি নদীই দেশটির সেচ এবং জলবিদ্যুতের একটি অপরিহার্য উৎস। যুগ যুগ ধরে দেশের মেরুদণ্ডে প্রোথিত দুর্নীতির কারণেই নদীটি বিষাক্ত হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

লেবাননের পরিবেশগত প্রকৌশলী মিশেল ফ্রেম জানিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তন পানি সম্পদের প্রাপ্যতা এবং তীব্রতাকে প্রভাবিত করতে শুরু করেছে, এটা ঠিক। দীর্ঘ বছরের অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির কারণে সুপেয়ে পানি সংকট এতটা তীব্র হয়েছে।

খবর এপি

বৈশাখী নিউজ/ ইডি

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর