মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে অনেক পর্যবেক্ষক আসবেন: এইচ টি ইমাম
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম জানিয়েছেন ,”মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে অনেক পর্যবেক্ষক আসবেন।”
বুধবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ের পাশে নির্বাচন পরিচালনা অফিসে সৌজন্য সাক্ষাত শেষে তিনি একথা বলেন।
বৈঠকের এজেন্ডা তুলে ধরে এইচ টি ইমাম বলেন, “আমাদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সবথেকে আনন্দের কথা এই যে আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা যে সমস্ত কথা বলেন , আমরা চাই একটি অংশীদারিত্বমূলক সকলে অংশগ্রহণ করুক। একটি সুষ্ঠ ও অবাধ এবং অত্যন্ত ষ্পষ্ট একটি নির্বাচন, যেটি সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে। এই আদর্শগুলো আমেরিকানরাও ধারণ করে। তাদের সঙ্গে আমাদের মতের যথেষ্ট মিল আছে।এইজন্যই তারা আমাদের এখানে এসেছেন। এটিই প্রথম নয়, কিছুদিন আগে ব্রিটিশ হাইকমিশনার এলিসন ব্লেক এসেছিলেন এবং আওয়ামী লীগ অফিসে এসে প্রায়ই অনেকে এসে দেখা করেন।”
কুটনৈতিকদের সাথে ব্যক্তিগত পর্যায়ে যদি বলেন “সব রাষ্ট্রদূতের সঙ্গেই আমাদের ব্যক্তিগত কথাবার্তা ও আলোচনা হয়। সেগুলো সব সময় প্রচার করার দরকার আমরা মনে করি না। পার্থক্যটা হলো, অন্যান্য দলগুলো তারা বড় বড় হোটেলে তাদের জন্য ডিনারের ব্যবস্থা করেন, তারা দাওয়াত করেন তারা বাড়িতে যান, দেখা করতে যান আর আওয়ামী লীগের উচ্চতা এতোখানি গণতান্ত্রিক পদ্ধতির ব্যাপারে, আমাদের যে যাই সমালোচনা করুক, তারা সকলেই বলছেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একটা অন্য স্টান্ডার্ড আছে। সেই স্টান্ডার্ডের জন্য, এই উচ্চতার মানের জন্যই তারা এখানে আসেন।”
আমেরিকানরা আমাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব চান সর্বক্ষেত্রে উল্লেখ করে বলেন, “আমি কথায় কথায় বলেছিলাম মুক্তিযুদ্ধেও সময় আমেরিকার জনগণ আমাদের দ্বিগুণভাবে সমর্থন করেছে যদিও সরকার তখন আমাদের বিরোধী ছিল। যাওয়ার আগে বিল মোলার বলে গেলেন। তখন ওনি সঙ্গে সঙ্গে মনে করিয়ে দিলেন, আমেরিকা আবার ভুল বুঝতে পেরে ৪ এপ্রিল স্বাধীনতার পর পরেই অনেক দেশের আগে আমাদেরকে স্বীকৃতি দিয়েছিল।
“তাদের সাথে আমাদের অনেক পারস্পরিক মিল আছে দাবি করে এইচ টি ইমাম আরও বলেন,আওয়ামী লীগের পক্ষে প্রত্যেকটি দূতাবাসের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখি এবং গণতন্ত্রের পক্ষে যারা এখানে কাজ করেন নৈতিক একটা উচ্চতা থেকে সবার সাথে কথা বলি।”
“স্বাধীনতার পর থেকে ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু আরপিও তৈরি করেছিলেন। সেই আরওপিও’র উপর ভিত্তি করে এই পর্যন্ত নির্বাচন হয়েছে। সে আরওপিও’তে যত রকমের সংশোধনী এসেছে যত কিছু নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করা তারা আদর্শ একটা ইমেজ দেওয়া এবং নির্বাচন পদ্ধতিতে যত কিছু সংস্কার ; সব একমাত্র আওয়ামী লীগ করেছে। এটি আর কেউই করে নাই। এই জিনিসটি সবাই জানুন।”
“তাই আসুন আমরা সকলে মিলে নির্বাচন কমিশনকে এমন একটা উচ্চতায় নিয়ে যাই, কেউ যেন প্রশ্ন করতে না পারে। তখন বলবে, যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগই করে দেখিয়েছে, এটা করতে পারা সম্ভব।”
“তারা আরও সম্পর্ক গভীরতর করতে চান। আমাদেও সরকার আরও ভালভাবে শক্তিশালী হোক। এখানে তারা আরও বিনিয়োগ করবেন এমন অনেক কিছু ব্যাপার আছে।”
“গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টিতে আমরা সকলেই একসঙ্গে কাজ করবো, আমেরিকা থেকে অনেক অবজারভার আসবেন। আমরা তাদেরকে বলেছি, অবজারভার যেখানে যাবেন, তাদেও নিরাপত্তা বিধান করা আমাদের দায়িত্ব। কাজেই আপনারা তালিকা দিয়েন। আগে থেকেই জানাবে কোথায় তারা যাবেন কি কি কাজ করবেন, এগুলো জানা দরকার।”
জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে আমেরিকার পক্ষ থেকে কোন অসন্তোষ জানানো হয়েছি কি না প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,”ওরা এসমস্ত কথা বলেন নাই। তারা বলছেন, এখন বাংলাদেশে শান্তির ভাল পরিবেশ বিরাজ করছে। ওদের এনডিআই-এর আগে অক্টোবর মাসে এসেছিলেন, এসে আমাদের সঙ্গে দেখা করেছেন তখন তারা বলে গিয়েছিলেন, বাংলাদেশে একটি সংলাপ হওয়া দরকার। এটা ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালসহ অন্যান্যরাও বলেছিলেন।”
‘‘এজন্য তারা বলছেন, আমরা অত্যন্ত খুশী। তোমরা সংলাপ করেছো। এই ডায়ালগে আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা সকলকে যেভাবে নিয়ে এসেছে। ওদের যা কিছু বলার ছিল তারা কিন্তু প্রকাশ্যেই বলে ফেলেছেন। সরকারের বিরুদ্ধে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের ক্ষোভের জায়গাগুলো তারা বলেছেন এবং সরকার হাসিমুখে নিয়েছেন। আমরা যা যা করার দরকার ছিল, যে প্রতিশ্রুতি জননেত্রী শেখ হাসিনা দিয়েছিলেন সে প্রতিশ্রুতিগুলো আমরা সব পালন করছি। আমরা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করার সম্পন্ন চেষ্টা করছি সর্বাত্মকভাবে।”
“কিন্তু সবকিছুর উপরে উল্লেখ যোগ্য হচ্ছে নির্বাচন কমিশনকে সমস্ত আলোচনা-সমালোচনার উর্ধ্বে রেখে করতে হবে। তাহলেই সুষ্ঠ নির্বাচন হবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন পর্যবেক্ষক না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাহলে আমেরিকা কেন পাঠাবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমেরিকা অবজারভার পাঠাবে। ওরা সব জায়গাতেই পাঠায়। ওরা বলছে, আমরা নির্বাচন কেমন হয় দেখবো? সত্যিকার সুষ্ঠ হয় কি না? ওদের তো কতগুলো থিঙ্ক ট্যাংক আছে। আমেরিকান আর ইউরোপীয় ইউনিয়ন এক নয়।”
“বাংলাদেশে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনায় সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণে নির্বাচন হয়। এরকম নির্বাচন কিন্তু অনেক দেশেই হয় না। এটা আমাদের গর্ব করার জিনিস। এইজন্যই ওরা আসে।”
সকল দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন হতে যাচ্ছে, এব্যাপারে আমেরিকানদের প্রতিক্রিয়া কি এবিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এইচ টি ইমাম বলেনে, “এটাই হচ্ছে ওদের কাছে সবচেয়ে সন্তোষজনক। ওরা অত্যন্ত সন্তুষ্ঠ। এমন কোন দল নাই যারা অংশ গ্রহণ করছে না। ওরা তো বরঞ্চ খুব এতোগুল দল এরকমভাবে কিভাবে তোমরা এতো জোট ম্যানেজ করছো কিভাবে?এটা তো একটা অরানডাজড ব্যাপার। ওরা ভাবতেই পারে না, আমরা এগুলো করতে পারি।আমরা বলছি, এগুলো আমরা করছি। আমাদের সব ঠিকঠাক হয়ে গেছে।”
সৌজন্য বৈঠকে মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কাউন্সিলর বিল মোলার, যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা কাজী রুম্মন দস্তগীর উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে সৌজন্য সাক্ষাতে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য এইচ টি ইমাম, অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান,