তানোরে আশ্রায়ণ প্রকল্পের ঘরে ভুমিহীনের সুন্দর জীবনযাপন

আপডেট: February 19, 2023 |

আলিফ হোসেন,তানোর প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোরে বাঙালী জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীন-পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদান করা হয়।

উপজেলায় আশ্রায়ণ প্রকল্পে ১ম, ২য় এবং ৩য় পর্যায়ে মোট ৩২৩টি গৃহহীন পরিবারের মাঝে এসব ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৩২৩টি ঘরের জন্য প্রায় ২০ বিঘা সরকারি খাস জমি ব্যবহার করা হয়েছে, টাকার অংকে এসব জমির মুল্য প্রায় দুই কোটি টাকা।

এছাড়াও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য প্রায় ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬টি বীর নিবাস নির্মাণ করা হচ্ছে। অন্যদিকে চতুর্থ ধাপে আরো প্রায় ৩০০টি ঘরের নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে
জানা গেছে, বিগত ২০২১ সালের ২০ জুন রোববার  উপজেলা অডিটোরিয়ামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে ২য় পর্যায়ে আশ্রায়ণ প্রকল্পের একযোগে ১০৫টি ভুমিহীন পরিবারের মাঝে বিনামুল্যে জমির দলিল ও ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হয়।

এই সরকারের সময়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে উপজেলায় মোট ৩২৩টি গৃহহীন পরিবার তাদের ছেলে-মেয়ে ও পরিবার নিয়ে এসব দুর্যোগ সহনীয় সেমি পাকা ঘরে সুন্দর ভাবে জীবন যানপন শুরু করেছেন।

এছাড়াও চতুর্থধাপে আরো প্রায় ৩০০টি ঘরের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।

এদিকে এসব ঘরের পাশে বিশুদ্ধ খাবার পানি নিশ্চিত ও বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়েছে। জনস্বাস্থ্য ও প্রকৌশলী অধিদপ্তরের মাধ্যমে হাতের কাছে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা পেয়ে বেশ খুশি উপকারভোগীরা।

প্রধানমন্ত্রীর দেয়া এসব ঘরের পাশে সৌচাগার রাখা হলেও ছিলনা পানির ব্যবস্থা।এতে বিশুদ্ধ পানির অভাবে অনেক উপকারভোগী বিপাকে পড়ে।

এদিকে দুর্ভোগের বিষয়টি বিবেচনা করে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরের আওতায় তানোরে আশ্রায়ণ প্রকল্প-১ এর আওতায় ৫৭টি পরিবারের জন্য ১২টি সাবমার্সিবল পাম্পের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং ২য় পর্যায়ের বাঁকি ১০৫টি বাড়িতে সাবমার্শিবল পাম্প স্থাপন প্রক্রয়াধীন রয়েছে।

এদিকে প্রতিটি পাম্পের গোড়া পাকা এবং পানির ট্র্যাঙ্কি স্থাপন করা হয়েছে।  স্থানীয় সাংসদ ওমর ফারুক চৌধুরীর  নির্দেশ ও উপজেলা চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়নার সার্বিক সহযোগীতায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পর্যায়ক্রমে পৃথক পৃথক স্থানে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের  নির্বাহী প্রকৌশলী রোকনুজ্জামান, তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পঙ্কজ চন্দ্র দেবনাথ, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) প্রকৌশলী তারিকুল ইসলাম ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম ইতমধ্য  আশ্রায়ণ প্রকল্পে বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছেন।

জানা গেছে, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্রয়ণ-১  ২ ও ৩ প্রকল্পের আওতায় পাওয়া ঘরে এসব গৃহহীন পরিবারগুলো সুন্দর জীবন যাপন করছেন।

প্রতিটি ঘরে দুইটি কক্ষ, একটি টয়লেট, রান্নাঘর, কমনস্পেস, একটি বারান্দা এবং বিদ্যুৎ ও সুপেয় পানির সুব্যবস্থা করা হয়েছে। এসব গৃহ প্রত্যেক পরিবারের জন্য আলাদা করে নির্মাণ করা হয়েছে।

তবে নিচু জমি ভরাট করে নতুন মাটিতে ঘর নির্মাণ ও বর্ষার কারনে দুই একটি ঘরে সামান্য সমস্যা দেখা দিয়েছিল সেগুলোও মেরামত করা হয়েছে।

উপজেলার বাঁধাইড় ইউপির জুমারপাড়া ও পাঁচন্দর ইউপির তাতিহাটি নবনবী গ্রামের উপকারভোগীরা  জানান, তারা প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘরে উঠে সুন্দরভাবে জীবনযাপন করছেন।

এসব ঘর নির্মাণ নিয়ে তাদের কোনো অভিযোগ নাই, এসব উপকারভোগীরা বলেন, এক সময় তাদের কোন মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিল না, অন্যর জমিতে কুড়ে ঘর করে কোন রকম দিন যাপন করতেন।

কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তাদের এসব ঘর করে দেওযায় পর থেকে তাদের থাকার আর কোন অসুবিধা হয় না। তারা আরো বলেন, এসব ঘরে টয়লেট, বিদ্যুৎ ও সুপেয় পানি সুব্যবস্থা থাকায় তাদের কোন রকম ভোগান্তিতে পড়তে হয় না।

বিদ্যুৎতের আলোয় ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনাও করাতে পারেন। তাই তারা আমরা খুশি। তারা বলেন, আমরা দোয়া করি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেভাবে আমাদের মত অসহায় মানুষদের সহযোগিতা করেছেন আল্লাহ যেন এভাবেই তার উপকার করেন।

সংশ্লিস্ট সুত্র জানায়,বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী মুজিববর্ষ উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্রয়ণ-১, ২ ও ৩ ধাপে প্রকল্পের আওতায় উপজেলায় মোট ৩২৩টি পরিবারকে ২ শতাংশ খাস জমি বন্দোবস্ত পৃর্বক, কবুলিয়ত ও নামজারিসহ এসব ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে।

এসব ঘর নির্মানে প্রধানমন্ত্রীর নিদের্শে মাঠ পর্যায়ে সরকারের কর্মকর্তারা নিরলসভাবে কাজ করেছেন। বিশেষ করে ইউএনও পঙ্কজ চন্দ্র দেবনাথ পিআইও প্রকৌশলী তারিকুুুল ইসলামের ভুমিকা ছিল চোখে পড়ার মতো।

প্রধানমন্ত্রী যে লক্ষ নিয়ে এসব গৃহহীন ও ভুমিহীনদের ঘর হস্তান্তর করছেন সেই লক্ষ পূরনে সংশ্লিস্ট কর্মকর্তাগণ এখানো নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে।

এবিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না বলেন, এমপি মহোদয়ের দিকনির্দেশনায়  উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসন যৌথভাবে আশ্রায়ণ প্রকল্পের কাজ দেখভাল করছেন।

তিনি বলেন, কাজের মাণ খুবভাল হয়েছে, এনিয়ে কারো কোনো অভিযোগ নাই। এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পঙ্কজ চন্দ্র দেবনাথ জানান, ইতমধ্যে ১২টি সাবমারসিবল পাম্প স্থাপনে আশ্রায়ণ প্রকল্পের কমপক্ষে ৫৭টি পরিবারে সুপেয় পানির ব্যবস্থা হয়েছে, পর্যায়ক্রমে বাকিগুলোতেও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা হবে।

তিনি বলেন, পানির ব্যবস্থা হওয়ায় পরিবারগুলো সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। এবিষয়ে উপজেলা  প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও)  প্রকৌশলী তারিকুল ইসলাম বলেন, আশ্রায়ন প্রকল্পের ঘর নির্মাণে তানোর মডেল, এখানকার একটি ঘর নিয়েও কারো কোনো অভিযোগ নাই।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর